শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

মিথ্যা তথ্যে ৩ বছরের জেল

ব্যাংক লেনদেন প্রেসিডেন্টের ভাষণের খসড়া মন্ত্রিসভায় অনুমোদন ডি-৮ দেশগুলোর মধ্যে আমদানি-রফতানি শুল্ক কমে ১০ শতাংশ হচ্ছে

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:০১ এএম

ব্যাংক লেনদেনের ক্ষেত্রে মিথ্যা তথ্য দিলে সর্বোচ্চ ৩ বছরের কারাদ- ও ৫০ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দ-ের বিধান রেখে পেমেন্ট অ্যান্ড সেটেলমেন্ট সিস্টেমস আইন ২০২১-এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। একাদশ জাতীয় সংসদের ২০২২ সালের প্রথম অধিবেশনে প্রেসিডেন্টের ভাষণের খসড়া অনুমোদন এবং ডি-৮ প্রিফারেন্সিয়াল ট্রেড এগ্রিমেন্টের (পিটিএ) আওতায় অন্য সদস্য দেশগুলোর শুল্ক ছাড় দেওয়া পণ্য তালিকা ও সার্টিফিকেট অব অরিজিন অনুমোদন দিয়েছে।
গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী ও সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে মন্ত্রী এবং প্রতিমন্ত্রীরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, যেসব পেমেন্ট ও সেটেলমেন্ট হচ্ছে ব্যাংকে, সেখানে কোনো আইন ছিল না। কিছু রেগুলেশন দিয়ে পরিচালিত হতো। বর্তমান অবস্থায় ডিজিটাল লেনদেন হওয়ার কারণে এ আইন নিয়ে আসা হয়েছে। খসড়া আইনে ৪৭টি ধারা রয়েছে। তবে ক্রিপ্টো-কারেন্সি বা ভার্চুয়াল মুদ্রা এ খসড়া আইনে যুক্ত করা হয়নি। ক্রিপ্টো-কারেন্সি এটার মধ্যে জড়িত না। ক্রিপ্টো-কারেন্সি ইস নট এ কারেন্সি। ওটা কিন্তু কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে অনুমোদিত কোনো ট্রানজেকশন না। ডিজিটাল ব্যাংকিং ডাজ নট মিন ক্রিপ্টো-কারেন্সি, এটা খেয়াল রাখতে হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, খসড়া আইনের অধীনে বিভিন্ন রকমের অপরাধের জন্য শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে। ব্যাংক, কোম্পানির মাধ্যমে গৃহীত বা সংগঠিত অপরাধের ক্ষেত্রে এ কোম্পানির মালিক, পরিচালক, কোম্পানির প্রধান নির্বাহী, ব্যবস্থাপক, সচিব বা অন্য কোনো কর্মকর্তার সংশ্লিষ্টতা থাকলে তাদের পদ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক অপসারণের বিধান রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, খসড়া আইনে কিছু বিশেষ বিধান রাখা হয়েছে। কীভাবে লেনদেন হবে, পরিশোধ হবে, পরিচালনা হবে এবং সেবা কীভাবে দেয়া হবে, সেগুলো উল্লেখ করা হয়েছে। কাউকে কোনো কারণে সাসপেন্ড করা হলে তিনি লেনদেন করতে পারবেন না। কিন্তু সে যদি আদেশ ভঙ্গ করে লেনদেন করে তাহলে তাকে এ শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। মিথ্যা তথ্য বা দলিল বা বিবৃতি দিলে অনধিক ৩ বছরের কারাদ-, অনধিক ৫০ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দ- হতে পারে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, গ্রাহকের স্বার্থ সংরক্ষণে ফি আরোপ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকে ক্ষমতা ও দায়িত্ব প্রিসাইজ করে দেয়া হয়েছে। খসড়া আইনটি নগদ, বিকাশসহ মোবাইল ব্যাংকিংয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়। আইন করার কারণ নিয়ে তিনি বলেন, পেমেন্টের যে ব্যবস্থাপনার বিষয়ে কোনো আইন ছিল না। কিছু রেগুলেশনের আন্ডারে করা হতো। এখান দেখা যাচ্ছে যে, এটা ডিজিটাল হয়ে যাচ্ছে। এগুলো বিধিবিধানগুলোর মধ্যে ছিল না। সেজন্য পুরো পদ্ধতিগুলোকে আলাদা করে আইনে আনা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ডি-৮ অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তির (পিটিএ) আওতায় আট দেশের মধ্যে আমদানি-রফতানি শুল্ক ১৫ শতাংশ থেকে কমে ১০ শতাংশ হচ্ছে। এজন্য ডি-৮ প্রিফারেন্সিয়াল ট্রেড এগ্রিমেন্টের (পিটিএ) আওতায় অন্য সদস্য দেশগুলোর শুল্ক ছাড় দেওয়া পণ্য তালিকা ও সার্টিফিকেট অব অরিজিন অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এখানে ওআইসির (ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা) আটটি মুসলিম দেশ বাংলাদেশ, মিশর, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া, পাকিস্তান ও তুরস্ক রয়েছে। এ দেশগুলোর সমন্বয়ে ১৯৯৭ সালের ১৫ জুন ইস্তাম্বুল ঘোষণার মধ্য দিয়ে ডি-৮ (উন্নয়নশীল আটটি দেশ নিয়ে গঠিত আন্তর্জাতিক সংস্থা) গঠন করা হয়েছিল। এখন ডি-৮-এর মধ্যে যতগুলো পণ্য আছে সেগুলোর শুল্ক ১৫ শতাংশ থেকে ১০ শতাংশে নিয়ে আসা হবে। তাহলে আমদানি-রফতানি আরও বাড়বে। ভবিষ্যতে এটি ওআইসির ৪১টি দেশের মধ্যে করা যায় কি-না, সেটা চিন্তা-ভাবনা আছে। এছাড়া বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের দ্বৈত করারোপণ পরিহার ও রাজস্ব ফাঁকি রোধ সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরের লক্ষ্যে অনুস্বাক্ষরিত চুক্তির সংশোধিত খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী আগামী ২২/২৩ ডিসেম্বর মালদ্বীপ যাচ্ছেন। সেখানে একটা ট্রেড এপ্রিমেন্ট সই হবে। ওটা আগেই অনুমোদন করা ছিল। ওটার ২৮ ধারাতে কতগুলো করারোপের বিধিবিধান ছিল। সেগুলোকে দু’দেশ আলাপ-আলোচনা করে বাতিল করে দিয়েছে যে ওগুলো আর দরকার নেই।
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, একাদশ জাতীয় সংসদের ২০২২ সালের প্রথম অধিবেশনে প্রেসিডেন্টের ভাষণের খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। তিনি বলেন, সংবিধান অনুযায়ী মহামান্য প্রেসিডেন্ট বছরের প্রথম অধিবেশনে ভাষণ দেন। সেই ভাষণটা উপস্থাপন করা হয়েছে, মন্ত্রিসভা সেটা অনুমোদন দিয়েছে। এছাড়া ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত একটা সময় দেওয়া হয়েছে। ১৫ জানুয়ারির পর যদি সংসদ বসে তবে আমরা ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্ত আপডেট করে দওয়া হবে। আর যদি জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে বসে তবে ডিসেম্বরের ২০ তারিখ পর্যন্ত যেসব তথ্য আসবে সেটার ভিত্তিতেই আমরা ভাষণটা রেডি করব।
তিনি বলেন, ‘বাণিজ্য সংগঠন আইন’ ২০২১ এর খসড়া অনুমোদন দিয়েছে। আইনের কোনো বিধান বা আদেশ বলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা বা ব্যক্তির দায়িত্ব পালনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করলে সংশ্লিষ্ট বাণিজ্য সংগঠনকে সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা সর্বনিম্ন ১০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রেখে ‘বাণিজ্য সংগঠন আইন’ ২০২১ অনুমোদন দেয়া হয়েছে। অংশীজনদের মতামতসহ আইন মন্ত্রণালয়ের ভেটিং সাপেক্ষে আইনটি দেওয়া হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন