চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে সূর্যমুখী তেলের আড়ালে তরল কোকেন পাচারের ঘটনায় চোরাচালান আইনে মামলায় ১০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার শুরু হয়েছে। আদালত আগামী ২ মার্চ প্রথম সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেছেন। গতকাল সোমবার চট্টগ্রামের চতুর্থ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ শরীফুল ইসলাম ভূঁইয়া অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর এ আদেশ দেন।
চট্টগ্রাম মহানগর পিপি মো. ফখরুদ্দিন চৌধুরী জানান, মামলার ১০ আসামির মধ্যে পাঁচজন পলাতক আছেন। হাজতে থাকা তিনজন এবং জামিনে থাকা দু’জন অভিযোগ গঠনের শুনানিতে হাজির ছিলেন। তারা মামলা থেকে অব্যাহতির আবেদন করলেও আদালত নামঞ্জুর করেন। আদালত ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫ (বি) ও (ডি) ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।
এদিকে একই ঘটনায় দায়ের মাদক আইনের মামলায় ওই আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে। সোমবার ২২তম আসামির সাক্ষ্যগ্রহণের পর আদালত ২ মার্চ পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেছেন। পিপি ফখরুদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন, গত সোমবার মাদক আইনের মামলায় বিচারিক হাকিম মো. ফরিদুল আলম সাক্ষ্য দিয়েছেন। তিনি চট্টগ্রাম মহানগর আদালতে হাকিম হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় এ মামলার তিন আসামির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি গ্রহণ করেছিলেন।
২০২০ সালের ২৯ জুন ১০ জনকে অভিযুক্ত করে ওই মামলায় অভিযোগপত্র জমা দিয়েছিল পুলিশ। অভিযুক্তরা হলেন- আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রামের খানজাহান আলী লিমিটেডের চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ ও তার ভাই মোস্তাক আহম্মদ, কসকো-বাংলাদেশ শিপিং লাইনসের ব্যবস্থাপক এ কে এম আজাদ, সিকিউরিটিজ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা মেহেদী আলম, সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম, আবাসন ব্যবসায়ী মোস্তফা কামাল, প্রাইম হ্যাচারির ব্যবস্থাপক গোলাম মোস্তফা সোহেল, পোশাক রফতানিকারক প্রতিষ্ঠান মণ্ডল গ্রুপের বাণিজ্যিক নির্বাহী আতিকুর রহমান, লন্ডনপ্রবাসী চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জের ফজলুর রহমান ও মৌলভীবাজারের বকুল মিয়া।
এদের মধ্যে গোলাম মোস্তফা সোহেল, মোস্তফা কামাল ও আতিকুর রহমান কারাগারে আছেন। জামিনে আছেন সাইফুল ইসলাম ও একেএম আজাদ। নুর মোহাম্মদ, ফজলুর রহমান, বকুল মিয়া, মোস্তাক আহমেদ ও মেহেদী আলম পলাতক আছেন। ২০১৫ সালের ৬ জুন কোকেন সন্দেহে চট্টগ্রাম বন্দরে সূর্যমুখী তেলের চালান জব্দ করে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিফতর। এরপর ২৭ জুন তেলের চালানের ১০৭টি ড্রামের মধ্যে একটির নমুনায় কোকেন শনাক্ত হয়। বলিভিয়া থেকে আসা চালানটির প্রতিটি ড্রামে ১৮৫ কেজি করে সূর্যমুখী তেল ছিল।
পরে সিআইডি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের রাসায়নিক পরীক্ষাগারসহ চারটি পরীক্ষাগারে তেলের চালানের দুটি ড্রামের নমুনায় কোকেন শনাক্ত হয়। চালানটি উরুগুয়ের মন্টিভিডিও থেকে জাহাজীকরণ করা হয়েছিল। পরে তা সিঙ্গাপুর হয়ে চট্টগ্রাম বন্দরে আসে। এটি চট্টগ্রাম বন্দর থেকে অন্য একটি দেশে পুনঃরফতানির পরিকল্পনা ছিল।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন