স্টাফ রিপোর্টার : মাদকাসক্ত ছেলের হাতে খুন হয়েছেন এক বৃদ্ধ পিতা। নিহতের নাম মোহর আলী (৬০)। রাজধানীর কদমতলী থানাধীন পূর্ব জুরাইন মেডিকেল রোডের ৩৩৩/৩ নম্বর নিজ বাড়ির পাঁচ তলা ভবনের দ্বিতীয় তলায় এ ঘটনা ঘটে। গতকাল বিকেলে ঘুমন্ত মোহর আলীকে গলাকেটে ও কুপিয়ে পালিয়ে যায় ছেলে আমিুনল ইসলাম সুমন (২৭)। আশঙ্কাজনক অবস্থায় মোহর আলীকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হয়। সেখানে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ময়না তদন্তের জন্য নিহতের লাশ ঢাকা মেডিকেল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
নিহতের স্ত্রী আমেনা বেগম জানান, ব্যবসায়ী স্বামী, দুই পুত্র আর এক কন্যাকে নিয়ে তার ছিলো সুখের সংসার। কিন্তু কয়েক বছর ধরে তার বড় ছেলে সুমন এলাকার বখাটেদের সংস্পর্শে গিয়ে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। প্রথমে পারিবারিকভাবে শাসন করেও কোন লাভ হয়নি। বছরখানেক ধরে ছেলেকে ঢাকার বিভিন্ন মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রে চিকিৎসা করান। কিন্তু মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্র থেকে ফিরে এসে আবারো নেশায় জড়িয়ে পড়ে। মাসতিনেক আগে সুমনকে ভারতের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে দীর্ঘ সময়ের চিকিৎসাশেষে মাসখানেক আগে দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। কয়েকদিন ভালো আচরণ করলেও সপ্তাহখানেক ধরে আবারো নেশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে। গত শুক্রবার সুমন তার বাবার কাছে টাকা চায়। তিনি টাকা দিতে অস্বীকার করেন। এ নিয়ে বাবা ও ছেলের মধ্যে ঝগড়াঝাটি হয়। গতকাল সকালে ফের টাকা চায় সুমন। কিন্তু টাকা দেয়া না হলে ঘর থেকে বের হয়ে যায়। ফিরে আসে দুপুরে। তখন তাকে ভাত খেতে দেয়া হয়। কিন্তু সুমন না খেয়ে ঘরের বাইরে চলে যায়। ফিরে আসে তিনটার দিকে। এ সময় সুমনের বাবা নিজ কক্ষে ঘুমিয়েছিলেন। অপর কক্ষে ঘুমিয়েছিলেন আমেনা বেগম নিজেও। কিছুক্ষণ পর গোঙ্গানির শব্দ পেয়ে আমেনা বেগম পাশের কক্ষে গিয়ে দেখেন গলাকাটা এবং রক্তাক্ত অবস্থায় বিছানায় পড়ে আছেন তার স্বামী মোহর আলী। আমেনা বেগম বলেন, সুমন নিজেই ঘুমন্ত অবস্থায় তার বাবাকে গলাকেটে হত্যার পর দরজা খুলে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় কদমতলী থানা পুলিশ।
কদমতলী থানার ওসি ওয়াজেদ আলী জানান, ছেলে আমিনুল ইসলাম সুমন তার বাবা মোহর আলীকে গলা কেটে হত্যা করে পালিয়েছে। তাকে ধরতে অব্যাহত অভিযান চলছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন