রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

৩২ হাজার ২১৯ কোটি টাকা চায় পেট্রোবাংলা

এলএনজি আমদানি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০৯ এএম

আন্তর্জাতিক বাজারে দর বৃদ্ধিতে বিপাকে পড়েছে পেট্রোবাংলা। এলএনজি আমদানিতে বিপুল ভর্তুকি প্রয়োজন হলেও চাহিদা মাফিক অর্থ পাচ্ছে না প্রতিষ্ঠানটি। তাই তরল প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানি করতে নতুন করে ৩২ হাজার ২১৯ কোটি টাকা চায় পেট্রোবাংলা। ইতোমধ্যে অর্থ বিভাগের কাছে এ বিষয়ে একটি চিঠিও দিয়েছে জ্বালানি বিভাগ। যদিও এর সুরাহা হয়েছে বলে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

পেট্রোবাংলা সূত্র জানায়, স্পট মার্কেটে এলএনজির দাম বেড়ে যাওয়াতে প্রতি এমএম বিটিইউ (ব্রিটিশ থার্মাল ইউনিট) এলএনজি ৪৫ ডলারেও কিনতে হয়েছে। এছাড়া চুক্তি অনুযায়ী কাতার এবং ওমান থেকে যে এলএনজি কেনা হচ্ছে সেখানেও তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে দাম কিছুটা বেড়েছে। ফলে দরকার হচ্ছে বাড়তি অর্থের। যা সামাল দেওয়া পেট্রোবাংলার জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। সঙ্গত কারণে সরকারের কাছে চাওয়া হচ্ছে ভর্তুকি।
জ্বালানি বিভাগের একজন কর্মকর্তা বলেন, সরকারের একার পক্ষে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকির চাপ নেওয়া কঠিন। এজন্য গ্যাসের দাম সমন্বয় করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) গ্যাসের দাম সমন্বয়ের জন্য গণশুনানির দিন নির্ধারণ করেছে। আগামী ২১ মার্চ থেকে চার দিনব্যাপী এই শুনানি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

পেট্রোবাংলার অপর এক কর্মকর্তা বলেন, বড় অর্থনীতির কয়েকটি দেশ করোনার মধ্যে এলএনজির দাম পড়ে গেলে অগ্রিম এলএনজি কিনে রাখে। এতেও বাজারে প্রভাব পড়েছে। তবে দাম এতটা বেড়ে যাবে তা কেউ ভাবেনি। তিনি আরও বলেন, আমাদের মতো উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলো সবচেয়ে বেশি সংকটে পড়েছে।
দেশে এখন দুটি এলএনজি টার্মিনাল রয়েছে। যার মাধ্যমে দিনে এক হাজার মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি সরবরাহ সম্ভব। তবে সামিটের এলএনজি টার্মিনালটি যান্ত্রিক কারণে বন্ধ থাকাতে এলএনজির সরবরাহ এখন অর্ধেকে নেমে এসেছে। গতকালও ৫৫০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি সরবরাহ করা হয়েছে। স্বল্প সময়ের মধ্যে সামিটের এলএনজি টার্মিনালটিও সচল হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর ফলে দেশে এলএনজি আমাদনি বাড়াতে হবে।

মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, মার্চ থেকেই দেশে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়বে। এক দিকে গ্রীষ্ম, অন্যদিকে সেচ। এতে গ্যাসের চাহিদা বেড়ে গেলে এলএনজি সরবরাহ বাড়ানো ছাড়া উপায় থাকবে না। ফলে দাম যতই হোক, আমদানি করতেই হবে। দেশে এখন খনি থেকে ২৩০৬ মিলিয়ন ঘনফুট প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে।

পেট্রোবাংলা বলছে, এখন বিদ্যুৎ উৎপাদনে প্রতিদিন ২২৫২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ করা হচ্ছে ৭৬৪ মিলিয়ন ঘনফুট। গ্রীষ্মকে লোডশেডিং মুক্ত রাখতে হলে এই সরবরাহ অন্তত ৫০০ মিলিয়ন ঘনফুট বাড়তে হবে।

এছাড়া সার উৎপাদনে দিনে ৩১৬ মিলিয়ন ঘনফুট চাহিদার বিপরীতে সরবরাহ করা হচ্ছে ১৪৯ মিলিয়ন ঘনফুট। গ্রীষ্মে বিদ্যুৎ চাহিদা সামাল দিতে সরকার সাধারণত সার কারখানা বন্ধ করে বিদ্যুৎ উৎপাদনে গ্যাস সরবরাহ করে। এবারও সেই পথে হাঁটলে বাড়তি আরও ৩৫০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজির সরবরাহ বাড়াতে হবে। বলা হচ্ছে এ কারণে ৩২ হাজার ২১৯ কোটি টাকার মোটা অঙ্কের চাহিদা দিয়েছে পেট্রোবাংলা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন