শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইসলামী বিশ্ব

মিয়ানমারে অসংখ্য রোহিঙ্গা নারী ধর্ষণের শিকার

মুসলিম উচ্ছেদ অভিযানের নামে সেনাবাহিনীর নির্লজ্জ বর্বরতা

প্রকাশের সময় : ২৯ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলীয় রাখাইন প্রদেশে রোহিঙ্গা-বিরোধী সাম্প্রতিক অভিযানকালে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী ব্যাপক সংখ্যক মুসলিম নারীকে ধর্ষণ করেছে বলে অভিযোগ করেছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো। এ সংখ্যা কয়েক ডজন হতে পারে বলে খবরে বলা হয়। সহিংসতার বিরুদ্ধে অভিযানের নামে দীর্ঘ চার বছর যাবত সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতা চালাচ্ছে মিয়ানমার সেনারা। রাখাইন রাজ্যের ইউ সে কিয়া গ্রামে গত সপ্তাহে সৈন্যরা কিভাবে তাদের ঘরবাড়ি লুটপাট ও ধ্বংসযজ্ঞ চালায় তার বিস্তারিত তুলে ধরেন আট রোহিঙ্গা মুসলিম মহিলা। তারা বলেছেন, শুধু সম্পত্তি লুট করেই তারা ক্ষান্ত হয়নি, বন্দুকের ভয় দেখিয়ে মহিলাদের ধর্ষণ করেছে।
এক টেলিফোন সাক্ষাতকারে আট নারীর মধ্যে তিন থেকে পাঁচ জন সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন। মানবাধিকার গ্রুপ এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে কতজন নারী শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছেন তাদের সঠিক সংখ্যা যাচাই করা সম্ভব হয়নি জানানো হয়। খবরে বলা হয়, শুধু গত ১৯ অক্টোবর একটি গ্রামেই ৩০ জন রোহিঙ্গা নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন বলে জানিয়েছেন রোহিঙ্গা মানবাধিকার সংস্থা আরাকান প্রজেক্টের পরিচালক ক্রিস লেওয়া। তিনি জানান, গত ২০ অক্টোবর একটি গ্রামের দুই নারী ও ২৫ অক্টোবর ১৬ থেকে ১৮ বছর বয়সী পাঁচ কিশোরী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। গত ২৫ অক্টোবর বার্মা হিউম্যান রাইটস নেটওয়ার্ক (বিএইচআরএন) এক বিবৃতিতে বলেছে, চরম উদ্বেগের ব্যাপার যে, সামরিক বাহিনীর অভিযানের সময় মংডু এলাকায় অন্তত ১০ নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এর মধ্যে তিন মাসের গর্ভবতী একজন নারীও আছেন। ধর্ষণের ফলে তার গর্ভের শিশুটি নিহত হয়েছে। বিএইচআরএনের কর্মকর্তা উ কেয়াও উইন বলেন, মিয়ানমার সরকার রাখাইনে ক্রমাগত আন্তর্জাতিক আইন লংঘন করছে এবং অপরাধ করেই যাচ্ছে।
মিয়ানমার সরকার রাখাইনে যৌন নিপীড়ন বন্ধের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে অঙ্গীকার করলেও তা মানছে না বলেও অভিযোগ করেন তিনি। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সামরিক বাহিনী রাখাইন প্রদেশটি ঘিরে ফেলে অভিযানের নামে ব্যাপকহারে হত্যা, লুট, অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণের মতো কাজ করছে। মিয়ানমার টাইমস জানিয়েছে, রাখাইনে কঠিন সামরিক নিয়ন্ত্রণ, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর কাজ বন্ধ করে দেয়ার কারণে সঠিক তথ্য যাচাই করা অসম্ভব হয়ে পড়েছে। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো তাদের রাখাইনে প্রবেশের অনুমতি দিতে মিয়ানমার সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে, যাতে ধারাবাহিকভাব সংঘটিত মানবাধিকার হরণের অভিযোগগুলো স্বাধীনভাবে তদন্ত করা যায়। এদিকে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ অধিকার হরণের অভিযোগ অস্বীকার করলেও নারী অধিকার সংগঠনগুলো মিয়ানমার সেনাবাহিনীর যৌন নিপীড়ন এবং ধর্ষণের ঘটনাগুলোর বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেছে।
২০০৮ সালে প্রণীত মিয়ানমারের সংবিধান অনুযায়ী দেশটির সেনাবাহিনী যৌন নিপীড়ন ও ধর্ষণের মতো অপরাধের ক্ষেত্রে দায়মুক্তি পেয়ে আসছে। কিছু মানবাধিকার সংগঠন মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে বিচারের মুখোমুখি করতে এই সাংবিধানিক দায়মুক্তির পরিবর্তন দাবি করে আসছে।  রয়টার্স।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন