নগরীর ষোলশহরে চশমা খালে তলিয়ে যাওয়া শিশু কামাল উদ্দিনের খোঁজ মেলেনি। গতকাল বুধবার রাত পর্যন্ত দ্বিতীয় দিনের মত তল্লাশি অভিযান অব্যাহত রাখে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলসহ উদ্ধার কর্মীরা। খালের আবর্জনা সরিয়ে খোঁজ হয় শিশুটির লাশ। তিন দিনেও সন্তানের কোন হদিস না পাওয়ায় ভেঙে পড়েছেন পিতা আলী কায়সারসহ পরিবারের সদস্যরা। গতকালও ছেলের ছবি হাতে খালের পাড়ে আলী কায়সারকে আহাজারি করতে দেখা যায়। পাসপোর্ট সাইজের একটি ছবি নিয়ে যাকে পাচ্ছেন, তাকে বলছেন ছেলেকে খুঁজে এনে দিতে।
ষোলশহর রেল স্টেশন এলাকার ছিন্নমূল আলী কায়সারের দুই ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে কামাল সবার ছোট। কামালের বাবা বলেন, আমি গরীব মানুষ। আমি এত কিছু বুঝি না। আমার ছেলের সন্ধান চাই। সিটি কর্পোরেশন যদি ময়লা পরিষ্কার করতো তাহলে ছেলেকে তো খুঁজে পেতাম। আমার বাবাটারে তিন দিন দেখিনি। বেঁচে আছে কী না জানি না, বাবাটা ডুবে গেছে। কোথাও পাচ্ছি না। এ সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
এদিকে গতকাল সকালে দ্বিতীয় দিনের মতো তল্লাশি শুরু করে ফায়ার সার্ভিস। ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক নিউটন দাশ বলেন, ফায়ার সার্ভিসের তিনটি দল শিশু কামালের খোঁজে কাজ করছে। এর মধ্যে একটি ডুবুরি দল, অন্য দুটি উদ্ধারকারী দল। খালের সম্ভাব্য সব জায়গায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে। লাশ উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত থাকবে।
গত সোমবার বিকেলে নগরের ষোলশহর শপিং কমপ্লেক্সের বিপরীতে চশমা খালে খেলনা কুড়াতে নেমে কামাল ও তার বন্ধু রাকিব উদ্দিন তলিয়ে যায়। রাকিব স্রোতের তোড়ে কতদূর ভেসে গেলেও দেয়াল ধরে উঠে আসতে সক্ষম হয়। কিন্তু কামাল আবর্জনার ভেতর তলিয়ে যায়। খবর পেয়ে ওইদিন সন্ধ্যার পর ছেলে কামালের খোঁজ শুরু করে বাবা আলী কায়সার। খালে নেমে রাতভর খোঁজ করে ব্যর্থ হন তিনি। শিশু তলিয়ে যাওয়ার বিষয়টি ফায়ার সার্ভিস জানতে পারে মঙ্গলবার বিকেলে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করে। এর আগে গত ২৫ আগস্ট ভারী বর্ষণের সময় চশমা খালের মুরাদপুর এলাকায় তলিয়ে গিয়েছিলেন সবজি বিক্রেতা ছালেহ আহমেদ (৫০)। এখনো পর্যন্ত তার কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন