শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতুর সুফল নিয়ে শঙ্কা

বাসন্ডা বেইলি ব্রিজ সংস্কার ও পিরোজপুর বাইপাস নির্মিত হয়নি

নাছিম উল আলম : | প্রকাশের সময় : ৯ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০২ এএম

বরিশাল-খুলনা মহাসড়কের বেকুঠিয়াতে হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে। তবে প্রায় ৩০ বছরের পুরানো বাসন্ডা বেইলি ব্রিজ সংস্কার এবং পিরোজপুর বাইপাস সড়ক নির্মিত না হওয়ায় মারাত্মক সঙ্কট সৃষ্টি হতে যাচ্ছে। এসব সমস্যার সমাধান না হলে বেকুঠিয়ায় নির্মাণাধীন ৮ম বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সেতু কতটা কার্যকরি ভূমিকা রাখবে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। নির্মণাধীন সেতুটির ডিপিপিতে পিরোজপুর বাইপাস নির্মাণ প্রকল্পটিও অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে বিভিন্ন মহল থেকে দাবি জানালেও তা আমলে নেয়নি সড়ক অধিদফতর। তবে গত ৫ বছরে এ লক্ষ্যে একটি সমীক্ষা সম্পন্ন হলেও সে আলোকে পরবর্তি কোন পদক্ষেপও গ্রহণ করা হচ্ছে না। রাজাপুর থেকে পিরোজপুর পর্যন্ত সড়কটি জাতীয় মহাসড়ক দূরের কথা আঞ্চলিক মহাসড়কেও উন্নীত হয়নি। অথচ এ সড়কের ওপরই দেশের ৩টি সমুদ্র বন্দরের সড়ক যোগাযোগ নির্ভরশীল।

কিন্তু মাত্র সাড়ে ৪ কিলোমিটার বাইপাস সড়ক নির্মাণের বিষয়টি এখনো চরম অনিশ্চয়তায়। আগামী জুলাইয়ে বেকুঠিয়াতে ৮ম মৈত্রী সেতুটি চালু হলে পিরোজপুর শহরে ভয়াবহ যানজট সৃষ্টির আশঙ্কা করছেন সড়ক বিশেষজ্ঞরা। চট্টগ্রাম-লক্ষ্মীপুর-ভোলা-বরিশাল ও ঝালকাঠি থেকে মোংলা, বেনাপোল ও ভোমরা বন্দরসহ সমগ্র খুলনা বিভাগের যানবাহন বেকুঠিয়া সেতু পার হয়ে পিরোজপুর শহরের মধ্যে দিয়েই চলাচল করতে হবে। বেকুঠিয়াতে ৮ম মৈত্রী সেতুটির সংযোগ সড়ক পিরোজপুর শহরের মধ্যবর্তী সড়কের সাথেই সংযুক্ত।

অথচ সেতুটির পশ্চিম প্রান্তের দেড় কিলোমিটার দীর্ঘ সংযোগ সড়কটি পিরোজপুর শহরের বাইরে বলেশ^র সেতুর সংযোগ সড়কে সংযুক্ত করলেই এ সমস্যার সমাধান মিলতো বলে জানিয়েছেন সড়ক অধিদফতরের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র। এজন্য মাত্র সাড়ে ৪ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক নির্মাণ করলেই সমাধান মিলবে বলে জানিয়েছে সূত্রটি।
অপরদিকে ঝালকাঠি ও বেকুঠিয়ার মধ্যবর্তী সড়কের বাসন্ডা নদীর ওপর প্রায় ৩০ বছরের পুরেনো বেইলি সেতুটি যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। গত কয়েক বছরে বার বার মেরামত করে কোটি টাকার ওপরে ব্যয় করা হলেও এখন তাও প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। সম্প্রতি বেইলি সেতুটি মেরামত করা হলেও তা কতটা টেকসই হবে সে বিষয়ে কোন নিশ্চয়তার কথা বলতে পারেননি সড়ক অধিদফতরের কেউ।

তবে বরিশাল সড়ক সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জানিয়েছেন, প্রায় ৪শ’ ফুট দীর্ঘ বাসন্ডা সেতুর বিদ্যমান কাঠামোর ওপর প্রি-স্ট্রেসড কংক্রিট গার্ডার পদ্ধতির সেতু নির্মাণ সম্ভব কিনা সে বিষয়ে ডিজাইন সার্কেলে তথ্য উপাত্ত পাঠানো হয়েছে। সেখানের সিদ্ধান্তের ওপরই পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হতে পারে। তবে এ সেতুটি এখনো কোন প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন নির্বাহী প্রকৌশলী। বিদ্যমান অবকাঠামোর ওপরে স্বল্প ব্যয়ে শুধু ডেক সøাব নির্মাণের মাধ্যমে সেতুটি সংস্কার করা হলে তা ১৮-২০ মাসের মধ্যেই সম্ভব। তবে সে ক্ষেত্রে বিদ্যমান সেতুটির পাশে ফেরি সার্ভিস চালু বা আরেকটি বেইলি সেতু নির্মাণ করে সড়ক যোগাযোগ অব্যাহত রাখতে হবে। একইভাবে রাজাপুর থেকে বেকুঠিয়া সেতু পর্যন্ত ১২ কিলোমিটারে দীর্ঘ দিনের পুরানো ছোট ও মাঝারি আরো ৫টি বেইলি সেতু এ সড়কে প্রায়শই প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। তবে পিরোজপুর সড়ক বিভাগের অধীন ২টি সেতু আরসিসিতে পরিবর্তনের কাজ শুরু হয়েছে। আরেকটিও দরপত্র আহবান করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নির্বাহী প্রকৌশলী।

বরিশাল সড়ক জোন থেকে বরিশাল-ঝালকাঠি-খুলনা মহাসড়কটি জাতীয় মহাসড়কে উন্নীতকরণের প্রস্তাব মন্ত্রণালয় অনুমোদন করলেও বিষয়টি চূড়ান্ত অনুমোদনে খুব শিগগিরই পরিকল্পনা কমিশনে পাঠানো হবে বলে জানা গেছে। অনুমোদনের পরে এ সড়কের পরিপূর্ণ সংস্কারসহ তা জাতীয় মহাসড়কের পর্যায়ে রক্ষণাবেক্ষণ করা হবে বলেও জানিয়েছে একাধিক সূত্র।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন