রাজধানীর হাতিরপুল এলাকায় দীর্ঘ সাত বছর ধরে গৃহ পরিচারিকার কাজ করে আসছিলেন ফারজানা আক্তার (১৩)। দীর্ঘদিন ধরে গৃহকর্ত্রী লাভলী ইউসুফের আদর-ভালোবাসা নিয়েই কাজ করে আসছিল সে। করোনাভাইরাসে গৃহকর্ত্রীর মৃত্যুর পর তার মেয়ে সুমির অধীনে কাজ করতে গিয়ে দুর্বিষহ জীবন নেমে আসে ফারজানার। নিষ্ঠুর নির্যাতনে এক পর্যায়ে এই কিশোরী এখন জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। অবশেষে ওই গৃহকর্মীকে মুমূর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করেছে কলাবাগান থানা পুলিশ। তাকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ফারজানার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এ ঘটনায় সুমিসহ দুই জনকে আটক করেছে পুলিশ। কলাবাগান থানার এসআই শামিম হোসেন জানান, পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে কলাবাগানের সেন্ট্রাল রোডের বাসা থেকে কিশোরী ফারজানাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে মেয়ের শারীরিক অবস্থায় দিশেহারা তার বাবা মো. বিল্লাল। তিনি বলেন, আমার মেয়ে সাত বছর ধরে লাভলী ম্যাডামের বাসায় কাজ করতো। করোনায় ম্যাডামের মৃত্যুর পর তার মেয়ে সুমির কাছে থাকতো। গত এক বছর ধরে সুমি আমার মেয়েকে নির্যাতন করেছে।
সামান্য কোনও ভুল হলেই তাকে শারীরিক নির্যাতন করা হতো উল্লেখ করে তিনি বলেন, কয়েকদিন আগেও আমার মেয়েকে টয়লেটে আটকে রেখে উলঙ্গ করে নির্যাতন করা হয়েছে। তারপর হারপিক খাইয়ে দিয়েছিল। কিছু হলেই সুমি ও তার ভাই হিরন আমার মেয়েকে নির্যাতন করতো। এক সময় রাজমিস্ত্রীর কাজ করতেন দুই ছেলে ও মেয়ের জনক বিল্লাল। একটি দুর্ঘটনায় তার পা ভেঙে যাওয়ায় তিনি মেয়েকে গৃহকর্মীর কাজে দিতে বাধ্য হয়েছেন। তাদের বাড়ি বরিশালের বাকেরগঞ্জ থানায়।
মেয়ের সঙ্গে গেল একবছরে পরিবারের লোকজনকে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না বলেও অভিযোগ করে তিনি বলেন, তারা আমার মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে দিতো না। আমরা দেখা করতে আসলে ভেতরে ঢুকতে দিত না। শুধু মোবাইলে কথা বলতে দিতো, তবে মোবাইলে নির্যাতনের কথা না বলার জন্যও তাকে ভয় দেখানো হতো। ম্যাডাম যখন ছিলেন মেয়েটাকে অনেক আদর করতো। ম্যাডাম মারা যাওয়ার পর এক বছর ধরে নির্যাতন চালিয়ে মেয়েটার এমন হাল করেছে। তিনি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিও দাবি করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন