জার্মান চ্যান্সেলর হিসেবে শপথ নেবার পর ওলাফ শলৎস আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি ওয়াশিংটন সফর করছেন৷ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে তিনি ইউক্রেন-সহ একাধিক বিষয়ে আলোচনা করবেন৷
ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়ার বিশাল সামরিক প্রস্তুতির মুখে যুদ্ধের আশঙ্কা এখনো দূর হচ্ছে না৷ জোরালো কূটনৈতিক তৎপরতা সত্ত্বেও সংঘাত এড়ানো সম্ভব হবে কিনা, তা স্পষ্ট নয়৷ সামরিক জোট ন্যাটো-সহ পশ্চিমা বিশ্ব একযোগে রাশিয়ার প্রতি কড়া বার্তা পাঠানোর চেষ্টা করছে৷ কিন্তু রাশিয়ার প্রতি জার্মানির ‘নরমপন্থি' মনোভাব নিয়ে অ্যামেরিকাসহ অনেক দেশে বিস্ময় ও বিরক্তি বাড়ছে৷
ইউক্রেনের দুর্দিনে অস্ত্রের বদলে শুধু হেলমেট সরবরাহের বিষয়টি সংবাদপত্রের শিরোনামে উঠে এসেছে৷ বিংশ শতাব্দীতে নিজস্ব ইতিহাসের কারণে জার্মানি প্রতিরক্ষা ও অস্ত্র সরবরাহের প্রশ্নে ন্যাটোর অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি সতর্ক৷ বিশেষ করে সংঘাতের আশঙ্কার মাঝে অস্ত্র সরবরাহের বিষয়ে সেই সংশয় আরও বেড়ে যায়৷
রাশিয়া থেকে সরাসরি গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করতে ‘নর্ড স্ট্রিম ২' পাইপলাইন চালু করার বিষয়েও জার্মানি অ্যামেরিকা ও ইউরোপে চাপের মুখে রয়েছে৷ বাইডেন প্রশাসন এই পাইপলাইনের ঘোর বিরোধী৷ বিশেষ করে বর্তমান পরিস্থিতিতে সে বিষয়ে আরও কড়া মনোভাব দেখা যাচ্ছে৷ রাশিয়ার আগ্রাসনের মুখে কোনোমতে সেই পাইপলাইন চালু হবে না বলে অ্যামেরিকা স্পষ্ট করে দিচ্ছে৷
ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডেয়ার লাইয়েনও ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলা ঘটলে এই প্রকল্প অবসানের হুমকি দিয়েছেন৷ জার্মান সরকারের মধ্যেও ‘নর্ড স্ট্রিম ২' প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় বাড়ছে৷ তবে সরকারের শরিক সবুজ দল প্রকল্পের বিরোধিতা করলেও শলৎসের এসপিডি দল এখনো হাল ছাড়তে প্রস্তুত নয়৷ প্র
কল্পের কাজ প্রায় শেষ হয়ে যাবার পর এত বড় কর্মযজ্ঞ পুরোপুরি বর্জন করা অর্থনৈতিক মাপকাঠিতে সঙ্গত হবে না বলে দলের একাংশ মনে করে৷ শলৎসের পূর্বসূরি আঙ্গেলা ম্যার্কেলও ‘নর্ড স্ট্রিম ২' প্রকল্পকে পুরোপুরি বাণিজ্যিক উদ্যোগ হিসেবে তুলে ধরে সেটিকে অরাজনৈতিক রাখার চেষ্টা চালিয়ে গেছেন৷
এমনই প্রেক্ষাপটে ওয়াশিংটনে জার্মানির অবস্থান খোলসা করতে যাচ্ছেন জার্মান চ্যান্সেলর শলৎস৷ অবশ্য ৭ ফেব্রুয়ারির আগেই ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে সামরিক সংঘাত ঘটলে গোটা পরিস্থিতি বদলে যাবে৷ হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানির দীর্ঘ ও ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের উল্লেখ করা হয়েছে৷ ইউক্রেন ছাড়াও করোনা সংকট ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিষয়ে দুই দেশের মধ্যে আরও সহযোগিতার প্রত্যাশা করছে ওয়াশিংটন৷ সূত্র: ডিপিএ. রয়টার্স।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন