বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) অধ্যয়নরত নেপালি শিক্ষার্থীর উপর চড়াও হওয়ার অভিযোগ উঠেছে শাহজালাল হল শাখা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে। গত মঙ্গলবার রাত দশটার দিকে শাহজালাল হলে নেপালি শিক্ষার্থীদের রুমে অতিরিক্ত একজন শিক্ষার্থী ওঠানোকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ নেতারা তাদের গালিগালাজসহ মারধর করতে চায় বলে অভিযোগ করেছেন ওই শিক্ষার্থীরা। এছাড়া বিভিন্ন সময় ছাত্রলীগের দ্বারা তাদের হয়রানির শিকার হতে হয় বলেও অভিযোগ করেছেন। কিন্তু এক্ষেত্রে এখন পর্যন্ত প্রশাসনের কোনো সাহায্য পাননি বলেও জানান তারা।
লিখিত অভিযোগে তারা জানান, হলের সি-ব্লকের ২১২নং রুমে তিনজন নেপালি শিক্ষার্থী থাকেন। ওই তিনজনের রুমে অতিরিক্ত একজনকে তোলার জন্যে হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল হাসান শাকিল এবং বাকৃবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য এনায়েত শাকিলসহ প্রায় ২০ জন নেতাকর্মী ওই নেপালি শিক্ষার্থীদেরকে চাপ প্রয়োগ করে। কিন্তু ওই সময় রুমে উপস্থিত ছিলেন রবি যাদব নামের ভেটেরিনারি অনুষদের ৩য় বর্ষের একজন নেপালি শিক্ষার্থী। সে ছাত্রলীগের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এক পর্যায়ে বাকবিতণ্ডায় জড়ায় তারা। এরপর নেতাকর্মীরা অশ্রাব্য গালিগালাজ করতে থাকে এবং এক পর্যায়ে নাজমুল হাসান শাকিল জুতো দিয়ে রবি যাদবকে মারধর করতে উদ্যত হন।
অভিযোগকারী শিক্ষার্থীরা আরও জানান, ওই রাতেই পরে আমরা প্রভোস্টকে বিষয়টি জানালেও প্রভোস্ট এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। এছাড়া আমরা এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে অভিযোগ করেও কোনো সহযোগিতা পাইনি। এর আগেও বিভিন্ন সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আমাদের সাথে খারাপ আচরণ করে আসছিল। আমরা এখানে পড়াশোনা করার জন্যে এসেছি। কারো সাথে আমাদের কোনো ঝামেলা নেই। কিন্তু মাঝে মাঝে ছাত্রলীগের দ্বারা হয়রানির শিকার হতে হয়। এমতাবস্থায় আমাদের নিরাপত্তা শঙ্কা দেখা দিয়েছে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে এ ঘটনার সঠিক বিচার দাবি করছি।
নাজমুল হাসান শাকিল তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এটি সম্পূর্ণ মিথ্যা এবং ভিত্তিহীন কথা। আমাদের হলে তিনটি ব্লকে সংস্কার কাজ চলছে। রবি যাদব গত তিনমাস ধরে তার রুমে একা থাকতেন। আমি বলেছিলাম তাকে যে, সংস্কার কাজ চলা পর্যন্ত তুমি তোমার রুমে আরও একজনকে নিয়ে থাকো। কিন্তু সে এখানে অপারগতা প্রকাশ করে। পরবর্তীতে সে গ্রাজুয়েট ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (জিটিআই) থেকে ২ জন বিদেশি (নেপালি) শিক্ষার্থীকে রুমে তুলে নেয়। সে যদি আগেই বলতো যে তার রুমে বিদেশী শিক্ষার্থী তুলবে তাহলে আমি জোর করতাম না। পরবর্তীতে বিষয়টি হলের প্রভোস্ট মীমাংসা করে দেয়। শাহজালাল হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক কামরুল হাছান বলেন, ঘটনাটি জানার পর আমি গতকাল সকালে হলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে বিষয়টি মীমাংসা করে দিয়েছি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন