নিম্নমানের খাবার সরবরাহ করা হয় কাশিমপুর কারাগারে। খাবার বিতরণেও আদায় হয় অতিরিক্ত টাকা। কয়েদিরা বাধাহীনভাবে ব্যবহার করছেন মোবাইল ফোন। রান্নাঘরও অপরিষ্কার। মানা হয় না স্বাস্থ্যবিধি। গতকাল গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এনফোর্সমেন্ট টিমের অভিযানকালে এমন অনিয়মের চিত্র দেখা গেছে। দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপ-পরিচালক সালাম আলী মোল্লার নেতৃত্বে ওই অভিযান পরিচালনা করা হয়। দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক বলেন, গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে কয়েদিদের নিম্নমানের খাবার প্রদান, ক্যান্টিনের খাবারের দাম বেশি রাখা এবং সঠিকভাবে চিকিৎসা সেবা প্রদান না করার অভিযোগে এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযান চালায়। টিম অভিযোগ যাচাই ও সত্য উদঘাটনে জন্য সরেজমিনে কাশিমপুর কারাগারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে কারাগারের রান্নাঘর, ক্যান্টিন ও হাসপাতাল পরিদর্শন করেন এবং অভিযোগ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো খতিয়ে দেখে। টিম অভিযানকালে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে।
অভিযান সূত্রে আরও জানা গেছে, কামিশপুর কারাগারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা টিমকে জানান, খাবার সরকারি খাদ্য গুদাম থেকে সরবরাহ করা হয়। তারা এখানে শুধু রান্না করেন। তবে খাবারের মান পূর্বের তুলনায় সন্তোষজনক হলেও রান্নাঘরটি বেশ অপরিষ্কার ছিল। ক্যান্টিনের খাবার কার্ডের মাধ্যমে বিতরণ করা হয় তবে কার্ডের বিপরীতে টাকা জমার সময় অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়।
দুদক টিম কারা হাসপাতাল পরিদর্শনকালে দেখতে পায়, সেখানে তাদের নিজস্ব কোনো ডাক্তার এবং নার্স নেই। একজন ডাক্তার প্রেষণে কর্মরত আছেন। হাসপাতালটি উচ্চ সংক্রমণ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হওয়া সত্ত্বেও স্বাস্থ্যবিধি সঠিকভাবে পালন করা হচ্ছে না।
টিম অভিযানকালে কয়েকজন কারারক্ষীর যোগসাজশে কিছু কয়েদিদের মোবাইল ফোন ব্যবহারের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে। স্ক্যানিংয়ের মাধ্যমে একটি মোবাইল ফোনও উদ্ধার করা হয়েছে। এক্ষেত্রে কারাগারে রান্নাঘর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা, খাবারের মানোন্নয়ন, প্রায় দুই হাজার কারাবন্দীর জন্য পর্যাপ্ত ডাক্তার নার্সসহ সকল আধুনিক চিকিৎসা সুবিধাসহ আলাদা ৫০-১০০ শয্যার হাসপাতাল নির্মাণ এবং কারাগারে কয়েদিদের মোবাইল ফোন সরবরাহে বিষয়ে দায়ীদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করবে দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন