শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ডিবির পরিচয়ে ভয়ঙ্কর অপরাধ, গ্রেফতার ৫

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:০০ এএম

ডিবির পরিচয়ে অপহরণ, ডাকাতি ও খুনসহ ভয়ংকর অপরাধের সাথে জড়িত একটি চক্রের পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। ওই চক্রের সদস্যরা নিজেদের ডিবির সদস্য হিসেবে উপস্থাপন করতে ডিবির জ্যাকেটের মতো জ্যাকেট ব্যবহার, ওয়াকিটকি এবং অস্ত্রও বহন করত। এছাড়া নিজেদের ডিবি পুলিশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে ডিবির স্টিকার তৈরি করে তা মাইক্রোবাস বা বিভিন্ন গাড়িতে লাগিয়ে ব্যবহার করে আসছিলো। এমনকি অপহ্নত ব্যক্তিদের উপর্যুপরি মারধর ও বৈদ্যুতিক শক দেয়ার ভিডিও ধারণ করে পরিবারের কাছে পাঠিয়ে টাকা দাবি করা হতো। গ্রেফতারকৃতরা হলো-রিপন সরদার, আহমেদুল কবির খান কাজল, মোসলেম উদ্দিন বাপ্পি, মোহাম্মদ আসলাম ও রশিদ চাকলাদার। তাদের কাছ থেকে দুটি ডিবি জ্যাকেট, দুটি খেলনা পিস্তল, একটি হ্যান্ডকাফ, ১১টি মোবাইল ফোন, একটি প্রাইভেটকার ও নগদ ২৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।

র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক (সিও) লে. কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন বলেন, গত ২৫ নভেম্বর সন্ধ্যায় পিস্তলসহ লুৎফর রহমান নামে এক ব্যবসায়ীকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ছয়-সাতজন জোর করে মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। গাড়িতে ওঠানোর পর লুৎফর রহমানের চোখ-মুখ বেঁধে ফেলা হয়। এসময় তার কাছে থাকা মোবাইল ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়। পরে গাড়ির ভেতরে ওই ব্যবসায়ীকে উপর্যুপরি কিল-ঘুষি মারতে থাকে। অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে লুৎফরকে বলা হয়-তোকে মুন্সীগঞ্জ বিলে ফাঁকা জায়গায় নিয়ে এসেছি, আমাদেরকে ১০ লাখ টাকা না দিলে তোকে জানে মেরে ফেলব। ভুক্তভাগী তাদের কাছে প্রাণ ভিক্ষা চান। পরদিন রাতে অপহৃত ব্যবসায়ীকে একটি বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর ফোন করে তার ছেলেকে বলা হয়- তোমার বাবাকে আমরা অভিযোগের প্রেক্ষিতে আটক করেছি। বর্তমানে তোমার বাবা আমাদের ঢাকার মিন্টু রোডের ডিবি অফিসে আছে। আমাদেরকে টাকা দিলে আমরা তোমার বাবাকে ছেড়ে দেব।
তিনি আরো বলেন, জিম্মি ব্যবসায়ী লুৎফরকে গ্রেপ্তার মোসলেম উদ্দিন বাপ্পির বাসায় নিয়ে উপুর্যপুরি মারধরসহ বৈদ্যুতিক শক দেয়া হয়। এসময় পরিবারের পক্ষ থেকে পাঁচ লাখ টাকা দিতে রাজি হয়। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ভূক্তভোগীর ছেলে বিকাশ ও নগদের মোবাইল ব্যাংকিং ব্যবহার করে এক লাখ টাকা পাঠান। পরে আরও টাকার জন্য পুনরায় চোখ-মুখ বেঁধে নির্যাতন করে সেই ভিডিও পরিবারকে পাঠানো হয়। মুক্তিপণ দেয়া না হলে তাকে (লুৎফর) মেরে ফেলা হবে বলে হুমকি দেয়া হয়। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবারটি নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করে। পাশাপাশি র‌্যাব-১-কে বিষয়টি জানায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে অপহরণকারী চক্রের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হয়।
র‌্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, তারা একটি অপহরণকারী চক্রের সক্রিয় সদস্য। পরস্পর যোগসাজশে ডিবি পরিচয়ে দীর্ঘদিন নারায়ণগঞ্জ ও আশপাশের এলাকায় সাধারণ মানুষকে হয়রানি করতেন। বিশেষ করে সাধারণ মানুষকে টার্গেট করে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে প্রাণনাশের হুমকি, শারীরিক নির্যাতন ও মুক্তিপণ আদায় করে আসছিলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে র‌্যাব-১ এর অধিনায়ক বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পোশাক বিক্রির ক্ষেত্রে বেশ কিছু নিয়ম আছে। এগুলো বাইরের সাধারণ কারও কাছে বিক্রি করা নিষেধ। এসব নিয়ে যারা কাজ করেন তাদের সঙ্গে আমরা অবশ্যই যোগাযোগ করব, যাতে এগুলো বিক্রি বন্ধ হয়। আশা করছি, এগুলো বন্ধের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট যেসব কর্তৃপক্ষ আছে তারা সিদ্ধান্ত নেবেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন