বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

নাসিরনগরের ওসি প্রত্যাহার

প্রকাশের সময় : ৩ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সংবাদদাতা : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে সৃষ্ট ঘটনায় থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল কাদেরকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। বুধবার দুপুরে তাকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইকবাল হোসাইন ওসির প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, প্রশাসনিক কারণে ওসি আবদুল কাদেরকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
ভাংচুর পরিদর্শন সুলতানা কামালের
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পবিত্র কাবা শরীফ অবমাননার করে আপত্তিকর ছবি পোস্ট করার প্রতিবাদে মিছিল চলাকালে নাসিরনগর উপজেলা সদরে হিন্দু সম্প্রদায়ের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাড়ি-ঘর ও মন্দিরে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনায় বুধবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন আইন ও শালিস কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক সুলতানা কামাল। তার নেতৃত্বে নাগরিক কমিটি ড. এনামুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে মানবাধিকার কমিশন ও রানা দাস গুপ্তের নেতৃত্বে হিন্দু বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিনিধিদল পৃথক পৃথকভাবে হরিপুরসহ নাসিরনগর গৌর মন্দির, দত্তবাড়ি মন্দির, কালিবাড়ি মন্দির, জগন্নাথ মন্দিরসহ বিভিন্ন বাড়ি-ঘর পরিদর্শন, আহত ও ক্ষতিগ্রস্ত হিন্দু পরিবারের লোকজনের সাথে কথা বলেন। এদিকে বুধবার বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কার্য নির্বাহী কমিটির সদস্য, পার্বত্য চট্টগ্রাম-বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি হারিপুর গ্রামে বাড়ি ঘর ও মন্দিরে হামলা, ভাংচুরের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
কওমী ওলামা পরিষদের সংবাদ সম্মেলন
নাসিরনগরে পবিত্র কাবা ঘরের ছবির উপর শিবমূর্তি বসিয়ে ফেসবুকে পোস্ট করা ও হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির, প্রতিমা ও বাড়িঘরে হামলা ভাংচুর, লুটপাটের ঘটনার প্রকৃত অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে কওমী ওলামা পরিষদ। এ ঘটনায় আলেম-ওলামাদের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি না করার জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি। সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে নাসিরনগর উপজেলা কওমী ওলামা পরিষদের সভাপতি মাওলানা মো. সামছুদ্দীন বলেন, পবিত্র কাবা শরীফ অবমাননার মাধ্যমে বিশ্বের কোটি মুসলমানের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা হয়েছে। তাই ভবিষ্যতে যেন আর কেউ ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার দুঃসাহস না দেখতে পারে সেজন্য অভিযুক্ত রসরাজ দাসের দৃষ্টাস্তমূলক বিচার হওয়া প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, আমরা সেদিন শান্তিপূর্ণ মিছিল শেষ করে নিজ নিজ স্থানে ফিরে যাওয়ার সময় জানতে পারলাম কিছু দুষ্কৃতকারী হিন্দু ধর্মালম্বীদের উপাসনালয়, প্রতিমা এবং ঘরবাড়িতে আক্রমণ করে। একটি মহল ঘটনার দায়ভার আলেম-ওলামাদের উপর চাপানোর চেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। আমরা পরিষ্কার ভাষায় বলছি, ইসলাম ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের উপাসনালয়ে হামলা তো দূরের কথা ভিন্ন ধর্মের অনুসারীদের কটূক্তি করতেও নিষেধ করেছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মুসলমান-হিন্দুসহ অন্য ধর্মের অনুসারীদের মাঝে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে। যারাই নাসিরনগরের হামলার সঙ্গে জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জামিয়া ইউনুছিয়া মাদ্রাসার সিনিয়র শিক্ষক মাওলানা আব্দুর রহিম কাসেমী, মাও. সাজিদুর রহমান, মুফতি এনামুল হাসান, নাসিরনগর উপজেলা কওমি ওলামা পরিষদের সহসভাপতি মাওলানা মুখলেছুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবদুস সাত্তারসহ সংগঠনের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ এবং জেলার বিভিন্ন মাদ্রাসার শিক্ষকগণ উপস্থিত ছিলেন।
হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্যপরিষদ
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্যপরিদের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট রানা দাশগুপ্ত বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী সংসদ ও সংসদের বাইরে বারবার বলেছেন তার দল আগাছায় ভরে গেছে। বুধবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলা সদরে ক্ষতিগ্রস্ত হিন্দু সম্প্রদায়ের মন্দির ও ঘর-বাড়ি পরিদর্শনে এসে বলেন, ২০১২ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত দেশে যে সব ঘটনা ঘটেছে নাসিরনগরের ঘটনাটি তারই ধারাবাহিকতা বলে আমাদের কাছে দৃশ্যমান। পরে তিনি বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে এক সাংবাদিক সম্মেলনে দোষীদের গ্রেফতারের দাবি করে শুক্রবার সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশের ঘোষণা করেন।
মন্দির-বাড়ি-ঘরে হামলার প্রতিবাদে শাবিতে মানববন্ধন
শাবি সংবাদদাতা : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর এবং সুনামগঞ্জের ছাতকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মন্দির ও বাড়ি-ঘরে হামলার প্রতিবাদে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন ও সমাবেশের আয়োজন করেছে “সনাতন বিদ্যার্থী সংসদ” এবং “পূজা উদযাপন পরিষদ”। গতকাল বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ^বিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
ড. নারায়ণ সাহার সভাপতিত্বে ও সঞ্জয় চন্দের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ড. হিমাদ্রী শেখর রায়, ড.শরদিন্দু ভট্টাচার্য, পাবন সাহা প্রমুখ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন