সম্ভাবনাময় মালয়েশিয়ার শ্রমবাজারে আমিন নূর ও বায়রার সাবেক মহাসচিব রুহুল আমিন স্বপনের নেতৃত্বে ২৫ সিন্ডিকেট গড়ে উঠছে। বাংলাদেশের সুনাম অক্ষুণ্ন এবং দেড় সহস্রাধিক বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির রুটিরুজি ও গরিবকর্মীদের স্বার্থে প্রয়োজনে রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে কথিত ২৫ সিন্ডিকেটকে প্রতিরোধ করা হবে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর বিগত ১৯ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের মাধ্যমে পুনরায় বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রফতানির সুবর্ণ সুযোগ তৈরি হয়েছে। উল্লেখিত, চুক্তিতে কর্মী প্রেরণে কোনো সিন্ডিকেটের কথা উল্লেখ নেই। সকল বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির সুযোগ রেখেই দেশটিতে কর্মী প্রেরণের প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। এতে শ্রমবাজারে নৈরাজ্য দুর্নীতি ও অনিয়ম বন্ধ হবে এবং স্বল্প অভিবাসন ব্যয়ে কর্মী যাওয়ার সুযোগ হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের বলরুমে মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রেরণে সরকারের সিন্ডিকেটবিরোধী অবস্থানকে সমর্থন এবং সকল বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির জন্য শ্রমবাজার উন্মুক্তের দাবিতে বায়রার সদস্যবৃন্দ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বায়রার সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ আবুল বাশার। এতে আরো বক্তব্য রাখেন, সংগঠনটির সাবেক সভাপতি মো. নূর আলী, সাবেক মহাসচিব আলী হায়দার চৌধুরী, শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান, ড্রামস এর সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা হোসেন ও ফোরাব সভাপতি আব্দুল আলিম।
সংবাদ সম্মেলনে মালয়েশিয়া থেকে ভার্চুয়ালি অংশ নেন ন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন অব প্রাইভেট অ্যামপ্লয়মেন্ট এজেন্সিজ মালয়েশিয়ার সেক্রেটারি জেনারেল ড. সুকুমারান নাইর, সংগঠনের প্রেসিডেন্ট দাতো মেগাট ফাইরোজ বিন তান শ্রী দাতো মেগাট জুনাইদ ও ডেপুটি প্রেসিডেন্ট দাতে কৃষ ফু।
মালয়েশিয়ার নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগে মালয়েশিয়ার নিয়োগকারীরা কোনো সিন্ডিকেট বা মনোপলী ব্যবসা চায় না। তারা বলেন, ১৪টি সোর্স কান্ট্রি থেকে যে প্রক্রিয়ায় কর্মী মালয়েশিয়া যাচ্ছে বাংলাদেশ থেকেও একই প্রক্রিয়ায় কর্মী যাক এটা মালযেশিয়ার জনগণের প্রত্যাশা। মালয় নেতৃবৃন্দ বলেন, উভয় দেশের বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমেই মালয়েশিয়ায় কর্মী যেতে হবে। দেশটির নিযোগকর্তারা কোনো সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কর্মী নিতে আগ্রহী নন। মালয়েশিয়ায় স্বল্প অভিবাসন ব্যয়ে কর্মী আসুক এবং সকল অভিবাসী কর্মীদের স্বার্থ রক্ষায় আন্তর্জাতিক শ্রম আইন ও দেশীয় শ্রমআইন অনুসরণের মাধ্যমে কর্মীদের স্বার্থ রক্ষায় সজাগ দৃষ্টি রাখা হবে বলেও মালয় নেতৃবৃন্দ উল্লেখ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বায়রার সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি ও রাফার সভাপতি আবুল বারাকাত ভূঁইয়া, সাবেক অর্থ সচিব মো. ফখরুল ইসলাম, বায়রার সাবেক ইসি সদস্য মোহাম্মদ আলী, বায়রা সচেতন পরিষদের আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেন, রিক্রুটিং এজেন্সিজ ঐক্যপরিষদের সভাপতি এম টিপু সুলতান, মহাসচিব আরিফুর রহমান, সাংগঠনেক সম্পাদক মো. সাইফুল ইসলাম, রাফার মহাসচিব ফরিদ আহমদ, রাফা ঢাকা দক্ষিণের মহাসচিব ও আমান এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. রফিকুল ইসলাম পাটওয়ারী, এনএসি ইন্টারন্যাশনালের ম্যানেজিং পার্টনার আব্দুর রকিব মুকুল, সায়মন ওভারসীজের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ ইসহাক ও সার্ভ ট্যুর ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী মো. শরিউল ইসলাম রাজু।
সংবাদ সম্মেলনে বায়রার সাবেক সভাপতি মো. নূর আলী বলেন, মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার চালু করতে করাপশন কোন পর্যায়ে গেছে বুঝতে পারবেন কথিত ২৫ সিন্ডিকেটের অনেকেই এ যাবত একজন কর্মীকেও বিদেশে পাঠায়নি। তিনি বলেন, মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশ সমঝোতা স্মারকের কোথাও ২৫ সিন্ডিকেটের কথা উল্লেখ নেই। বিগত দিনে দশ সিন্ডিকেট অন্যায় দুর্নীতির মাধ্যমে কর্মী পাঠিয়েছে। তাদের সাথে থেকে ওই সময়ে আমিও প্রতারণার শিকার হয়েছি। এবার ২৫ সিন্ডিকেট হলে কর্মী প্রেরণে পুনরায় দুর্নীতি হবে এবং অভিবাসন ব্যয় অনেক বাড়বে। সিন্ডিকেট হলে আইনের আশ্রয় নিবেন কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে নূর আলী বলেন, মালয়েশিয়ায় সিন্ডিকেট হলে আইনের আশ্রয় নিতে কোর্টে যাওয়ার প্রয়োজন হবে না। কারণ সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান ভালো। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রী ১৫শ’ বৈধ রিক্রুটিং এজেন্সির পক্ষে।
২৫ সিন্ডিকের্টে তালিকা পেয়েছেন কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে আবুল বাশার বলেন, মালয়েশিয়ার আমিন নূর ও তার বাংলাদেশি প্রেতাত্মা বায়রার সাবেক মহাসচিব রুহুল আমিন স্বপন ২৫ সিন্ডিকেটের নেতৃত্ব দিচ্ছে। তিনি ২৫ সিন্ডিকেটের মালিকদের আইনের আওতায় এনে বিচার এবং লাইসেন্স বাতিলের দাবি জানিয়ে বলেন, প্রয়োজনে রাজপথে কঠোর আন্দোলনের মাধ্যমে সিন্ডিকেট চক্রকে প্রতিহত করা হবে ইন শা আল্লাহ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন