ইনকিলাব ডেস্ক
গান্ধী পরিবারের ছেলে ও বিজেপি নেতা বরুণ গান্ধীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তিনি বিদেশি যৌনকর্মীর ফাঁদে পড়ে দেশের নিরাপত্তা সংক্রান্ত গোপন তথ্য ফাঁস করে দিয়েছেন অস্ত্র কেনাবেচার মধ্যস্থতাকারী অভিষেক বর্মার কাছে। শুক্রবার দিল্লিতে রীতিমতো সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ এনেছেন ভারতের স্বরাজ অভিযান নামের একটি তুলনামূলক কম পরিচিত দলের দুই নেতা। তারা অভিযোগ করেছেন, এর আগের ইউপিএ সরকারের সময় প্রতিরক্ষা ক্রয় সংক্রান্ত কমিটিতে থাকা বিজেপি নেতা বরুণ গান্ধী গোপন অনেক তথ্য অস্ত্র ব্যবসার দালালদের কাছে পাচার করেছেন। আর এর জন্য দালালরা ব্যবহার করেছে সুন্দরী বিদেশি যৌনকর্মীদের। উত্তরপ্রদেশের নির্বাচনকে সামনে রেখে এই অভিযোগে বেশ অস্বস্তিতে পড়েছেন বরুণ গান্ধী।
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে সংবাদ সম্মেলন করে স্বরাজ অভিযান দলের প্রতিষ্ঠাতা প্রশান্ত ভূষণ এবং যোগেন্দ্র যাদব সরাসরি বরুণের নাম না করে রাষ্ট্রীয় গোপন তথ্য ফাঁসের অভিযোগ আনেন একজন বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে। তারা শুধু জানান, ইউপিএ আমলে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত সংসদীয় পরামর্শদাতা কমিটির সদস্য ছিলেন একজন বিজেপি এমপি। তিনিই বিদেশি যৌনকর্মীদের ফাঁদে পড়ে তথ্য ফাঁস করেছিলেন।
তবে ভূষণ ও যোগেন্দ্র যে নথিপত্র সাংবাদিকদের হাতে তুলে দেন, তাতে একাধিকবার বরুণ গান্ধীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এই দুই নেতা অভিযোগ করেন, অস্ত্রের দালালরা এখনো সক্রিয় রয়েছে। তারা শুধু বরুণই নয়, বরং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের মূলত বিদেশি যৌনকর্মীদের মাধ্যমে হাত করে গোপন তথ্য সংগ্রহ করছে।
ভূষণ ও যোগেন্দ্র জানান, আইনজীবী এডমন্ড অ্যালেন প্রথমে অভিষেক বর্মার সঙ্গে কাজ করছিলেন। কিন্তু পরে তথ্য ফাঁস নিয়ে সরব হন তিনি। গত ১৬ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীকে লেখা এক চিঠিতে এডমন্ড জানান, ‘অভিষেক ২০০০ সাল থেকে বরুণ গান্ধীকে চেনেন। বিভিন্ন সময়ে তিনি বরুণের সঙ্গে বিদেশি যৌনকর্মীদের আলাপ করিয়ে দিয়েছেন’।
ভূষণদের দাবি, খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ কেন্দ্রীয় সরকারের শীর্ষ নেতাদের কাছে এ সংক্রান্ত প্রমাণ পাঠানো হলেও কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। বরং অভিষেক বর্মা যে সংস্থার হয়ে কাজ করেন, তাদের কাছ থেকেই স্করপিয়ন ডুবোজাহাজ কেনা হয়েছিল, যে স্করপিয়নের তথ্য ফাঁস হওয়ায় অনেক ভুগতে হয়েছে ভারতকে। আবার রাফায়েল যুদ্ধবিমান চুক্তিতেও ওই সংস্থা জড়িত। রাফায়েল চুক্তির দুর্নীতির ব্যাপারে তদন্তের দাবি তোলেন এই দুই নেতা।
তবে উত্তরপ্রদেশে আগামী বছরের বিধানসভা ভোটের মুখে নিজের কেন্দ্র সুলতানপুরে ব্যস্ত রয়েছেন বরুণ গান্ধী। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটি অবাস্তব অভিযোগ। সংবাদ সম্মেলনে কোনো প্রমাণ পেশ করা হয়নি’। অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে তিনি বলেন, ‘সবাই জানে, প্রতিরক্ষা কমিটিতে গোপন তথ্য নিয়ে আলোচনা হয় না’।
এছাড়া অভিষেক বর্মার সঙ্গে পরিচয়ের বিষয়টি সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘২০০২ সালে লন্ডনে পড়ার সময় শেষ বার অভিষেক বর্মার সঙ্গে আমার দেখা হয়েছিল। দুই পরিবারের মধ্যে রাজনৈতিক সূত্রেও পরিচয় রয়েছে’। সূত্র : টাইমস অব ইনডিয়া, জি-নিউজ, ইনডিয়া টাইমস।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন