বুধবার ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১, ০৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব ১৩ জানুয়ারি, দ্বিতীয় পর্ব ২০ জানুয়ারি শুরু

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় শতভাগ নিরাপদ : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ৪ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকজন শতভাগ নিরাপদ। তারপরও এ ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে  আরো সজাগ থাকতে হবে। তিনি বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঘটনা অনাকাক্সিক্ষত। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়েছে, তারা আরো বেশি তৎপর হতে পারত।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত আসন্ন বিশ্ব ইজতেমায় আগত বিদেশী মেহমানদের নিরাপত্তাসংক্রান্ত এক বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।
সচিবালয়ে বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, টঙ্গীর তুরাগ তীরে চলতি বছরের ইজতেমার প্রথম পর্ব শুরু হবে আগামী ১৩ জানুয়ারি। ১৫ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এই পর্ব। আর ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব শুরু হবে ২০ জানুয়ারি। দুই দিন পর  শেষ হবে পুরো আয়োজন।
মন্ত্রী বলেন, ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে একটি বিশেষ টিম ওই এলাকা পরিদর্শন করেছে। একই সঙ্গে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের সদস্যরাও সেখানে গেছেন।
তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিতদের কোথাও কোনো গ্যাপ ছিল না। তারপরও তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা হিসেবে স্থনীয় থানার ওসিকে প্রত্যাহার করেছি, অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কাজ চলছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নেয়া বিদেশী মুসল্লিদের বিষয়ে এবার বিশেষভাবে সতর্ক থাকবে সরকার। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আইএস অধ্যুষিত  দেশগুলো থেকে সন্দেহভাজন কেউ যেন বিশ্ব ইজতেমায় অংশ  নেয়ার নাম করে বাংলাদেশে আসতে না পারে সে জন্য থাকবে নজরদারি।
তিনি অবশ্য আইএস অধ্যুষিত কোনো দেশের নাম উল্লেখ না করে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের কথা বলেছেন। বর্তমানে ইরাক ও সিরিয়ায় আইএসের উত্থান ও তাদের দমনের চেষ্টায় গৃহযুদ্ধ চলছে দেশ দু’টিতে। এছাড়া জঙ্গি তৎপরতার কারণে ইয়েমেন, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, নাইজেরিয়া, সোমালিয়াতেও যুদ্ধাবস্থা চলছে। এ ছাড়াও আইএস সক্রিয় ইউরোপ, আফ্রিকা, এশিয়ার বিভিন্ন  দেশেও। বৈঠকে অংশগ্রহণকারী একাধিক ব্যক্তি জানান, দেশীয় জঙ্গিদের আন্তর্জাতিক সম্পৃক্ততার কথা এর আগেও গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। এ অবস্থায় ইজতেমায় অংশ নেয়ার নাম কের এসব দেশ থেকে জঙ্গি সম্পৃক্ত কেউ বাংলাদেশে আসার চেষ্টা করতে পারে বলে আশঙ্কার কথা আলোচনা হয় বৈঠকে। এ কারণেই সতর্কতা থাকার কথা বলেন আইনশৃঙ্খলা ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা। বৈঠকে অংশ নেয়া একজন বলেন, গত ১ জুলাই হলি আর্টিজান বেকারিকে জঙ্গি হামলার পর দেশের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে কোনো রকমের ছাড় দেয়ার সুযোগ  নেই। এ কারণে ইজতেমা নিয়েও সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার কথা হয়  বৈঠকে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে যাতে অনাকাক্সিক্ষত কেউ ঢুকতে না পারে  সেজন্য যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশগুলোর যেসব মুসল্লি ইজতেমায় যোগ  দেবেন তাদের তালিকা দেখে বিমানবন্দর থেকে ঢুকতে দেয়া হবে। সংশ্লিষ্ট দেশের তাবলিগ জামাতের পক্ষ থেকে এসব মুসল্লির তালিকা পাঠাবে। এই তালিকার বাইরে যেন কেউ আসতে না পারে, সেই বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে।’ বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর স্পেশাল ব্রাঞ্চ ও তাবলিগ জামাতের সমন্বয়ে অভ্যর্থনা ডেস্ক গঠন করা হবে বলেও জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি জানান, ইজতেমায় আসা বিদেশীদের অনঅ্যারাইভাল ভিসা  দেয়া হবে। বৈঠকে জানানো হয়, গত বছর বিশ্বের ১০১টি দেশ  থেকে ১০ হাজারেরও বেশি মুসল্লি বাংলাদেশে এসেছিল। এবার এ সংখ্যা আরো বাড়তে পারে।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র সচিব ড. মোজাম্মেল হক খান, আইজিপি কে এম শহিদুল হক, র‌্যাবের মহাপরিচালক বেনজির আহমেদ, ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন