শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ইসলামী জীবন

আত্মহত্যা কোনো সমস্যার সমাধান নয়

মোহাম্মদ মোস্তাকিম হোসাইন | প্রকাশের সময় : ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০৬ এএম

কয়েকদিন যাবত পত্রপত্রিকা ও ফেসবুকে সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা হচ্ছে বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আবু মহসিন খান ফেসবুক লাইভে এসে আত্মহত্যার দৃশ্যটি যা গোটা দেশে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। তিনি ফেসবুক লাইভে এসে বলেন যে আমরা যা ইনকাম করি তার ২০% সম্পদ নিজের জন্য ব্যবহার করতে পারি না। তিনি জীবনের নানা হতাশাও দুঃখের কথা তুলে ধরে নিজের লাইসেন্স করা পিস্তল দিয়ে নিজেই আত্মহত্যা করেন যা মুহূর্তের মধ্যেই ভাইরাল হয় গোটা বিশ্বে। তিনি জীবনে অনেক অর্থ উপার্জন করেছেন কিন্তু শেষ বয়সে অনেক লোক তার সঙ্গে প্রতারণা করেছে ।বিশেষ করে তার বিবাহিত স্ত্রী তার পাশে নেই , সন্তানেরা তার সাথে নেই। একাকীত্ব জীবনে অত্যন্ত কষ্ট ও হতাশার বার্তা দিয়ে শেষ করলেন নিজের অমূল্য জীবনকে।
মানুষ কতটা অসহায় কতটা দুর্বল হলে বেঁচে থাকার পরিবর্তে মরে যেতে চায় সেটা আমরা জানি না তবে একটি কথা নির্দ্বিধায় বলা যায় ধর্মীয় অনুভূতি থেকে সরে আসল এই এই পথ বেছে নেওয়ার সহজ হয় একজন ধার্মিক আল্লাহ ভীরু মানুষ যত কষ্টে থাকুক না কেন সে অন্তত আত্মহত্যা করবে না বরং মহাবিপদে ধৈর্য ধারণ করবে ভরসা রাখবি আল্লাহর উপর কারণ দুনিয়ার চাইতে আখেরাতের জীবন অত্যন্ত ভয়াবহ এবং কঠিন কোরআন এবং হাদীস থেকে আমরা জানতে পারি। সুপ্রিয় পাঠক একজন মানুষ যে কারণে আত্মহত্যা করে তার প্রধান কারণই হচ্ছে হতাশা আর হতাশা আর প্রধান কারণই হচ্ছে কোরআন সুন্নাহর জ্ঞান উপলব্ধি করতে না পারা আত্মহত্যা মানে নিজেকে নিজেই ধ্বংস করা নিজ আত্মাকে চরম যন্ত্রণা ও কষ্ট দেয়া।
ইসলামী দর্শনে আত্মহত্যা মহাপাপ কবিরা গুনা যদিও ইসলামী শরীয়তে আত্মহত্যাকারীর জানাজা করতে হয় তবে মহানবী (সা.) কখনো নিজে আত্মহত্যাকারীর জানাজা পড়ান নি। গবেষণায় দেখা যায় মানুষ বিভিন্ন কারণে আত্মহত্যা করে থাকে তন্মধ্যে : ১. সাংসারিক কলহ। ২. অতিরিক্ত রাগ। ৩. কোন কিছু থেকে বঞ্চিত হওয়ার দুঃখ। ৪. প্রেমে ব্যর্থ। ৫. বেকারত্ব। ৬. লজ্জা ও মানহানি থেকে রক্ষা পাওয়া। ৭. মনোমালিন্য। ৮. প্রচন্ড অসুস্থ ও ব্যথা। ৯. গোপন তথ্য প্রকাশের ভয়। ১০. অভাব-অনটন.ইত্যাদি ইত্যাদি
এসবের একটি বা একাধিক কারণে জ্ঞান বুদ্ধি নোট ৫ লোপ পায় নিজেকে অসহায় ও ভারসাম্যহীন মনে হয় তখনই একজন বনী-আদম আত্মহত্যার মতো জঘন্য পথ বেছে নেয়। যা ইসলামী শরীয়তে জঘন্য অপরাধ ও মহাপাপ অথচ আল্লাহ সুবহানাহু তাআলা এবং মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বহু জায়গায় আত্মহত্যা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন তোমরা নিজেদেরকে ধ্বংসের মধ্যে ঠেলে দিও না । (সুরা বাকারা : আয়াত ১৯৫)।
হাদীস শরীফে এসেছে হযরত আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন যে ব্যক্তি পাহাড় থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করবে সে জাহান্নামে অনুরূপভাবে আত্মহত্যা করতে থাকবে যা চিরকাল স্থায়ী থাকবে যে ব্যক্তি বিষপানে আত্মহত্যা করবে জাহান্নামে সে সর্বদা বিষপান করতে থাকবে এটি তার স্থায়ী বাসস্থান আর যে ব্যক্তি অস্ত্র দিয়ে আত্মহত্যা করবে সে জাহান্নামী অস্ত্র দিয়ে তার পেটে ঢুকাতে থাকবে আর সেখানে স্থায়ীভাবে থাকবে সে বোখারী ও মুসলিম। অর্থাৎ দুনিয়াতে যে যেভাবে আত্মহত্যা করবে জাহান্নামে তাকে সেভাবে শাস্তি দেওয়া হবে অনন্তকাল।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন