শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

গুলিস্তানে হকার উচ্ছেদ অভিযান : দিনভর সংঘর্ষ আহত ৫ জন

প্রকাশের সময় : ২৮ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর গুলিস্তানে হকার উচ্ছেদ অভিযানের সময় ব্যাক ধরপাকড় ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। উচ্ছেদ অভিযানকে কেন্দ্র করে দিনভর দফায় দফায়  উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। সংঘর্ষে কমপক্ষে ৭ জন আহত হয়েছেন। দুই জনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। আহত অন্যদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। গতকাল গুলিস্তানে দুই দফায় এ সংঘর্ষ ও উচ্ছেদ অভিযান হয়। গুলিস্তানে সুন্দরবন মার্কেটের আন্ডারগ্রাউন্ডে উচ্ছেদ অভিযানের সময় এ সংঘর্ষ ব্যাপক আকার ধারণ করে। আহতরা হলেন- মো. সোহাগ (৩৮) ও মো. মুরাদ (৩৪)। এদের মধ্যে মো. সোহাগ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মী এবং মুরাদ হকার। অন্যদের নাম পরিচায় জানা যায়নি।  উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনাকারী কর্মীদের হকার ব্যাপক মারধর করেছে। এক পর্যায় হকাররা ম্যাজিস্ট্রেটের ওপর চড়াও হয়। এক পর্যায় উচ্ছেদকারীরা পিছু হঠতে বাধ্য হয়। পরে অতিরিক্তি পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। বিকালে পুনরায় দ্বিতীয় দফা উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানিয়েছেন, বিকেল ৩টার দিকে গুরুতর আহত সোহাগকে এবং সাড়ে ৪টার দিকে মুরাদকে ঢামেক হাসপাতালে আনা হয়। তাদেরকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
 জানা গেছে, গুলিস্তানে দুপুর ২টার পর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা মার্কেটের আন্ডারগ্রাউন্ডে উচ্ছেদ অভিযান চালাতে যায়। এ সময় হকাররা সংগঠিত হয়ে লাঠি নিয়ে করপোরেশনের লোকজনের ওপর হামলা করে। শুরু হয় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া। হকারদের বাধার মুখে ডিসিসির উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ হয়ে যায়। পরবর্তীতে  বেলা পৌনে তিনটার দিকে দ্বিতীয় দফায় এ উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্ব দেন ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. খালিদ হোসেন। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে এ উচ্ছেদ অভিযান শেষ হয়।
পল্টন থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, গুলিস্তানে উচ্ছেদ অভিযান চালাতে গেলে পুলিশ ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর হামলা চালায় হকাররা। এ সময় দুইজন আহত হয়। তবে বিকালে পরিস্থিতি  নিয়ন্ত্রণে আসে।
গুলিস্তান এলাকার হকার জাহঙ্গীর বলেন, ‘অভিযানের আগে আমাদের কিছুই জানানো হয়নি, এমনকি কোনও নোটিশ দেওয়া হয়নি। হঠাৎ করে বুলডোজার এসে আমাদের মালামাল দুমড়ে-মুচড়ে দিয়ে গেছে। ফলে আমাদের অনেক টাকার ক্ষতি হলো।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল সকাল ১১টার দিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশীদের নেতৃত্বে প্রথম দফায় গুলিস্থানে হকার উচ্ছেদ অভিযান পরিচালিত হয়। ওই সময় কয়েকজন হকার নেতা অভিযানে বাধা দিলে ব্যাপক ধরপাকড় হয়।  এসময় এক হকার নেতাকে আটক করে নগর ভবনে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে তার নাম জানা যায়নি। পরে বেলা দু’টার পর হকাররা সংঘবদ্ধ হয়ে নগর ভবনের সামনে যান এবং বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। এ সময় তারা কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটান। পরে বেলা পৌনে তিনটার দিকে মেয়রের নির্দেশে ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. খালিদ হোসেনের নেতৃত্বে দ্বিতীয় দফায় হকার উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়। এ সময় বুলডোজার দিয়ে হকারদের অস্থায়ী দোকান ও মালামাল গুঁড়িয়ে দেয়া হয়।
উচ্ছেদ অভিযান শেষে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন সাংবাদিকদের বলেন, ‘নিয়মিত উচ্ছেদ অভিযানের অংশ হিসেবে দুই দফায় অভিযান চালানো হয়েছে। প্রথম দফায় হকাররা ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করলে দ্বিতীয় দফায় ব্যাপকভাবে অভিযান চালানো হয়।’
উচ্ছেদ অভিযান শেষে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে মেয়রের নেতৃত্বে একটি মিছিল গুলিস্তান এলাকা প্রদক্ষিণ করে। মিছিলে অংশ নেন মেয়রের অনুসারী আওয়ামী লীগের নেতারা। হকার উচ্ছেদ কার্যক্রমে সহায়তা করেন পুলিশ ও ডিএসসিসির কর্মকর্তারা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন