শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বাড়ছে শিশু ধর্ষণ ও নির্যাতন

প্রকাশের সময় : ৩ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

এক সপ্তাহে ধর্ষণের শিকার ৫ বছরের শিশুসহ ১৪ জন ঢাকা মেডিক্যালে তরুণী ধর্ষণের অভিযোগে ৬ আনসার সদস্য প্রত্যাহার
উমর ফারুক আলহাদী : দেশে শিশু ধর্ষণের ঘটনা আশঙ্কাজন হারে বেড়েছে। ভয়ঙ্কর আকার ধারণ করছে শিশু ও নারী ধর্ষণ, হত্যা ও নির্যাতন। শুধু তাই নয়, ধর্ষণ করতে ব্যর্থ হয়ে বা কুপ্রস্তাবে রাজি না হলেই চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা ও আহত করা হচ্ছে স্কুল-কলেজ পড়–য়া তরুণীদের। সেই সাথে অহরহ ঘটছে গণধর্ষণের মতো অমানবিক ঘটনা। একের পর এক ঘটে যাচ্ছে গা শিউরে ওঠার মতো নৃশংস ঘটনা। নিজের পরিধানটা সম্পর্কেও বোঝার শক্তি হয়নিÑ ঘটনা পরম্পরায় এমন সব শিশুই শিকার হচ্ছে বেশি পাশবিকতার। ঘটে যাওয়া ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচার না হওয়ায় বাড়ছে শিশু ধর্ষণ। এসব ঘটনায় যথারীতি মামলা হচ্ছে, প্রতিবাদ বিক্ষোভও হচ্ছে। কিন্ত অধিকাংশ ঘটনাই কিছুদিন পর চাপা পড়ে যাচ্ছে। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতল সূত্র বলছে, গত এক সপ্তাহে ধর্ষণের শিকার হয়ে ১৪ জন শিশু-কিশোরী ওসিসিতে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এদের মধ্যে ৫ বছরের স্কুল ছাত্রীও আছে। চলতি বছর শুধু সেপেটেম্বর মাসে ৪৯ জন্য কিশোরী ও মহিলাকে হত্যা করা হয়েছে। ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে ৩৭৪টি। এমনটি জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতি। এছাড়া গত এক সপ্তাহে ধর্ষণের শিকার হয়ে দিনাজপুরের এক শিশু ও সাভারের এক কিশোরীসহ ১৪ জন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। দেশে উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে শিশু ধর্ষণ। এদিকে ঢাকা মেডিক্যালে এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে ৬ আনসার সদস্যকে গতকাল প্রত্যাহার করা হয়েছে।
দিনাজপুরের পার্বতীপুরে গত ১৮ অক্টোবর ধর্ষণের শিকার হয় পাঁচ বছরের এক শিশুকন্যা। পরদিন ভোরে গ্রামের লোকজন একটি হলুদ ক্ষেত থেকে অজ্ঞান অবস্থায় শিশুটিকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ভয়াবহ নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনায় যখন দেশজুড়ে তোলপাড় চলছে, এরই মধ্যে গত ২৯ অক্টোবর শনিবার রাজধানীর ভাটারায় ধর্ষিত হয় পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রী, ১ নভেম্বর সাভারে দলবেঁধে ধর্ষণ করা হয় ৯ বছরের এক শিশুকে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সমাজের চরম অবক্ষয়, বিচারহীনতার সংস্কৃতি, বিচার প্রক্রিয়ায় প্রতিবন্ধকতা, বিচারের দীর্ঘসূত্রতা, সামাজিক হেনস্থা ইত্যাদি কারণে ধর্ষণের ঘটনা বাড়ছে।
বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের তথ্য অনুযায়ী ২০১২ সালে ৮৬টি, ২০১৩ সালে ১৭৯টি, ২০১৪ সালে ১৯৯টি এবং ২০১৫ সালে ৫২১টি শিশু ধর্ষিত হয়। আর চলতি বছর জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৩২৫টি।
অপরাধ বিশেষজ্ঞ ও আইনজীবীরা বলছেন, দেশে বিচারহীনতার সংস্কৃতির কারণে অপরাধীরা দিন দিন বেপরোয়া হয়ে পড়ছে। অধিকাংশ ঘটনায় ধর্ষণকারী ও খুনিদের দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হচ্ছে না। বিচারকার্যের দীর্ঘ সূত্রতার জন্য ভিকটিম ও তাদের পরিবারেও হতাশার সৃষ্টি হচ্ছে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে বলা আছে, ১৮০ দিনের মধ্যে মামলা প্রক্রিয়া শেষ করতে হবে। কিন্তু এমন অনেক নজির আছে যে, বছরের পর বছর ধরে মামলা চলছে।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে তরুণীকে গণধর্ষণ
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগ এলাকায় ২০ বছরের এক তরুণীকে গণধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগের ভিত্তিতে ওই হাসপাতালের আনসার ক্যাম্পের ছয়জনকে গত মঙ্গলবার প্রত্যাহার করা হয়েছে। বর্তমানে তরুণীটি হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) চিকিৎসাধীন।
হাসপাতালে গতকাল ওই কিশোরীর ভাই জানান, তাঁদের বাড়ি কুমিল্লায়। তাঁর বোন কুমিল্লায় থাকতেন আর তিনি ঢাকায় থাকেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ফোন পেয়ে তিনি হাসপাতালে গিয়ে ঘটনা জানতে পারেন। মেয়েটির ভাইয়ের ভাষ্য, তাঁর বোন পড়াশোনায় ভালো ছিলেন। পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণিতে বৃত্তি পেয়েছেন। ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত তাঁর বোনের রোল নম্বর ১ ছিল। ওই সময় বাবার মৃত্যুর পর সপ্তম শ্রেণিতে ওঠার সময় বোনের রোল নম্বর হয় ৩, নবম শ্রেণি পর্যন্ত এই রোল নম্বরই থাকে। বাবার মৃত্যুশোক, ক্লাসে পিছিয়ে পড়া নিয়ে অন্যদের ব্যঙ্গ, সাইনাস-মাইগ্রেনের সমস্যা, সব মিলিয়ে বোনের কিছুটা মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। বোন কখনো ভালো থাকেন, আবার কখনো অসুস্থ হয়ে পড়েন। পাঁচ-ছয় দিন আগে বোন কুমিল্লার বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যান বলে ভাই দাবি করেন।
ওসিসির সমন্বয়কারী বিলকিস বেগম বলেন, গত ২৯ অক্টোবর রাতে হাসপাতালের গাইনি বিভাগে ভর্তি হন ওই কিশোরী। পরের দিন তাঁকে ওসিসিতে ভর্তি করা হয়। ভর্তির পরপরই ফরেনসিক ও কাউন্সিলিং পরীক্ষা করানো হয়েছে। এতে তাঁর সঙ্গে একাধিক ব্যক্তির যৌন সম্পর্ক স্থাপনের আলামত মিলেছে। পরীক্ষায় ধরা পড়েছে, মেয়েটির মানসিক সমস্যা আছে। তিনি কখনো সুস্থ থাকেন, আবার কখনো অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালের আনসার সদস্যরা তাঁর সঙ্গে এমনটি করেছেন বলে তিনি ওসিসির চিকিৎসকদের জানান। পরে তরুণীটির ভাইকে ফোন করে খবর দিয়ে হাসপাতালে আনা হয়।
ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক খাজা আবদুল গফুর বলেন, অভিযোগের কারণে ছয় আনসার সদস্যকে আনসার কর্তৃপক্ষ গতকাল প্রত্যাহার করেছে। এ ব্যাপারে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আলোচনার পর পদক্ষেপ নেবে। ডা. খাজা আবদুল গফুর আরো জানান, গত বছরের তুলনায় এবার শিশু কিশোরীসহ ধর্ষণের হার বেড়েছে। এবার শতকরা ২৫ ভাগ ধর্ষণের হার বেড়েছে বলে তিনি জানান।
ছয়জনকে প্রত্যাহার করার তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল আনসার ক্যাম্পের প্লাটুন কমান্ডার দেলোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, এক তরুণীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের অভিযোগে ছয় আনসার সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তারা হলেন সহকারী প্লাটুন কমান্ডার একরামুল এবং সদস্য আমিনুল, আতিকুল, মীর সিরাজ, মিনহাজ ও বাবুল মিয়া।
এ ব্যাপারে কোনো অভিযোগ করবেন কিনা, তা জানতে চাইলে তরুণীটির ভাই বলেন, তিনি ছোট চাকরি করেন। বোনকে চিকিৎসা করানোর সামর্থ্যই তাঁর নেই। তিনি নিজে থেকে অভিযোগ করতে চান না। কেউ যদি আইনি সহায়তা দেন, তিনি সেটা করবেন।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে সারা দেশে নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে ৩৭৪টি। এর মধ্যে ৪৯টি হত্যা, ১৩টি হত্যার চেষ্টা, ৩২টি উত্ত্যক্তের ঘটনা, উত্ত্যক্তের কারণে ৩টি আত্মহত্যার ঘটনা উল্লেখযোগ্য।
ধর্ষণ ও চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে আহত করার আলোচিত ঘটনা
চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে আহত করার এবং ধর্ষণের আলোচিত ঘটনাগুলো ধীরে ধীরে চাপা পরে যাচ্ছে। গত এক সপ্তাহে ১৪ শিশু ধর্ষণের শিকার হয়ে ঢাকা মেডিক্যালে ভর্তি হয়েছে। প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাহারের কারণে সিলেটি কলেজ ছাত্রী খাদিজা আক্তার নার্গিসকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে ছাত্রলীগ নেতা বদরুল। পুলিশ জানায়, গত ২৭ অক্টোবর রংপুর নগরীর ধাপ এলাকায় অবস্থিত নর্দান নার্সিং ইনস্টিটিউটের দ্বিতীয় বর্ষের দুই শিক্ষার্থী পার্শ্ববর্তী ধাপ সর্দ্দার পাড়া মহল্লার মেরাজ ছাত্রাবাসে তাদের দুই সহপাঠী নিমাই ও আলমগীরের সঙ্গে দেখা করে নোট সংগ্রহ করতে যান। এ সময় আলমগীর হোসেন ওই দুই নারী শিক্ষার্থীকে কৌশলে ছাত্রাবাসের ভেতরে ডেকে নিয়ে যায় ও নির্যাতন চালায়।
পরের দিন ঘটনাটি নার্সিং কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানানো হলে কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে বিষয়টি আপসরফা করে দেয়ার চেষ্টা করা হয়। পরে নার্সিং ইনস্টিটিউটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিষয়টি জানার পর মঙ্গলবার রাতে থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে ধর্ষণের শিকার দুই নারী শিক্ষার্থী ও ধর্ষণের ঘটনার নায়ক আলমগীর হোসেনকে থানায় নিয়ে আসে।
প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় সিলেট মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী খাদিজা বেগমকে গত ৩ অক্টোবর সিলেট মুরারী চাঁদ কলেজ ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে কুপিয়ে আহত করেন শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা বদরুল আলম। ৪ অক্টোবর থেকে খাদিজা স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ১৯ অক্টোবর মিরপুরে বিসিআইসি কলেজের ছাত্রীকে বখাটেরা মারধর করে। একই দিন সন্ধ্যায় মুন্সীগঞ্জের সিরাজদী খান এলাকায় দশম শ্রেণির ছাত্রী তাহমিনা জাহান আঁখিকে কুপিয়ে জখম করে দুর্বৃত্তরা। ২৩ অক্টোবর রাজধানীর দক্ষিণখানে অস্ত্রের মুখে পরিবারের সামনে এক কিশোরীকে ধর্ষণ করা হয়।
গত ২৪ আগস্ট রাজধানীর কাকরাইলে ছুরিকাঘাতে নিহত হয় উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলের শিক্ষার্থী সুরাইয়া আক্তার রিশা। হত্যাকারী যুবক ওবায়দুলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে তিনি বলেছেন, প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় রিশাকে তিনি ছুরিকাঘাত করেছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যারা নারী নির্যাতন বা কিশোরীদের উত্ত্যক্ত করে তারা তাদের পরিবার থেকে মূল্যবোধের শিক্ষা পায়নি। এ জন্য তারা এ ধরনের ঘটনা ঘটায়। যখন একটি ঘটনা ঘটে তখন সেটি অন্য একজন মানুষের মনের ওপর অপরাধ প্রবণতার প্রভাব ফেলে। এ জন্য ওই ব্যক্তিও হিংস্র হয়ে ওঠে। যার ফলে একই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে।
বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী পরিচালক সালমা আলী বলেন, ধর্ষণকারী এবং তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চত করতে হবে। এসব ঘটনার বিচার কার্যক্রম দ্রুত নিষ্পত্তি করার প্রয়োজন। সেই সাথে আইনের বিধি-বিধান অর্থাৎ কঠোর শাস্তির বিধান থাকার প্রয়োজন। তিনি আরো বলেন, যখন কোনো ঘটনা ঘটে তখন সেটি যাতে বারবার না ঘটে সে জন্য কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। তিনি বলেন, বেশ কয়েক বছর আগে দেশে এসিড সন্ত্রাসের মাত্রা ভয়ঙ্কর রূপ নিয়েছিল, যদিও এটি সামাজিকভাবে প্রতিহত করা অনেকখানি সম্ভব হয়েছে। তখন আমরা একটা বিষয় লক্ষ করেছি যে, একটা জায়গায় এসিড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটার সাথে সাথে সারা দেশে এর প্রভাব পড়েছিল। কিশোরী বা তরুণীর প্রতি হিং¯্র অপরাধের ক্ষেত্রে সবাই এসিড ব্যবহার করত। এসিডের ব্যবহারের ওপর যখন নিষেধাজ্ঞা আনা হয় তখন অপরাধীরা অন্য পন্থা অবলম্বন করে। এখন তারা চাপাতি ব্যবহার করছে। চাপাতি বা ছোরা সহজে পাওয়া যায়, দামও কম, বহনেও ঝামেলা নেই। তাই তারা অপরাধ করতে চাপাতি বেশি ব্যবহার করছে। চাপাতির ওপরও নিষেধাজ্ঞা আনা প্রয়োজন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগে ইভটিজিং বা মেয়েদের উত্ত্যক্ত করার ক্ষেত্রে ধরনটা ছিল প্রাথমিক অবস্থায় ভয় দেখানো, নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে খারাপ ইঙ্গিত দেয়া। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ছিল মেয়েদের চুলের আগা বা বেণির আগা কেটে নেয়া বা ওড়না টেনে নেয়া। সর্বশেষ ছিল এসিড নিক্ষেপ যা এখনো আছে। বর্তমানে ছুরি বা চাপাতি দিয়ে হামলার মতো ঘটনা ঘটছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন