ইউক্রেন সংকট নিয়ে রাশিয়াকে নতুন আলোচনায় বসার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর মহাসচিব জেনস স্টোলটেনবার্গ। তবে নতুন আলোচনায় বসার আগে ইউরোপের কাছে নিজেদের সরবরাহ করা নিরাপত্তা দাবির তালিকার উত্তর চায় মস্কো। মঙ্গলবার বার্লিনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্টোলটেনবার্গ বলেন তিনি ন্যাটো-রাশিয়া কাউন্সিলকে একাধিক বৈঠকের প্রস্তাব দিয়েছেন। যাতে করে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে কোনও সামরিক হামলা ঠেকানোর উপায় খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করা যায়। নতুন আলোচনা কবে শুরু হতে পারে তার কোনও সুনির্দিষ্ট তারিখ জানাননি ন্যাটো মহাসচিব। তবে তিনি বলেছেন, আলোচনা নিকট ভবিষ্যতে হতে পারে বলে ইঙ্গিত মিলছে। জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শ্যুলজের সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে স্টোলটেনবার্গ বলেন, ‘একটা সংঘাতের ঝুঁকি বাস্তব। এখন মূল কাজ হলো রাজনৈতিক উপায় এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রগতি অর্জন করা।’ সম্প্রতি ইউক্রেন সীমান্তে দশ হাজার সেনা সমাবেশ ঘটায় মস্কো। এতে কিয়েভ ও তাদের পশ্চিমা মিত্ররা আশঙ্কা করতে থাকে রাশিয়া ২০১৪ সালের পর আবারও ইউক্রেনে আগ্রাসন চালাতে পারে। এদিকে, ইউক্রেন সীমান্তে ক্রেমলিনের হাজার হাজার সেনা মোতায়েনের বিষয়ে গত সপ্তাহে রাশিয়া ও পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে আলোচনা উত্তেজনা নিরসনে ব্যর্থ হয়েছে। এরপরই ইউক্রেন সফর শুরু করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এই সফরের মধ্য দিয়ে তিনি দেশটির প্রতি মার্কিন সমর্থনের জানান দেবেন। ইউক্রেন নিয়ে সৃষ্ট উত্তেজনা নিরসনের চেষ্টা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তার শীর্ষ কূটনীতিক পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেনকে এ দায়িত্ব দিয়ে জেনেভা পাঠাচ্ছেন। সেখানে এ সপ্তাহে শুক্রবার রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের সঙ্গে তার সাক্ষাত হওয়ার কথা রয়েছে। এর আগে তিনি কিয়েভে ইউক্রেনের নেতা ও বার্লিনে ইউরোপিয়ান কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। ইউক্রেন সীমান্তের কাছে রাশিয়া প্রায় এক লাখ সেনা মোতায়েন করেছে। এতে ইউক্রেন ও পশ্চিমারা আতঙ্ক প্রকাশ করেছে, রাশিয়া সামরিক আগ্রাসন চালাতে পারে ইউক্রেনে। এ নিয়ে পশ্চিমারা, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। ফলে ওই অঞ্চলে একটি সম্ভাব্য যুদ্ধের পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এই যখন অবস্থা তখন জো বাইডেনের বারতা নিয়ে এই মিশনে আসছেন তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র একজন কর্মকর্তা মঙ্গলবার বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধ চায় না। চায় শান্তি। ওই কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, এই উত্তেজনা বন্ধে নিজের ক্ষমতা ব্যবহার করে পদক্ষেপ নিতে পারেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি তা করলে যুক্তরাষ্ট্র এবং রাশিয়ার মধ্যে একটি সম্পর্ক গড়ে উঠবে। সেই সম্পর্ক হবে কোনো শত্রুতা বা সংকটকেন্দ্রিক নয়। ওদিকে নতুন করে সামরিক আগ্রাসনের পরিকল্পনার কথা প্রত্যাখ্যান করেছে রাশিয়া। একই সঙ্গে বেশ কিছু শর্ত জুড়ে দিয়েছে। তারা বলেছে, এসব শর্তে তাদের সঙ্গে যদি পশ্চিমারা একমত না হয়, তাহলে সামরিক পদক্ষেপ নেবে। কি হবে সেই সামরিক পদক্ষেপ সে সম্পর্কে পরিষ্কার করেনি রাশিয়া। রয়টার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন