শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

বান্ধবীর পাতানো ফাঁদে ধর্ষণের মুখে শিক্ষার্থী

সিলেট ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ৬ জানুয়ারি, ২০২২, ১১:৫৬ পিএম

সিলেটে ধর্ষণের শিকার হতে যাচ্ছিল একটি বেসরকারী বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। বান্ধবী নেশাজাতীয় দ্রব্য পান করিয়ে অচেতন অবস্থায় ওই শিক্ষার্থীকে তুলে দিয়েছিল আমেরিকা প্রবাসী কথিত চাচাতো ভাইয়ের হাতে। কিন্তু কপাল ভালো, বুদ্ধিমত্তার জোরে, পুলিশের সহযোগীতা নিয়ে সর্বনাশের কবল থেকে রক্ষা পেয়ে যান ওই তরুণী শিক্ষার্থী। গত বুধবার রাতে সিলেট নগরীর রায়নগর দর্জিবন্দ এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ এসে তরুণীকে উদ্ধার এবং দু’জনকে আটক করে। ওই তরুণী শিক্ষার্থীকে ওসমানী হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) পাঠানো হয়েছে। ফাঁদে পড়া তরুনী স্থানীয় লিডিং ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগের ছাত্রী।

সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রের জানা য়ায়, বান্ধবী সোনিয়ার সাথে নগরীর রায়নগর দর্জিবন্দ এলাকার এজি টাওয়ারের ৫ম তলার সি ইউনিটের বাসায় আসেন, লিডিং ইউনিভার্সিটির ইংরেজী বিভাগের ওই শিক্ষার্থী। সোনিয়া সাথে আগে একই মেসে থাকতেন ওই শিক্ষার্থী। গত বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টায় সোনিয়া ওই তরুণীকে জানান, আমার চাচা-চাচী আমেরিকা থেকে এসেছেন। আমি রাতে চাচার বাসায় থাকব। তুইও চলে আয়। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে সোনিয়ার বাসায় আসেন শিক্ষার্থী।
ফ্ল্যাটে তখন সোনিয়ার আমেরিকা ফেরত চাচাতো ভাই আব্দুল হাই ছাড়া কেউ ছিলেন না। আব্দুল হাই বাসায় ডেকে আনেন আবু আহমদ নামে আরেক যুবককে। আবু আহমদের বাড়ি গোলাপগঞ্জ উপজেলার ভাদেশ্বরে। তিনি সম্পর্কে আব্দুল হাইয়ের খালাতো ভাই।
পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী, সোনিয়া এবং আবদুল হাই কৌশলে ওই তরুণীকে নেশাজাতীয় দ্রব্য খাওয়ান। একপর্যায়ে তরুণীটি তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়েন। এই সুযোগে ধর্ষণের চেষ্টায় মেতে উঠেন আব্দুল হাই ও আবু আহমদ। কিন্তু তরুনীর কপাল ভালো, মুর্হুতেই চেতনা ফিরে আসে তার। এই অবস্থায় ফ্ল্যাটের অন্য একটি রুমে যেয়ে দরজা বন্ধ করে দেন ওই শিক্ষার্থী।
ফোন করেন আদনান নামের এক সহপাঠীকে। নিজের অবস্থার কথা জানিয়ে সহযোগীতার আহবান করেন তিনি। হোয়াটসঅ্যাপে নিজের অবস্থান আদনানকে দেওয়ার পরপরই জ্ঞান হারান তিনি। অবস্থা বেগতিক দেখে সোনিয়া ও আবু আহমদকে বাসায় রেখেই পালিয়ে যান প্রবাসী আব্দুল হাই। এদিকে, লিডিং ইউনিভার্সিটির প্রক্টর মো. রাশেদুল ইসলাম ও ইংরেজি বিভাগের প্রধান ড. মো. রেজাউল করিমসহ অন্যান্য সহপাঠিদের বিষয়টি জানায় আদনান।
একপর্যায়ে সহপাঠীগণ ও পুলিশও ঘটনাস্থলে পৌঁছান। ফ্ল্যাটের দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করেন তারা। তখন সোনিয়াকে তারা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখেন ওই রুমের বাইরে। এক সময় ডাকাডাকি করলে ওই শিক্ষার্থী কোনোমতে দরজা খুলে দেন। কিন্তু নেশাজাতীয় দ্রব্যের প্রভাবে ঠিকমতো কথা বলতে পারছিলেন না তিনি। পুলিশকে শুধু এতোটুকু বলেন, পরিকল্পিতভাবে এই বাসায় এনে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেছেন আব্দুল হাই ও আবু আহমদ। এতে সহযোগিতা করেছেন তারই বান্ধবী সোনিয়া। তখনও ভেতরেই ছিলেন সোনিয়া এবং আবু আহমদ। শিক্ষার্থীর বক্তব্যের পেক্ষিতে আটক করা হয় দু’জনকে।
এসএমপির কোতোয়ালি মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ বলেন, মেয়েটির সাহসিকতা প্রশংসা করার মতো। এ ধরণের ঘটনায় অধিকাংশ ক্ষেত্রে সম্মানের ভয়ে কোনো ধরণের প্রতিবাদ এবং আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়না। এ ধরণের ঘটনার শিকার হলে দরকার আত্মরক্ষার চেষ্টা এবং পুলিশকে জানানো। যেমনটা এই তরুণী করেছেন। প্রবাসী আব্দুল হাইকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতারকৃত দু’জনকে বিকালে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন