রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

কে হচ্ছেন সাধারণ সম্পাদক

আ’লীগের কাউন্সিলে জল্পনা-কল্পনা

প্রকাশের সময় : ২৩ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : দেশের প্রাচীন দল আওয়ামী লীগের দুই দিনব্যাপী ২০তম জাতীয় কাউন্সিল গতকাল শনিবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে। দলটির আগামীর নেতৃত্বে কারা আসছেন তা নিয়ে সর্বত্রই বইছে আলোচনার ঝড়। নেতৃত্বে চমকের অপেক্ষায় দলের নেতাকর্মীরা।
সভাপতি পদে বর্তমান সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা থাকছেনÑ এটা প্রায় শতভাগই নিশ্চিত। তবে দলের সাধারণ সম্পাদক পদে কে আসছেন, তা নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই চুলচেরা বিশ্লেষণ হচ্ছে দলের ভেতরে-বাইরে। দলের দ্বিতীয় সাংগঠনিক পদ সাধারণ সম্পাদকের পদ প্রথম থেকেই বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলামই থাকছেন বলে দলীয় সূত্রে আভাস পাওয়া যাচ্ছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই এতে সভাপতিম-লীর সদস্য ওবায়দুল কাদেরের নাম যুক্ত হওয়ায় পদটি নিয়ে শুরু হয় ব্যাপক গুঞ্জন।
গতকাল শনিবার সম্মেলনের প্রথম দিন আগামী কমিটি নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা না থাকলেও আগত কাউন্সিলর ও নেতাকর্মীদের মধ্যে জল্পনা-কল্পনা সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে চলতে থাকে। সবার মধ্যেই এ নিয়ে কিছুটা উৎকণ্ঠাও দেখা যায়।
কাউন্সিলরদের মতামতের ভিত্তিতে কমিটি গঠনের কথা দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা বললেও দলের নেতারা এজন্য তাকিয়ে আছেন দলীয় সভাপতির দিকেই। এর মধ্যেই বর্তমান কমিটির সভাপতিম-লীর সদস্য ও সড়কমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কয়েকজন সমর্থক ফেসবুকে তাকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আগাম অভিনন্দন জানিয়েছেন।
ওবায়দুল কাদেরের ঘনিষ্ঠ মহল থেকে দলের পরবর্তী সাধারণ সম্পাদক হিসেবে তার নাম প্রচার করা হলেও তিনি (কাদের) বিষয়টি নিয়ে বিব্রত বোধ করছেন বলে জানিয়েছেন। তিনি সাধারণ সম্পাদক পদে নিজের প্রার্থিতা অস্বীকার করে এ ব্যাপারে বলেন, আকাশে চাঁদ উঠলে সবাই দেখতে পাবেন। ছাত্রলীগের সাবেক এই সভাপতি আরো বলেন, নেত্রীর ওপর আস্থা রয়েছে শতভাগ। আমরা সবাই তার নেতৃত্বের প্রতি আস্থাশীল। তিনি যে দায়িত্ব দেবেন তাই সবাই মেনে নেবেন।
এদিকে, গত শুক্রবার রাতে রাজধানীর একটি অভিজাত হোটেলে দলের সম্মেলন উপলক্ষে আগত বিদেশী অতিথিদের সম্মানে দেয়া ভোজ শেষে সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, দলের জাতীয় কাউন্সিলে নেতৃত্বে কোনো পরিবর্তন আসবে কি না সে বিষয়ে শুধু দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা ও তিনি জানেন।
আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য ওবায়দুল কাদের নতুন সাধারণ সম্পাদক ‘হচ্ছেন বলে’ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যামে তার অনুসারীদের অভিনন্দন এবং ওই পদে সংবাদমাধ্যমে ‘চমক’ ও ‘চাউর’ হওয়ার পর সৈয়দ আশরাফ এ বক্তব্য দেন।
দলের সাধারণ সম্পাদক পদে পরিবর্তনের সম্ভাবনা নিয়ে তার কাছে জানতে চান সাংবাদিকরা। জবাবে আশরাফ বলেন, আসতেও পারে, কাউন্সিল ক্যান মেক অ্যানি ডিসিশন। তবে এটা আলোচনা, কানাঘুষাÑ এটাই বলতে পারবেন, এর থেকে আর বেশি কিছু না। আমি জানি কী হবে, আমি আর সভানেত্রী ছাড়া কেউ জানে না হোয়াট উইল গোয়িং টু হ্যাপেন। আফটার দ্য থ্রিল, আপনারা জানবেন হোয়াট হ্যাপেন্ড।
কাউন্সিলে নেতৃত্বে খুব একটা পরিবর্তন আসছে না বলে সম্মেলনের আগের রাতে ইঙ্গিত দেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় কাউন্সিলে খুব বেশি পরিবর্তন হয় না। এটা ইনক্রিমেন্টাল হয়। যারা বৃদ্ধ হয়ে গেছেন বা অসুস্থ আছেন তাদের বাদ দিয়ে নতুন ইনডাক্ট করা হয়। প্রবীণ-নবীনের সমন্বয়েই এই নতুন কমিটিটা করা হবে।
এদিকে, গতকাল শনিবার সম্মেলনের শুরুর দিন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম সাধারণ সম্পাদকের রিপোর্ট কাউন্সিলরদের সামনে তুলে ধরেন। তিনি এ সময় নিজেকে ‘আওয়ামী লীগের সন্তান’ হিসেবে নিজেকে নেতাকর্মীদের সামনে উপস্থাপন করেন। তার এ বক্তব্যের সময় পুরো সম্মেলনস্থলে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। একই সঙ্গে নেতাকর্মীরা জল্পনা-কল্পনা করতে থাকেন দলের এ বিশ্বস্ত নেতাকে কোনোভাবেই সভানেত্রী তার রানিং মেট হিসেবে ছেড়ে যেতে দেবেন না। একই সঙ্গে নেতাকর্মীরা আলোচনা করতে থাকেন, কোন নেতা সাধারণ সম্পাদক হবেন, তা একান্তই নির্ভর করছে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার একান্ত ইচ্ছার ওপর।
ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় সম্মেলনকে ঘিরে প্রায় মাসব্যাপী হাতে নেয়া হয় ব্যাপক কর্মযজ্ঞ। নেতাকর্মীদের নিরলস শ্রমে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্মেলন ভেন্যু নজরকাড়া ও দৃষ্টিনন্দন সাজে সাজানো হয়। সফল প্রস্তুতির পর গতকাল শনিবার সকালে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা শান্তির সাদা পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে দু’দিনব্যাপী এ সম্মেলন উদ্বোধন করেন। সম্মেলনে ৬ হাজার ৭শ’রও বেশি কাউন্সিলর অংশ নেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন