বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ইসলামী জীবন

মানুষের কৃতকর্মের দরুণ বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়ে খুৎবা পূর্ব বয়ান শামসুল ইসলাম

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ জানুয়ারি, ২০২২, ৪:৫২ পিএম

আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন, “মানুষের কৃতকর্মের দরুণ স্থলে ও সাগরে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়ে। ফলে তিনি তাদেরকে তাদের কোন কোন কাজে শাস্তি আস্বাদন করান, যাতে তারা ফিরে আসেন”। বিশ্বে ওমিক্রনের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। হাজার হাজার মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এ বিপর্যয় থেকে রক্ষা পেতে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে তাওবা জারি রাখতে হবে। আজ জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ানে পেশ ইমাম এসব কথা বলেন। নগরীর মসজিদগুলোর অধিকাংশ মুসল্লিদের মাক্স পড়ে জুমার নামাজ আদায় করতে দেখা গেছে।
বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পেশ ইমাম ও ভারপ্রাপ্ত খতীব মুফতি মুহাম্মদ মুহিব্বল্লাহিল বাকী আজ জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ানে বলেন, বিশ্বে করোনার নতুন রূপ ওমিক্রনের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। হাজার হাজার মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। মানুষ যত ধরণের বিপর্যয়, মুসিবত, অসুস্থতার সম্মুখীন হয়ে থাকে তা তাদের কৃত কর্মের কারণে হয়ে থাকে। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, “মানুষের কৃতকর্মের দরুণ স্থলে ও সাগরে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়ে। ফলে তিনি তাদেরকে তাদের কোন কোন কাজে শাস্তি আস্বাদন করান, যাতে তারা ফিরে আসেন”। সূরা আর-রূম-৪১। মানুষ যদিও নিজের কৃত কর্মের কারণে এ বিপর্যয়, মুসিবত, অসুস্থতার শিকার হয়ে থাকে। তবে এই মুসিবত, অসুস্থতা বান্দার জন্য নিয়ামত না আযাব এটা নির্ভর করে বান্দার সবর ও তাওবার ওপর। বান্দা যদি এই রকম অসুস্থতা বা বিপর্যয়ের শিকার হওয়ার পর ধৈর্য ধারণ করে তাওবার মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার দিকে ফিরে যায় তখন বান্দার এই অসুস্থতা ও বিপর্যয় হয় নিয়ামত। অন্যদিকে বান্দা যদি এরকম অবস্থায় ধৈর্য ধারণ না করে ও আল্লাহ তায়ালার দিকে ফিরে না যায় তখন বান্দার এ বিপর্যয় ও অসুস্থতা হয় বান্দার জন্য আযাব। হযরত মাহমুদ ইবনে লাবিদ রা. হতে বর্ণিত, রাসূলে পাক (সা.) ইরশাদ করেন,“মহান আল্লাহ তায়ালা কোন সম্প্রদায়কে যখন ভালোবাসেন তখন তাদের পরীক্ষা করেন, যে ব্যক্তি ইহাতে ধৈর্য ধারণ করে তাহার জন্য ধৈর্য ধারণের সাওয়াব লিখা হয়। যে ব্যক্তি ধৈর্য ধারণ করে না তার জন্য ধৈর্যহীনতার গুনাহ লিখা হয়”। ওমিক্রন রোগকে আমরা ধৈর্য ধারণ ও তাওবার মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার অনুগ্রহে রূপান্তরিত করতে পারি। তবে এর সাথে সাথে স্বাস্থ্যবিধিও মেনে চলতে হবে। খতীব বলেন, যেহেতু রাসূলে পাক (সা.) ইরশাদ করেন, প্রত্যেক রোগেরই প্রতিষেধক রয়েছে। অন্য হাদিসে আছে“প্রত্যেক রোগেরই প্রতিষেধক রয়েছে, রোগ অনুযায়ী যখন প্রতিষেধকের ব্যবস্থা করা হয় তখন আল্লাহ তায়ালার নির্দেশে সুস্থতা অর্জন হয়”। প্রতিষেধক বলতে শুধু খাওয়ার ঔষধ নয়। প্রতিষেধক বলতে রোগ থেকে নিরাময় লাভ করার জন্য যত ধরণের ঔষধ, সুপথ্য, সতর্কতা আছে সব গুলো প্রতিষেধকের অন্তর্ভূক্ত। অতএব রোগ থেকে বাঁচার জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাও সুন্নাত। যদিও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পর বা প্রতিষেধক গ্রহণ করার পরও কেউ আক্রান্ত হতে পারে বা মৃত্যুর শিকার হতে পারে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরও কেউ কেউ অসুস্থতার শিকার হতে পারে। অতএব স্বাস্থ্যবিধি মেনে লাভ কি? এই অজুহাতে স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘন করা যায়েজ হবে না। কারণ বান্দার দায়িত্ব রোগ থেকে বাঁচার জন্য স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করা, আক্রান্ত হয়ে গেলে ধৈর্য ধারণ করে প্রতিষেধক গ্রহণ করা। অনুরূপ যারা সুস্থ থাকবে তারা আক্রান্ত ব্যক্তিদের পাশে দাড়ানো। রাসূলে পাক (সা.) ইরশাদ করেন, “কোন ব্যক্তি যখন রোগীর সেবা করেন তখন আকাশ থেকে একজন ফিরিস্তা ঘোষণা করেন,তুমি নিজেও পবিত্রতা অর্জন করেছ, তোমার চাল চলনও পবিত্র হয়েছে এবং তুমি জান্নাতে একটি প্রাসাদ অর্জন করেছ”। খতীব বলেন, এই করুন অবস্থায় প্রত্যেকের উচিৎ কৃতকর্মের জন্য তাওবা কারা। রোগ থেকে মুক্ত থাকার জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা সাধ্যানুযায়ী আক্রান্ত ব্যক্তিদের পাশে দাড়ানো। আল্লাহ তায়ালা যেন আমাদেরকে এ কাজগুলো করার তৌফক দান করেন। আমিন।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন