উত্তরাঞ্চলের শষ্য ভান্ডারখ্যাত নওগাঁর আত্রাইয়ে চলতি রবি মৌসুমে এবার প্রাকৃতিক দুর্যোগ হানা না দেওয়ায় আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। উপজেলার প্রতিটি হাট-বাজারে এখন প্রতি কেজি গরুর গোস্ত বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকায়। আর এখানকার কৃষকরা প্রতি মণ আলু বিক্রি করেছেন ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায়। চলতি মৌসুমে আলুর ভালো ফলন পেলেও ন্যায্য দাম পাচ্ছেনা আত্রাই উপজেলার আলু চাষিরা। অনেক পরিশ্রমের ফসল আলু বিক্রি করে খরচের টাকাই উঠছে না তাদের। দাম না থাকায় তাই এক কেজি গরুর গোস্ত কিনতে দেড় মণ আলু বেচতে হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি রবিশস্য মৌসুমে এবারে উপজেলার ৮ ইউনিয়নে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে আলু চাষিদেরকে কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে যথাযথ পরামর্শ ও প্রত্যক্ষ কারিগরী সহযোগিতার কারণে আলু ক্ষেত অনেকটা রোগ-বালাইমুক্ত হওয়ায় বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। উপজেলার শাহাগোলা, ভোঁপাড়া, মনিয়ারী ও আহসানগঞ্জ ইউনিয়নে সবচেয়ে বেশি আলু চাষ হয়েছে বলে কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে।
উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের কৃষক আজাদ প্রামানিক বলেন, চলতি মৌসুমে আলুর দাম একেবারেই কম। ভালো মানের আলু ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা দরে বিক্রি হলেও অধিকাংশ আলু ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায় প্রতি মণ বিক্রি হচ্ছে। এতে কৃষকের উৎপাদন খরচই উঠছে না।
উপজেলার রাইপুর গ্রামের কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, একসময় প্রতি মণ আলু সাত শ’ থেকে আট শ’ টাকা দরে বিক্রি করেছি। তখন প্রতি হাটেই আলু বেচে গোস্ত কিনে মনের আনন্দে বাড়ি ফিরতাম। এক মণ আলু না বেচেই এক কেজি মাংস কেনা যেত। অথচ এখন এক কেজি গোস্ত কিনতে দেড় মণ আলু বেচতে হচ্ছে। এ অবস্থার পরিবর্তন না হলে কৃষক সর্বস্বান্ত হয়ে যাবে।
এক মণ আলু নিয়ে হাটে এসেছেন আব্দুল ছামাদ নামে এক কৃষক। বাড়িতে মেয়ে আর নাতিরা এসেছে। আলু বিক্রি করে গোস্ত কিনে বাড়ি ফিরবেন। কিন্তু বাজারে আলুর দাম দেখে তিনি হতাশ। কেননা দেড় মণ আলুর দাম এক কেজি গরুর গোস্তের সমান।
এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ কেএম কাউছার হোসেন বলেন, চলতি রবি মৌসুমে আত্রাই উপজেলায় এবার আলুর বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে আলুর দাম কম থাকায় কৃষকেরা একটু হতাশায় রয়েছে। তবে আশা করা যায় আগামীতে আলুর দাম বৃদ্ধি পাবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন