আয়কর মেলা উদ্বোধন অর্থমন্ত্রী
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : বর্তমানে দেশে প্রায় ১৩ লাখ করদাতা রয়েছে, চলতি অর্থবছর শেষে দেশে প্রায় ২৫ লাখ করদাতা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে সাড়ে তিন লাখ নতুন করদাতা তৈরি হয়েছে বলেও তিনি জানান। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্মাণাধীন জাতীয় রাজস্ব ভবনে জাতীয় আয়কর মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। অর্থমন্ত্রী এ অনুষ্ঠানে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের উদ্বোধনও করেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রতিবেশী দেশগুলোর চেয়ে আমাদের দেশে করতাদার সংখ্যা খুবই কম। তবে আগামী দুই বছরের মধ্যে এ সংখ্যা একটি সম্মানজনক জায়গায় পৌঁছাবে। আগে রাষ্ট্রের আয়তন বৃদ্ধি ও সামরিক কাজে রাজস্ব আদায় করা হলেও বর্তমানে আর্থসামাজিক উন্নয়নের জন্য রাজস্ব আদায় হয় বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, আয়কর মেলার উদ্দেশ্য ছিল করদাতাকে কর প্রদানে জনগণকে উৎসাহিত করা এবং কর আদায়কারীদের মধ্যে জনবান্ধব মনোভাব তৈরি করা। আয়কর মেলা এখন উৎসবে পরিণত হয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য সফল হয়েছে। ছাত্রদেরও কর দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে তিনি বলেন, কর দেয়ার জন্য কোনো বয়স লাগে না। যে কোনো বয়সে কর দেয়া যায়। ছাত্রদের মধ্যে যাদের কর দেয়ার সক্ষমতা আছে, তারা যেন কর দেয়।
অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, কর কাঠামো আরো সহজ করতে সংস্কার চলছে। এটা চলমান বিষয়, ভবিষ্যতে আরো সহজ করা হবে।
অনুষ্ঠানে রাজস্ব ফাঁকি রোধ এবং বকেয়া রাজস্ব আদায়ে ট্যাক্স পুলিশের প্রস্তাব দিয়েছেন এফবিসিসিআই সভাপতি আব্দুল মাতলুব আহমাদ। তিনি বলেছেন, উন্নত দেশে ট্যাক্স পুলিশ রয়েছে। আমাদের দেশে এটির প্রবর্তন করা দরকার। কোনো ব্যক্তির রাজস্ব বকেয়া থাকলে তাদের সতর্ক করতে পারবে ট্যাক্স পুলিশেরা। এটি করা হলে রাজস্ব ফাঁকি অনেকটা রোধ করা সম্ভব হবে। মাতলুব আহমাদ আরো দাবি জানান, জেলা ও বিভাগীয় শহরে রাজস্ব কমপ্লেক্স করা প্রয়োজন। এ ছাড়া ঢাকা শহরে আঞ্চলিক রাজস্ব কমপ্লেক্স করা এখন সময়ের দাবি।
তিনি বলেন, বাংলার সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীরা ভ্যাট-ট্যাক্স দিতে চান। তবে তারা দেয়ার পদ্ধতি আরো সহজ চান। এখন অনলাইনে রিটার্ন দেয়া যাচ্ছে। ভবিষ্যতে হয়তো সব ট্যাক্স দেয়া যাবে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান বলেন, নভেম্বরের মাঝামাঝি সর্বোচ্চ করদাতাদের সম্মাননা ে দেয়া হবে। আমরা ইতোমধ্যে ১০০ জন সেরা করদাতা, ১০০ সেরা নারী করদাতা এবং ১০০ জন সেরা তরুণ উদ্যোক্তা করদাতার নাম চূড়ান্ত করেছি।
এই আয়কর মেলা সাত দিনব্যাপী চলবে। প্রথম দিনেই বিপুল করদাতার সমাগম হয়। মেলায় করদাতারা আয়কর বিবরণীর ফরম থেকে শুরু করে কর পরিশোধের জন্য ব্যাংক বুথও পাচ্ছেন। আর করদাতাদের সহায়তার জন্য সহায়তাকেন্দ্র আছে। একই ছাদের নিচে সব সেবা মিলছে। করদাতা শুধু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সাথে আনলেই হবে। নারী, প্রতিবন্ধী, মুক্তিযোদ্ধা ও প্রবীণ করদাতাদের জন্য আলাদা বুথ আছে। এ ছাড়া এবারই প্রথমবারের মতো অনলাইনে রিটার্ন জমা বা ই-ফাইলিং করার সুযোগ রয়েছে।
কর মেলায় নতুন করদাতারা ইলেকট্রনিক কর শনাক্তকরণ নম্বর (ই-টিআইএন) নিতে পারবেন। আবার পুনর্নিবন্ধন করে ই-টিআইএন নিতে পারবেন পুরনো করদাতারা। এ ছাড়া ই- পেমেন্টের জন্য পৃথক বুথ আছে।
রাজধানীর ঢাকার পাশাপাশে গতকাল থেকে সব বিভাগীয় শহরে সাত দিনব্যাপী এ কর মেলা শুরু হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন