শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

রাস্তায় দাঁড়িয়ে সংবাদ সম্মেলন করল বি’বাড়িয়া বিএনপি

প্রকাশের সময় : ১৯ জানুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সংবাদদাতা : দৌড়ের ওপর সাংবাদিক সম্মেলন করল জেলা বিএনপি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তা-ব ঘটনা নিয়ে বিএনপি’র অবস্থান পরিষ্কার করতে এ সাংবাদিক সম্মেলন ডাকা হয়েছিল। জেলা বিএনপি’র সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি শহরের মৌড়াইলস্থ বাসভবনে সকাল ১১টার এ সাংবাদিক সম্মেলন আহ্বান করা হয়। দলের পক্ষ থেকে সকল প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া এবং স্থানীয় পত্রিকার সম্পাদকদের সংবাদ সম্মেলনের খবর কাভার করার জন্য আহ্বান জানানো হয়। তবে জেলা বিএনপি’র পক্ষ থেকে সকালে সাংবাদিকদের জানানো হয় রাতেই সদর থানার নতুন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মঈনুর রহমান বিএনপি নেতাদের সাংবাদিক সম্মেলন বন্ধ করতে বলেন। অভিযান চালানো হয় বিএনপি’র সভাপতির বাসায়। সকালে দেখা গেল বাস্তবতা। সকাল থেকেই র‌্যাব-বিজিবিসহ বিপুলসংখ্যক পুলিশ হাফিজুর রহমান মোল্লা কচির বাস ভবন ও আশপাশ এলাকা ঘিরে রাখে। নিয়োগ দেয়া হয় ২ জন ম্যাজিস্ট্রেট। সৃষ্ট পরিস্থিতিতে সরে যান বিএনপি নেতারা। পরে শহরের পাওয়ার হাউজ সড়কে দাঁড়িয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন জেলা বিএনপি’র নেতৃবৃন্দ। লিখিত বক্তব্যে দলের সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক খোকন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবী করেন। এ ঘটনায় থানার সাবেক এএসপি তাপস রঞ্জন ঘোষ ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আকুল চন্দ্র বিশ্বাসকে দায়ী করার পাশাপাশি অভিযোগ করেন, আসন্ন পৌর নির্বাচনে বিএনপি’র প্রার্থীকে মাঠ ছাড়া করতে তাদের নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তারা অভিযোগ করেন, ৭৭ দিন কারাভোগের পর বিএনপি নেতৃবৃন্দ এবং এখনো কারাবন্দি মাহমুদুর রহমান মাহিনকে কারাগারে থাকা অবস্থায় মামলায় আসামী করা হয়েছে। সাংবাদিক সম্মেলনে তারা বলেন, সম্প্রতি ঘটনা ঘটে ঘটনা প্রবাহে বিএনপি’র কোন সংশ্লিষ্ট নেই। এতে জেলা বিএনপি নেতাদের সকল প্রকার হয়রানি বন্ধ, সমস্ত মিথ্যা ফরমায়েশী রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা দায়েরের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। তারা বলেন, শাসক দলের নেতৃবৃন্দ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিগত দিনের সকল রাজনৈতিক, সামাজিক ও পারস্পরিক সহমর্মিতা ও শ্রদ্ধাবোধের বন্ধনকে ধবংস করে দিচ্ছে। এ নেতৃত্ব অসহিঞ্চু অবিবেচনা প্রসূত হীনমানসিকতা সম্পন্ন নেতৃত্ব। সাংবাদিক সম্মেলন শেষ করার পূর্বেই র‌্যাব-বিজিবি-পুলিশের বিশাল বহর ঘটনাস্থলে পৌঁছলে তারা তড়িগড়ি করে ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়েন। এসময় জেলা বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, সাবেক দপ্তর এবিএম মোমিনুল হক, সাবেক যুবদলের সাধারন সম্পাদক আসাদুজ্জামান শাহিন, ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি ও কাউন্সির কাউসারসহ বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি’র সংবাদ সম্মেলনকে ঘিরে ১ প্লাটুন র‌্যাব, ৪ প্লাটুন বিজিবি ও বিপুলসংখ্যক পুলিশের টহল জোরদার করা হয়। এ ব্যাপারে দায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেট রুহুল আমীন সাংবাদিকদের জানান, এটি অতিরিক্ত কিছু নয়। এটি নিয়মিত টহল। আইন-শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রয়েছে।
এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সহিংসের ঘটনায় পুলিশ আরো একজনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃত মোঃ শাহেদ হোসেন সদর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক। পুলিশ জানায়, আলাউদ্দিন সঙ্গীতাঙ্গনের অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন ঘটনায় তার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। এনিয়ে ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি ব্যাপক তদন্ত চলছে।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আহ্বান
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মাদ্রাসা ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত ১২ জানুয়ারি সুর সম্রাট উস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ সঙ্গীতঙ্গনসহ বেশ কয়েকটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছে কেন্দ্রীয় সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের নেতৃবৃন্দ। সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় বাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের আহ্বায়ক আবদুন নূরের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আবদুল কুদ্দুছ, সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা নাছির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, সদস্য নাজমুল হোসেন পাখি, গ্রুপ থিয়েটার ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক আকতারুজ্জমানান, সহ-সাধারণ সম্পাদক চন্দন রেজা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সাহিত্য একাডেমীর আহ্বায়ক কবি জয়দুল হোসেনসহ স্থানীয় সাংস্কৃতিক কর্মীরা।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুস বলেন, এ ঘটনায় যাদের প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাদের প্রত্যাহার করলেই চলবে না। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার উপর এ আঘাত। মুক্তিযোদ্ধা নাসির উদ্দিন ইউসুফ বলেন, আমাদের লড়াই চালিয়ে যেতে হবে। সাংস্কৃতিক কর্মকা- দিয়েই এসব তৎপরতা প্রতিরোধ করতে হবে। তিনি ঘটনার সাথে যারা জড়িত পুলিশ কর্মকর্তাসহ সকল অপরাধীর বিচার দাবী করেছেন। শুধুমাত্র দুই পুলিশকে প্রত্যাহার করলেই চলবে না, ঘটনা তদন্ত করে দেখতে হবে আসলে সর্ষের মধ্যেই ভূত আছে কি না। এসময় বক্তারা মৌলবাদ ও সকল অপশক্তির বিরুদ্ধে সংস্কৃতিকর্মীদের ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান। এর আগে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট নেতৃবৃন্দ ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত ভাষা চত্বরে অবস্থিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া শিশু নাট্যসহ ৬টি সাংস্কৃতিক ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন