জলবায়ুর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিলের (ইফাদ) কাছে সহজ শর্তে আরও ঋণ সহায়তা চাইলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। গতকাল অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে ইফাদের নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর আরনুড হেইমলারসের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ সহায়তা চান মন্ত্রী। ভার্চুয়াল এই বৈঠকে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব ফাতিমা ইয়াসমিনসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশে ইফাদের নতুন কান্ট্রি ডিরেক্টরকে স্বাগত জানিয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থাটির অর্থায়নে বাস্তবায়নাধীন বিভিন্ন প্রকল্পে সহায়তা বাড়ানোর জন্য অনুরোধ জানান অর্থমন্ত্রী। পাঁচ বছর মেয়াদী ৮ম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা, এসডিজি এবং কোভিড-১৯ পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার লক্ষ্যে বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়ানোর বিষয়ে ইফাদ ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন মুস্তফা কামাল। সভায় অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে গত এক দশকে দেশে অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। কোভিড-১৯ মহামারির কারণে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও প্রধানমন্ত্রীর বিচক্ষণ নেতৃত্বে বাংলাদেশের অর্থনীতি এখনও ভালো অবস্থানে আছে। অর্থমন্ত্রী গত ১০ বছরে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন বিশেষ করে কৃষি, শিল্প, বাণিজ্য ও সেবা খাতের বিভিন্ন উন্নয়ন তুলে ধরেন। গ্রামীন অর্থনীতি তথা কৃষি, গ্রামীন অবকাঠামো উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন, নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পগুলোতে ইফাদের সহায়তা অব্যাহত রাখার জন্য ধন্যবাদ জানান মন্ত্রী।
একই সঙ্গে ভবিষ্যতে জলবায়ুর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জিইএফসহ অন্যান্য উন্নয়ন সহযোগী তহবিল থেকে সহজ শর্তে বাংলাদেশকে ঋণ দেয়ার জন্য ইফাদের কান্ট্রি ডিরেক্টরকে অনুরোধ জানান অর্থমন্ত্রী। সভার শুরুতে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন নতুন কান্ট্রি ডিরেক্টরকে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, ইফাদ জাতিসংঘের অন্যতম বিশেষায়িত সংস্থা। ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিলের সদস্যপদ প্রাপ্তির পর থেকে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক তথা দরিদ্র জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে। বাংলাদেশ ইফাদের সদস্য পদ প্রাপ্তির পর থেকে মোট ক্রমপুঞ্জিত বিনিয়োগের পরিমাণ ২৩০ কোটি ডলার (২ দশমিক ৩ বিলিয়ন)। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা। ইফাদ এ পর্যন্ত বাংলাদেশের ৩৪টি প্রকল্পে ঋণ ও অনুদান সহায়তা প্রদান করে। ইআরডি সচিব জানান, এ বিনিয়োগের ফলে গ্রামের এক কোটি ১৭ লাখ লোক উপকৃত হয়েছে। ইআরডির কর্মকর্তারা বলেছেন, ৩৪টি প্রকল্পের মধ্যে ২৭টি প্রকল্প সমাপ্ত হয়েছে। বর্তমানে চলমান ৭টি প্রকল্প কৃষি মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকার বিভাগ, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হচ্ছে। আগামী ২০৩০ সালের মধ্যেক্ষুধামুক্ত পৃথিবী গড়ার প্রত্যয়ে বাংলাদেশের সহযোগিতা কামনা করেন বাংলাদেশে ইফাদের কান্ট্রি ডিরেক্টর। তিনি বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা অর্জন, জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, জেন্ডার, পুষ্টি, আদিবাসী ও জনগণের জীবন মানের উন্নয়নে ইফাদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন