নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জয়ের হ্যাট্রিক করে টানা তৃতীয়বারের মতো মেয়র নির্বাচিত হওয়া সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেছেন, এবারের নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচন খুবই ষড়যন্ত্রমূলক ছিল। আমাকে চতুর্মুখী ষড়যন্ত্রের মধ্যে কাজ করতে হয়েছে। আমাকে অনেকবার আঘাত করা হয়েছে। কিন্তু প্রতিবারই আমি শক্ত হয়ে দাঁড়িয়েছিলাম।
গতকাল শনিবার সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত ‘জনপ্রতিনিধি নির্বাচন প্রক্রিয়া এবং অভিজ্ঞতা শীর্ষক’ এক ভার্চ্যুয়াল সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন। সংলাপে অন্যান্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান, সিপিডির চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) বদিউল আলম মজুমদার, স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদ, সাবেক নির্বাচন কমিশনার সাখাওয়াত হোসেন, সংসদ সদস্য আরোমা দত্ত ও রাশেদ খান মেনন।
আইভী বলেন, এবারের নির্বাচন কঠিন ছিল। তিনটি মেয়র নির্বাচন করেছি। তিন নির্বাচনের ফ্লেভার তিনরকম ছিল। কোনো নির্বাচনেই ষড়যন্ত্রের বাইরে ছিলাম না। সব বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে নির্বাচন করেছি। যদিও আমার দল আওয়ামী লীগ সরকারে ছিল, কিন্তু প্রতিবারই বিভিন্ন বাধার সম্মুখীন হয়ে সাধারণ জনগণকে আস্থায় এনে নির্বাচনে জিততে হয়েছে। এ সময় নারায়ণগঞ্জে সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের সঙ্গে নিজের দ্বন্দ্বের প্রসঙ্গের দিকে ইঙ্গিত করে আইভী বলেন, আমার কোনো বাহিনী নেই। অনেক বাধা এসেছে, এমনকি তাকে হত্যার প্রচেষ্টাও করা হয়েছে। এরপরও কখনই বাহিনী তৈরি করেননি। আমার আস্থা আমার জনগণ। আমার লক্ষ্য মানুষের কল্যাণ করা। তাই সারাক্ষণ মানুষের সঙ্গে মিশে কাজ করেছি। আমি কখনো কারো কাছ থেকে বেনিফিট নেইনি।
এর আগে গত ১৬ জানুয়ারি নৌকা প্রতীকে বিপুল ভোটে জয় পান আইভী। নির্বাচন কমিশনের তথ্য বলছে, ১৯২টি কেন্দ্রে মোট ১ লাখ ৫৯ হাজার ৯৭ ভোট পেয়েছেন আইভী। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী হাতি মার্কার তৈমূর আলম খন্দকার পেয়েছেন ৯২ হাজার ১৬৬ ভোট। নারায়ণগঞ্জ সিটি নির্বাচনে এবার ইভিএমে ভোটগ্রহণ হয়েছে। এতে ভোট কম পড়েছে বলে উল্লেখ করেন আইভী। তিনি বলেন, ইভিএমের কারণে ভোট কমেছে, এটা সত্য। এমন না যে ভোটাররা ভোট দিতে আসেননি। আমার অসংখ্য ভোটার ফেরত গেছে। অপরদিকে ইভিএম নিয়ে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তৈমূরেরও অভিযোগ রয়েছে।
তিনি বলেন, আমি এবার একটি বিষয় দেখলাম, নারী ভোটারদের তিন-চার তলায় নেওয়া হয়েছে। কী কারণে নেওয়া হলো, আমি জানি না। অনেক ভোটকেন্দ্রে বুথ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে রহস্যজনকভাবে। কেন করা হলো আমি জানি না। আরও কিছু কারণ আছে, যা আমি এখানে বলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করছি না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন