দিনাজপুর অফিস ও পার্বতীপুর উপজেলা সংবাদদাতা জানান, পার্বতীপুর উপজেলার রামপুর ইউনিয়নের জমিরহাট তকেয়াপাড়া গ্রামের নির্যাতিত শিশুকন্যার (৫) চিকিৎসা বাবদ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান এমপির ব্যক্তিগত তহবিল থেকে আর্থিক সহযোগিতা করেন। গতকাল দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশুকন্যার পরিবারকে মন্ত্রীর নির্দেশে মন্ত্রীর পিএস শেখ আতাহার হোসেন ও এপিএস মীর্জা আশফ্ফাক হোসেন মন্ত্রীর ব্যক্তিগত তহবিল থেকে চিকিৎসা বাবদ আর্থিক সহযোগিতা করেন। তার উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন হলে তাকে দেশের বাইরে পাঠানো হবে। উল্লেখ্য, গত ১৮ অক্টোবর দুপুরে শিশুটি খেলতে গেলে বাড়িতে ফিরে না আসলে স্বজনরা বিভিন্ন স্থানে খুঁজাখুঁজি করে পাওয়া যায়নি। পরের দিন ভোরে ধর্ষণকারী সাইফুল ইসলাম শিশুটির শরীরের বিভিন্ন স্থানে সিগারেটের আগুন দিয়ে পোড়া ও রক্তাক্ত অবস্থায় হলুদ ক্ষেতে ফেলে যায়। এলাকাবাসী শিশুটিকে উদ্ধার করে স্থানীয় ল্যাম্ব হাসপাতালে নিয়ে গেলে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল হাসপাতালে নেয়া হয়। তিনদিন পরে শিশুটির জ্ঞান ফিরলে ধর্ষণকারীর নাম স্বজনরা জনতে পায়। গত ২০ অক্টোবর রাতে পার্বতীপুর মডেল থানায় শিশুটির পিতা সুবল চন্দ্র দাস বাদী হয়ে ঐ গ্রামের মৃত জহির উদ্দিনের পুত্র সাইফুল ইসলাম (৫৫) ও আফজাল হোসেন কবিরাজ (৪৭)-কে আসামি করে একটি শিশু ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। এদিকে গত ২৫ অক্টোবর পার্বতীপুর মডেল থানার ইনচার্জ মাহমুদুল আলমের নেতত্বে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই স্বপন ফোর্স নিয়ে সোমবার রাতে দিনাজপুর জেলা পুলিশের সহযোগিতায় মূল হোতা ধর্ষণকারী সাইফুল ইসলামকে গ্রেফতার করে। ধর্ষণকারী সাইফুল ইসলামকে জেলা পুলিশ জেলহাজতে প্রেরণ করে। পরে পার্বতীপুর মডেল থানার পুলিশ ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে।
গতকাল (বৃহস্পতিবার) মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা স্বপন কুমার চৌধুরী আসামী সাইফুল ইসলামকে আমলী আদালত ৫-এর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কৃষ্ণ কমল রায়ের আদালতে হাজির করে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে বিচারক শুনানি অন্তে ৭ দিনেরই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এসআই স্বপন কুমার চৌধুরী জানান, আসামী সাইফুল প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধর্ষণের চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে। আরো তথ্য উদ্ঘাটনের জন্য তাকে ৭ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়েছে। মামলার অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান চালানো হচ্ছে।
পাশবিক ধর্ষণের শিকার শিশুটির চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কর্তৃপক্ষ ৯ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করেছে। প্রধানমন্ত্রী শিশুটির চিকিৎসা ব্যয়ভার গ্রহণ করেছেন। এছাড়াও ধর্ষণ মামলাটি দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে নেয়া হবে বলে জানা গেছে।
এদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিশুটির সুষ্ঠু চিকিৎসার জন্য বুধবার দিনাজপুর জেলা প্রশাসক মীর খায়রুল আলম শিশুর দাদুর হাতে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন