চাহিদার কথা বিবেচনা করে নতুন প্রযুক্তিতে উৎপাদনের জন্য জাতীয় লবণ নীতিমালা-২০২২ এর খসড়ার অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এছাড়া মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিকারে বৈষম্য বিরোধী আইন অনুমোদন দিয়েছে। আজ সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদ ভবনে মন্ত্রিসভা কক্ষে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি জানান, এখন লবণ চাষের ক্ষেত্রে দক্ষিণাঞ্চল বিশেষ করে উপকূলীয় জেলা গুলোর অনেক গুলোয় ট্রেডিশনাল সিস্টেমে হচ্ছে সেটা একটা মডিফিকেশন দরকার। মাতারবাড়ি, কক্সবাজার, পায়রায় বেশকিছু জায়গা ডেভলোপমেন্ট কাজে নিয়েছি। সেজন্য নতুন নতুন জায়গায় উদ্বাবন করা এবং নতুন টেকনোলজির মাধ্যমে আরও প্রোডাক্টটিভিটি ইফেকক্টিভ এবং বড় করার জন্য নীতিমালা নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, আশা করা হচ্ছে, ২০২০-২৫ মেয়াদী এই নীতিমালা বাস্তবায়ন করলে আমরা লবণ উৎপাদনের কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জন করবো এবং আমাদের লবণের ঘাটতি হবে না। এজন্য কতগুলো কাজ করতে হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ২০২০-২৫ পর্যন্ত বার্ষিক লবণের খাত ভিত্তিক লবণের চাহিদা নিরূপণ, পরিবেশ বান্ধব উন্নত ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার, লবণ চাষীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা, প্রশিক্ষণ এবং স্বল্প সুদে ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা রাখতে হবে। অপররিশোধিত লবণের মান এবং মাত্রা নির্ধারণ করতে হবে। ঈদুল আযহার সময় চামড়াগুলো যেন সংরক্ষণ করতে পারি সেজন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে লবণের ব্যবস্থা করতে হবে। গুণগত মান নিশ্চিত, আয়োডিন ঘাটতি জনিত রোগ প্রতিরোধে ভোজ্য লবণে আয়োডিনের পরিমাণ নিশ্চিত করতে হবে। তিনি জানান, আপদকালীন সময়ের জন্য বাফার স্টক রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। সেজন্য লবণ শিল্প জরিপ করতে হবে। তার ফলের ভিত্তিতে পদক্ষেপগুলো নিতে হবে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রতিকারে বৈষম্য বিরোধী আইন, ২০২২ এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, অনেকগুলো আন্তর্জাতিক কনভেনশনের মাধ্যমে সারা বিশ্বে সব রকমের বৈষম্য নিরসন করা হয়েছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে বৈষম্য দূরীকরণের বিষয়ঘুলো সুস্পস্টভাবে উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছে। তারই আলোকে এই আইন নিয়ে আসা হয়েছে।
তিনি বলেন, আইনের আলোকে একটি মনিটরিং কমিটি গঠন করা হবে। কমিটি বিভিন্ন পর্যায়ে যেমন- জাতীয়, বিভাগীয় এবং জেলা বা যে পর্যায় পর্যন্ত সরকার চায়। তারা মনিটর করবে হিউম্যান রাইটসের কোনো ভায়েলেশন হচ্ছে কিনা। এখানে একজন সভাপতি থাকবেন। আইনমন্ত্রী কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করবেন এবং লেজিসলেটিং বিভাগের একজন যুগ্মসচিব সেটার সদস্য সচিব হবেন। এভাবে নিচের দিকে যতগুলো প্রশাসনিক ইউনিট আছে সেখা সরকার যে রকম প্রয়োজন মনে করবে সে রকম কমিটি করে দেবে। বিভিন্ন সময়ে সভাপতি সময় নির্দিষ্ট করে মনিটরিং মিটিং করবেন।
বৈষম্য বিরোধী একটা সেল গঠন করা হবে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, যে সেল বৈষম্য বিরোধী কার্যাবলি প্রতিরোধ এবং তাৎক্ষণিক প্রতিকার প্রদানের জন্য বৈষম্য বিরোধী জাতীয়, বিভাগীয়, জেলা কমিটিসহ অন্যান্য কমিটি গঠন করবে। তারা জনগণের মধ্যে একটচা সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে যে কোনোভাবেই কোনো রকমের বৈষম্য করা যাবে না। যদি কেউ কোনো অভিযোগ দায়ের করে তাহলে ৩০ দিনের মধ্যে জেলা কমিটি ঘটনা তদন্ত করবে। জেলা কমিটি প্রতিকার প্রদানে ব্যর্থ হলে অভিযোগকারী বিভাগীয় কমিটির কাছে অভিযোগ দায়েরের ৩০ দিনের মধ্যে তদন্ত করবে। বিভাগীয় কমিটি ব্যর্থ হলে ৪৫ দিন পরে জাতীয় কমিটি তদন্ত করে একশন নেবে। সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি উপযুক্ত আদালতে মামলা দায়ের করলে ৯০ দিনের মধ্যে মামলা ডিসপোজাল করতে হবে। যদি ৯০ দিনের মধ্যে না পারে তাহলে সর্বোচ্চ ১৫ দিন বৃদ্ধি করে সেই মামলা শেষ করে দিতে হবে। আইনে একটি বিধি করার কথা বলা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, সেই বিধি অনুযায়ী বৈষম্যের বিষয়গুলো হ্যান্ডেল করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন