শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

নারায়ণগঞ্জের দিকে সবার চোখ

কাল ভোট : প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নৌকা ও হাতি দলমত নির্বিশেষে সবার ভোটে নির্বাচিত হব : তৈমূর সহিংসতা না হলে আমার বিজয় সুনিশ্চিত : আইভী

স্টালিন সরকার | প্রকাশের সময় : ১৬ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০৭ এএম

সবার দৃষ্টি এখন নারায়ণগঞ্জে। করোনাভাইরাসের নতুন ধরণ ওমিক্রনের সংক্রমণ ঠেকাতে দেশে ১১ দফা বিধিনিষেধ চলছে। এর মধ্যেই আগামীকাল ১৬ জানুয়ারি রাজধানী ঢাকার অদূরে বন্দরনগরী হিসেবে পরিচিত নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। নির্বাচনে ভোটাররা নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারেন কিনা সেটা দেখার জন্য মুখিয়ে আছেন সারা দেশের মানুষ। শুধু দেশের মানুষ নয়, ঢাকায় কর্মরত বিদেশি দূতাবাসের কর্মকর্তারাও নারায়ণগঞ্জের নির্বাচন কেমন হয় সেটা দেখতে চান। ৫ লাখ ১৭ হাজার ভোটার অধ্যুষিত নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন (নাসিক) নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৭ প্রার্থী। তবে নৌকার প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী ও হাতি মার্কার স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি থেকে অব্যাহতিপ্রাপ্ত অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারের মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। প্রথম দিকে উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হলেও পরবর্তীতে সেটা আর উৎসবে থাকেনি; কাদা ছোঁড়াছুড়িতে রূপ নেয়। নৌকার প্রার্থী বলেছেন, ‘ভোটকেন্দ্রে সহিংসতা না হলে আমার বিজয় নিশ্চিত’। তবে হাতি মার্কার প্রার্থী বলেছেন, ‘ঢাকা থেকে আওয়ামী লীগের নেতারা এসে নির্বাচনে ধোঁয়াশা সৃষ্টি করছেন। জনগণ নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারলে বিজয়ী হব ইনশাআল্লাহ’।

জানা যায়, প্রাচ্যের ড্যান্ডি খ্যাত নারায়ণগঞ্জকে ১৮৭৬ সালে পৌরসভা করা হয়। ২০১১ সালে পুরোনো নারায়ণগঞ্জ ও কদমরসুল পৌরসভাকে একত্রিত করে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভা দেশের সপ্তম সিটি কর্পোরেশনে উন্নীত হয়। এ সিটি এখন তৃতীয় নির্বাচনের দ্বারপ্রান্তে। ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য এই নির্বাচনে ৭ মেয়র প্রার্থী ছাড়াও ২৭টি ওয়ার্ডের সাধারণ আসনের কাউন্সিলর পদে ১৪৮ জন এবং সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিল পদে ৩৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরই মধ্যে এই নির্বাচনের উত্তেজনা নারায়ণগঞ্জের গণ্ডি পেরিয়ে গেছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় সংসদ সদস্য শামীম ওসমান ও নৌকার প্রার্থী আইভীর মধ্যকার বাহাস নির্বাচনী মাঠে উত্তাপ ছড়িয়েছে। বামপন্থী দলগুলোর নেতাকর্মী পরিবেষ্টিত নৌকার প্রার্থী আইভী প্রথম থেকেই তার মূল প্রতিপক্ষ ওসমান পরিবারের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালিয়েছেন। তবে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের চাপে শামীম ওসমান সংবাদ সম্মেলন করে নৌকাকে জেতানোর অঙ্গিকার করেছেন। আবার সেভেন খুনের মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নূর হোসেন কাশিমপুর কারাগারের কনডেম সেলে বসে মোবাইলে কমিশনার প্রার্থী ভাই ও ভাতিজার পক্ষ্যে ভোট চাচ্ছেন এমন খবর প্রচার হওয়ায় তোলপাড় শুরু হয়। অন্যদিকে বিএনপি থেকে অব্যাহতি পেলেও বিএনপির নেতাকর্মীরা তৈমূর আলম খন্দকারের পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। যদিও তৈমূর প্রথম থেকেই নিজেদের নারায়ণগঞ্জের সাধারণ মানুষের প্রার্থী হিসেবে নিজেকে পরিচিত করে তুলেছেন। শ্রমিক, রিকশা-ঠেলাগাড়ি চালক, বস্তিবাসী এবং সাধারণ মানুষের প্রার্থী হিসেবে প্রচার করছেন। যদিও গতকাল তৈমূর বলেছেন, নির্বাচিত হতে পারলে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির আন্দোলন ত্বরান্বিত করব।

তবে স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ মনে করেন নির্বাচন কমিশনের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের কারণে সুষ্ঠু ভোট নিয়ে শঙ্কা রয়ে গেছে। সিইসি কে এম নুরুল হুদা আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, নারায়ণগঞ্জের ভোটের পরিবেশ নিয়ে তিনি শঙ্কার কিছু দেখছেন না। তবে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সভাপতি এম হাফিজ উদ্দিন খান বলেছেন, অতীতের রেকর্ড দেখলে বর্তমান কমিশনের ওপর ভরসা নেই। তারা নতুন কথা শিখছেন সহিংসতার দায় তাদের না। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীলদের দায়সারা কথাবার্তায় নিরপেক্ষ নির্বাচনে ভরসা করা কঠিন। নারায়ণগঞ্জের নির্বাচনী পরিবেশ দেখে এসেছেন স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. তোফায়েল আহমেদ। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন নির্বাচন করে না। তারা শুধু ব্যালট পেপার পাঠায় আর লোকজন নিয়োগ দেয়। স্থানভেদে নিজেরা নিজেদের মতো ভোট করে নেয়। বর্তমান ইসির ওপর নিরপেক্ষতা প্রত্যাশা করা কঠিন।

গতকাল নৌকার প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী ও হাতি মার্কার স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার শেষ দিনের নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়েছেন। তারা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গিয়ে মানুষের সঙ্গে দেখা করেন এবং ভোট প্রার্থনা করেন। সেলিনা হায়াৎ আইভীর পক্ষে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা ভোটের প্রচারণা চালাচ্ছেন। ১৩ জানুয়ারি জেলা প্রশাসকের সঙ্গে দেখা করে দীর্ঘ সময় বৈঠক করেছেন। এ নিয়ে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও নৌকার কেন্দ্রীয় নির্বাচনী সমন্বয়ক জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, আমরা ডিসির সঙ্গে বৈঠকে সদর দরজা দিয়ে প্রবেশ করেছি এবং বের হয়েছি। গোপন কোনো দরজা দিয়ে ডিসি অফিসে ঢুকিনি। ফলে নির্বাচন প্রভাবিত করার প্রশ্নই আসে না। অন্যদিকে হাতি প্রতীকের প্রার্থী অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকারের প্রধান নির্বাচন সমন্বয়ক ও নারায়ণগঞ্জ বিএনপির নগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনকে নৌকার পক্ষে প্রভাবিত করার অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, প্রতীক বিতরণের পর নির্বাচনী প্রচারণা উৎসবমুখর ছিল। ঢাকা থেকে আওয়ামী লীগের কিছু কেন্দ্রীয় নেতা এসে উস্কানীমূলক বক্তব্য দিয়ে পরিবেশ ঘোলা করেন। তারা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে ডিসির সঙ্গে বৈঠক এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে হাতি মার্কার কর্মীদের বিরুদ্ধে উস্কে দিচ্ছেন। এমনকি তৈমূরের উদ্দেশে ‘ঘুঘু দেখেছো ফাঁদ দেখেননি’ মন্তব্য করার পর হাতি মার্কার নেতাকর্মীদের হয়রানি শুরু করে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে তল্লাসী, ভয়ভীতি দেখায়। নারায়ণগঞ্জের মানুষ বুঝে গেছে বামপন্থী পরিবেষ্টিত নৌকার প্রার্থী আইভীকে জেতাতে প্রশাসনকে কাজে লাগানো হচ্ছে। তবে নারায়ণগঞ্জের মানুষ ষড়যন্ত্র বুঝে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গেছে। আরেকটি কথা, নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগের নেতারাও জানেন আইভী নৌকা মার্কার প্রার্থী হলেও তিনি আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাকর্মীদের কখনোই পাত্তা দেন না। তিনি বামপন্থী তথাকথিত প্রগতিশীল সংস্কৃতিকর্মী পরিবেষ্টিত হয়ে সিটি কর্পোরেশনে মেয়রগিরি করেছেন।

ইনকিলাবের জেলা সংবাদদাতা জানান, গতকাল নির্বাচনী প্রচারণায় বের হওয়ার আগে নিজেদের বাসায় সংবাদ সম্মেলন করেন নৌকার প্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী ও হাতি মার্কার স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার। সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়রপ্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, ভোটকেন্দ্রে সহিংসতা না হলে আমার বিজয় সুনিশ্চিত। নির্বাচনে আমি জিতবই, ইনশাআল্লাহ। তিনি বলেন, তবে আমার বিজয় সুনিশ্চিত জেনে কেউ যদি ভোট কেন্দ্রে সহিংসতা করে সেটি মোটেও ঠিক হবে না। এক্ষেত্রে আমি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অনুরোধ করব তারা যেন বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখে।

নৌকার মেয়রপ্রার্থী বলেন, নির্বাচন কমিশনকে আমি আগেই জানিয়েছি, যাতে ভোটকেন্দ্রে ভোটার যেতে পারেন। নারী ভোটার ও তরুণ ভোটাররা যেন যেতে পারেন। কারণ এ ভোটগুলো আমার। কোনো ধরনের সহিংসতা যেন না হয়।
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা নির্বাচন প্রভাবিত করার জন্য এখানে আসছে এমন অভিযোগের জবাবে তিনি বলেন, ঢাকা থেকে নির্বাচনী পরিবেশ পর্যবেক্ষণে এসেছে তারা। এখানে কোনো ঝামেলা হচ্ছে কিনা, তা পর্যবেক্ষণ করছে। তারা আমার জয় নিয়ে শঙ্কিত নয়, কখনো ছিল না। তাই প্রভাবিত করার কিছু নেই।

অন্যদিকে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র মেয়রপ্রার্থী তৈমূর আলম খন্দকার শুক্রবার নারায়ণগঞ্জ শহরের মিশনপাড়া এলাকায় নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপিসাধারণ সম্পাদক এটিএম কামালের বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলির সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক নির্বাচনে নাগরিকদের মধ্যে ধোঁয়াশা সৃষ্টি করছেন। নানক কিছু সহকর্মী নিয়ে নির্বাচনের মাত্র দুদিন বাকি থাকতে বৃহস্পতিবার রাতে ডিসি-এসপির সাথে বৈঠক করেছেন। তিনি এটা করে নির্বাচন নিয়ে ভোটার না হয়েও নাগরিকদের মধ্যে একটা ধোঁয়াশা সৃষ্টি করেছেন। নারায়ণগঞ্জের হোটেলগুলো চেক করলে দেখা যাবে, সরকারি দলের বিভিন্ন জেলার লোকজনকে এনে রাখা হয়েছে। সার্কিট হাউজ ও ডাকবাংলোকে নির্বাচনের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। আইন অনুযায়ী এগুলো ব্যবহার করার বিধান নেই। এটা আচরণবিধির লঙ্ঘন। বৃহস্পতিবার রাতে নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সঙ্গে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের নেতৃত্বে একটি দল বৈঠক করেন। আচরণবিধি লঙ্ঘন করে সরকারি দলের উচ্চ পর্যায়ের মেহমানরা নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে উঠেপড়ে লেগে গেছেন। এতে জনমনে ধোঁয়াশা তৈরি হচ্ছে। তার বক্তব্য ও দেখা করতে যাওয়ার সঙ্গে কোনো সমন্বয় নেই। প্রথমত তিনি নির্বাচনের আগে কোনোভাবেই প্রশাসনের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে পারেন না। তৈমূর আলমের অভিযোগ, পুলিশ আমার দলের নেতাকর্মী ও সক্রিয় কর্মীদের বাড়িতে তল্লাশি চালাচ্ছে। তাদের মুঠোফোনে নানাভাবে হুমকি দেয়া হচ্ছে। আমরা গ্রেফতার এড়িয়ে নির্বাচনে অংশ নেয়ার চেষ্টা করছি। সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে স্বতন্ত্র এই মেয়রপ্রার্থী বলেন, নারায়ণগঞ্জে ব্যালটের মাধ্যমে জনগণের প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটলে প্রধানমন্ত্রীর ভাবমর্যাদা উজ্জ্বল হবে। তিনি বলেন, সুষ্ঠু ভোট হলে এবং ভোটাররা ভোট দেয়ার সুযোগ পেলে আমি নারায়ণগঞ্জের সিটি মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হব।

নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে লড়ছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী, স্বতন্ত্র প্রার্থী অ্যাডভোকেট তৈমূর আলম খন্দকার ছাড়াও আরো ৫ জন মেয়রপ্রার্থী ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী মাসুম বিল্লাহ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির প্রার্থী মো. রাশেদ ফেরদৌস, খেলাফত মজলিসের প্রার্থী এ বি এম সিরাজুল মামুন, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের প্রার্থী জসিম উদ্দিন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুর বাবু নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন।
শেষ দিনের প্রচারণা : নৌকার প্রার্থী ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী গতকাল রূপগঞ্জ, আড়াইহাজার, ফতুল্লা, পাগলা, সোনারগাঁয়ে নির্বাচনী প্রচারণা চালান। নাসিকের ভোটার নন এমন হাজারো ব্যাক্তিকে সমাবেশে আনা হয়। আড়াইহাজারের এমপি নজরুল ইসলাম বাবুর নেতৃত্বে তারা আইভীর প্রচারণায় অংশ নেন। এ সময় সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেন, অন্যায় অত্যাচার অবিচারের বিরুদ্ধে এই নৌকায় আস্থা রাখুন। এই নৌকা শেখ হাসিনার নৌকা, বঙ্গবন্ধুর নৌকা, এই নৌকাকে ঠেকানোর ক্ষমতা কারো নেই। নারায়ণগঞ্জের আনাচে-কানাচে উন্নয়ন হয়েছে। এখানে শীতলক্ষ্যা ব্রিজ হবে, দুর্নীতিমুক্ত-সন্ত্রাসমুক্ত নগরী গড়তে নৌকায় ভোট দিন। এ সময় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলির অন্যতম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, নারায়ণগঞ্জের মানুষ সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে, নারায়ণগঞ্জের মানুষ শান্তির পক্ষে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোনো সন্ত্রাসের উঁকিঝুঁকি নারায়ণগঞ্জের মানুষ হতে দেবে না। তারা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি মেনে নেবে না। শান্তির প্রতীক নৌকায় ভোট দিতে গণজাগরণ সৃষ্টি হয়েছে। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলির আরেক সদস্য আবদুর রহমান বলেন, নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই নগরীকে সন্ত্রাসের নগরী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে ষড়যন্ত্রকারীরা, অপশক্তি ঐক্যবদ্ধ হয়েছে; এদেরকে প্রতিহত করুন। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাসিম বলেন, এই নগরীকে উন্নত, সমৃদ্ধ এবং আধুনিক নগরী হিসেবে উন্নয়নের চাকা সচল রাখার জন্য আইভীকে বিজয়ী করতে হবে।

আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী আইভী নগরের রূপগঞ্জ, আড়াইহাজার, ফতুল্লা, পাগলা, সোনারগাঁয়ের হাজারো নেতাকর্মী যারা নাসিকের ভোটার নন তাদের এনে সমাবেশ করছে জানতে পেরে বন্দরের নেতাকর্মীরা তৈমূর আলম খন্দকারকে সেখানে ডাকেন গণসংযোগে। তৈমূর তার সঙ্গে কয়েকজনকে নিয়ে সেখানে যান গণসংযোগে। সেখানে গিয়ে তৈমূর যখন হাজির হলেন তখন হাজার হাজার মানুষ চারিদিক থেকে মিছিল নিয়ে এসে তাকে চমকে দিয়েছেন। সেখানে উপস্থিত তৈমূরের সঙ্গে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম টিটু বলেন, আমরা কয়েকজন ছিলাম তার সঙ্গে। আমাদের ডেকে চমকে দিয়েছেন এখানকার ভোটার ও নেতাকর্মীরা। বিএনপি, জাতীয় পার্টি, আওয়ামী লীগ, নাগরিক ঐক্য, সর্বস্তরের মানুষ এতে যোগ দেন। হাজার হাজার মানুষের সমাগমে চমকে উঠেন তৈমূর। সবার অনুরোধে সবাইকে নিয়ে তৈমূর বন্দরে গণসংযোগ করেন। হাজার হাজার মানুষের মিছিলটিতে তৈরি করা হাতি প্রতীক, ব্যানার, ফেস্টুন দেখা গেছে।

তৈমূর সেখানে বলেন, আমি বন্দরবাসীর ভালোবাসায় নিজেকে বিলিয়ে দিলাম। আমি জয়ী হই বা না হই আপনাদের পাশে আমি ছিলাম, আছি, থাকব। আপনারা আমাকে চমকে দিয়েছেন এ আয়োজনে। বন্দরবাসীর নাসিকের ওপর দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ ও আমার প্রতি ভালোবাসার প্রতিচ্ছবি এ মিছিল। আমি ভোট চাই, দোয়াও চাই। আপনারা ভোটকেন্দ্রে যাবেন এবং ফলাফল নিয়ে আসবেন এটাই আমার বিশ্বাস।

জানতে চাইলে সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব) ড. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, নারায়ণগঞ্জের নির্বাচনে নিয়ন্ত্রক হবেন কাউন্সিলররা। এখানে দলীয় অন্তর্দ্বন্ত বিষয়টি দেখছি, সহিংসতা দেখছি না। তবে ভোট কারচুপির ব্যাপারে শঙ্কা রয়েছে। কিছু জায়গায় এটি কাউন্সিলরদের মাঝে দেখা যেতে পারে। নির্বাচনে আইভী-শামীম দ্বন্দ্ব ফ্যাক্টর হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (11)
Md Mizanur Rahman ১৫ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:২৯ এএম says : 0
প্রার্থী কি দু জনই অন্য প্রার্থীদেরকে সামনে নিয়ে আসেন না কেন?
Total Reply(0)
Saiful Islam Saif ১৫ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:২৯ এএম says : 0
এমন বক্তব্য শুনে ২০১৮ সালের নির্বাচনের কথা মনে পড়ে গেলো। আশাকরি সুস্থ ভোট হবে । ভোটার নিজে তার প্রার্থীকে নির্বাচিত করার সুযোগ পাবে।
Total Reply(0)
MD Salim Reza ১৫ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:৩৭ এএম says : 0
দেশের প্রতিটি ভোটকেন্দ্র সিসিটিভির আওতায় আনার বিষয়ে আইনের সীমাবদ্ধতা আছে কিনা আমার জানা নেই তবে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে সিসিটিভির বিকল্প নেই। অতীতে সিসিটিভির বদৌলতে অনেক অপরাধীকে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে তার চাক্ষুষ প্রমাণ দেশবাসী দেখেছে আর এটা সম্ভব হয়েছে ডিজিটাল বাংলাদেশের কারনেই।
Total Reply(0)
Mostafiz Suman ১৫ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:৩৮ এএম says : 0
এই শীতের মধ্যে কষ্ট করে লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দেয়ার কি দরকার
Total Reply(0)
সরল মানুষ ১৫ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:৩৯ এএম says : 0
প্রয়োজনে কারেন্ট বন্ধ হবে তবুও নৌকা চলবে
Total Reply(0)
Md Morshed Ahmadi ১৫ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:৩৯ এএম says : 0
দুর্নীতি বাজ দের অচিরেই কালো তালিকাভুক্ত করা হবে তাদের নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে
Total Reply(0)
Forhad Khan ১৫ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:৩৯ এএম says : 0
ভোট যদি হয়..আইভি এর অবস্থান হবে তিন নম্বর .
Total Reply(0)
Sohel Chowdhury ১৫ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:৪০ এএম says : 0
ভোটের সময় সব প্রার্থী একই কথা বলে। আরেকবার খেদমত করার সুযোগ দিন, এই হল পুরনো অভ্যাস। অতীত মনে রাখেনা কেউ।
Total Reply(0)
এস এম ইউসুফ ১৫ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:৪০ এএম says : 0
ফলাফল তো নির্বাচন কমিশন ঠিক করে রেখেছে, নইলে আপনি বলতে পারেন কেমনে যেএক লক্ষ ভোটে জিতবেন?৷
Total Reply(0)
মোহাম্মদ দলিলুর রহমান ১৫ জানুয়ারি, ২০২২, ২:২৭ এএম says : 0
ভোট কেন্দ্রে গিয়ে মারবেন না,ভোটের বাক্স ভর্তি হয়ে বরতমানে নির্বাচন কমিশনের আওতায় আছে,কিছু বক্স কেন্দ্রতে যাবে ,তবে এক লক্ষ ভোট বর্তমানে বক্স ভর্তি হয়ে নির্বাচন কমিশন এর আওতায় যে সব সহস্র বাহিনী আছে তাদের গাড়িতে সাজানে আছে,কালকে পাঁচ টার পরে কেন্দ্রর ভিতরে ইনসআললাহ প্রবেশ করবে,ইনসআললাহ নৌকা হয়ে গেছে। আমরা পুরুষ শাসন মানি না পুরুষ কে গৃনা করি,ভবিষ্যতে যত নির্বাচন হবে,সব জায়গায় মহিলা বিজয়ী করতে হবে,এই বাংলাদেশ পুরুষের শাসন চলবেনা,পুরুষ রান্না করবে ঘর দরজা ঝাড়ু দিবে কাপড় চোপড় ছাপাই করবে বাচচা পায়খানা পেসাব করার পর সে গুলি পরিস্কার করবে,বেশি বাড়া বারি করলে আইন অনুসারে শাস্তি দেয়া হবে,আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি,
Total Reply(0)
SHAFIQ AHMED ১৫ জানুয়ারি, ২০২২, ৯:৪৫ এএম says : 0
যদি সুষ্ঠ ভোট হয়, তাহলে হাতি মার্কা জিতে যাবে। তার কারণ প্রধান মন্ত্রী চিন্তা করেন,দেশের উন্নয়ন আর তার নেতা-নেত্রীরা চিন্তা করেন দূর্নীতি,সন্ত্রাসীর দ্বারা আখের গোছানোর। যা নির্বাচনী প্রচারণা দেখলেই বোঝা যায়। নৌকা প্রার্থীর পক্ষে কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা প্রশাসনের সাথে বার বার বৈঠক করেছেন।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন