ঢাকার বাতাস দিন দিনই বিষাক্ত হচ্ছে। বিশ্বের দূষিত বাতাসের শহরের তালিকায় বাংলাদেশের এ রাজধানী শহরের অবস্থান গত দুই বছর ধরে এক থেকে পাঁচের মধ্যে থাকছে। গতকালও শনিবার ঢাকার বাতাসে একিউআই সূচক ১৮৮ পিপিএম। এটা বিশ্বের দূষিত শহরের মধ্যে তৃতীয়। বায়ুমান সূচক ২৮৬ নিয়ে বসনিয়া হার্জেগোভিনার সারাজিভো এলাকা দূষণে প্রথম। ২০৮ সূচক নিয়ে পাকিস্তানের লাহোর দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। এর আগের দিন বায়ুমান সূচক ২০৪ পিপিএম নিয়ে ঢাকার অবস্থান ছিলে দ্বিতীয়।
রাস্তার সংস্কার, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজের গতি বৃদ্ধি এবং পুরানো গাড়ি চলাচল বেড়ে যাওয়ার ফলে ২০২০ সাল থেকে ২০২১ সালে বায়ুদূষণ ১০ শতাংশ বেড়েছে। একই সাথে রাস্তার সংস্কার, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজের জন্য রাজধানীর উত্তরা ও আব্দুল্লাহপুর এলাকায় বায়ুদূষণের মাত্রা সবচেয়ে বেশি। স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
ক্যাপস বলছে, ২০২০ সালের তুলনায় ২০২১ সালে বায়ু দূষণ ১০ শতাংশ বেশি হয়েছে। গড়ে ২০২০ সালে বায়ুমান সূচক (একিউআই) অনুযায়ী দূষণের মাত্রা ছিল ১৪৫। যা ২০২১ সালে এসে হয়েছে ১৫৯ দশমিক ১।
২০২০ সালে যখন লকডাউন শুরু হয় তখন অনেকগুলো উন্নয়ন প্রকল্প থেমে যায়। স্কুল, কলেজ, যানবাহন বন্ধ হয়ে যায়। তবে ২০২১ সালে বিধি-নিষেধ থাকলে তা আগের বছরের মতো কঠোর ছিল না। এ কারণে মানুষ ২০২০ সালে যে কাজগুলো করতে পারেনি সেগুলো পরের বছর করে ফেলে। নির্মাণ প্রকল্পের কাজ তরান্বিত করতে ইটের ব্যবহার ও উৎপাদন বেড়েছে গত বছর। রাস্তার সংস্কার, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ গতি পেয়েছে গত বছর। এছাড়া ঢাকাতে প্রায় ১০ থেকে ১৫ লাখ গাড়ি চলাচল করে। এগুলোর মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি গাড়ি ২০২০ সালে চলাচল করেনি। ব্যবহার না হওয়া ও পুরানো তেল মবিল নিয়ে পড়ে থাকায় গাড়িগুলোর ইঞ্জিনের কার্যকারিতা কমে যায়। অনেক মালিক সেটা সার্ভিসিং না করে রাস্তায় নিয়ে আসে। এর ফলে সড়কে দূষণ বেড়েছে। এ গবেষণা বলছে, পরিবহন খাত বায়ু দূষণের অন্যতম মাধ্যম। কোনো কিছু পোড়ানোর ফলে যে বায়ু দূষণ হয় তার উৎস ঢাকা শহরে দুটি। এর একটি হলো- যানবাহন, আর অন্যটি হলো বর্জ্য পোড়ানো।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন