বগুড়ায় হাফিজার রহমান গাছু নামে বৃদ্ধ ভ্যানচালক হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। ভ্যান ছিনতাইকারীরা চেতনানাশক ঔষুধ খাইয়ে হত্যা করে গাছুকে। এ ঘটনায় জড়িত এক দম্পতিসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলো, গাইবান্ধা পলাশবাড়ীর চান মণ্ডলের ছেলে মজনু মণ্ডল, মজনুর স্ত্রী মাহমুদা বেগম, মজনুর বোন জামাই ও কালুবাড়ি এলাকার মৃত ইসমাইল হকের ছেলে মো. মজনু এবং বগুড়া শিবগঞ্জের রহবল এলাকার মৃত আবুল মণ্ডলের ছেলে সাইদুর মণ্ডল ওরফে মগা। এছাড়া সন্দেহভাজন আরও এক আসামি রয়েছে যার নাম প্রকাশ করা হয়নি। গতকাল শনিবার নিজ কার্যালয়ে বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান। এসময় জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলী হায়দার চৌধুরী, আব্দুর রশিদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, ডিবির ও শিবগঞ্জ থানার ওসি উপস্থিত ছিলেন। গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর রাত ১০টার দিকে বগুড়া শিবগঞ্জ উপজেলার মেঘাখর্দ্দ দক্ষিণপাড়া এলাকার হাফিজার রহমান গাছুকে অচেতন অবস্থায় ডাকুমারা বাজার থেকে উদ্ধার করে স্থানীয় লোকজন। পরে চিকিৎসার জন্য গাছুকে শিবগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং সেখান থেকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান গাছু। পরে নিহতের ছেলে আমিনুল ইসলাম অজ্ঞাতনামা কয়েকজনের নামে শিবগঞ্জ থানায় হত্যামামলা দায়ের করেন।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার জানান, মামলা দায়েরর পর পুলিশ বিভিন্ন মাধ্যম অবলম্বন করে গত বৃহস্পতিবার রহবল এলাকা থেকে সন্দেহভাজন হিসেবে সাইদুর রহমান ওরফে মগাকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেয়া তথ্যমতে রহবল দক্ষিণপাড়া এলাকার জনৈক হাসান আলীর বাড়ি থেকে নিহতের চুরি যাওয়া ভ্যান উদ্ধার করা হয় এবং গত শুক্রবার গাইবান্ধার পলাশবাড়ী এলাকা থেকে মজনু মণ্ডল, তার স্ত্রী মাহমুদা এবং বোন জামাই মজনুকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃত আসামিদের বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার আরও জানান, ১৬ ডিসেম্বর বিকাল ৫টার দিকে মোকামতলা বাসস্ট্যান্ড থেকে সোনাতলা বালুয়াহাটা যাওয়ার কথা বলে গাছুর ভ্যান ভাড়া করে মজনু ও মাহমুদা। যাওয়ার পথে ডাকুমারা বাসষ্ট্যান্ড আসার পর তারা চা পানের কথা বলে দাঁড়ায়। পরে কৌশলে মাহমুদা গাছুর চায়ের কাপে চেতনানাশক দ্রব্য মিশিয়ে দেয়। চা-সেবন শেষে সকলেই পুনরায় গাছুর ভ্যানযোগে সন্ধ্যা পৌণে ৬টার দিকে ডাকুমারা থেকে বালুয়াহাটের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। পথিমধ্যে ভ্যানচালক গাছু অচেতন হয়ে যান। পরে তাকে ঘটনাস্থলে ফেলে দিয়ে মজনু মণ্ডল, তার স্ত্রী মাহমুদা ও ভগ্নিপতি মজনু গাছুর ভ্যানটি অসৎ উদ্দেশ্যে নিয়ে যায়। পরে তারা সাইদুল মণ্ডল ওরফে মগার কাছে ভ্যান বিক্রি করে দেন। পুলিশ সুপার বলেন, সাইদুল মণ্ডল ওরফে মগা নিজেকে জড়িয়ে আদালতে ১৬৪ ধারা মোতাবেক জবানবন্দী দেন। পলাতক অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতার এবং ভিসেরা রিপোর্ট প্রাপ্তি সাপেক্ষে আদালতে মামলার চার্জশিট দাখিল করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন