বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ২৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বগুড়ার পল্লীতে ফিরছে ক্ষুদ্র তাঁত শিল্পের প্রাণ

নারী হচ্ছেন স্বাবলম্বী : নেপথ্যে জামানতবিহীন ঋণ

মহসিন রাজু, বগুড়া থেকে | প্রকাশের সময় : ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০২ এএম

বগুড়ার কাহালু উপজেলার কাহালু সদরের জয়তুন গ্রামে ধীরে ধীরে পুনর্জন্ম হচ্ছে প্রায় বিলুপ্ত হওয়া ক্ষুদ্র তাঁত শিল্প। নিভৃত পল্লীর কুটিরেই ছোট ছোট তাঁতে দক্ষতার সাথে নারীরা তৈরি করছেন গামছা, চাদর ও পাপোষ। পাশ্ববর্তী আদমদীঘি উপজেলার শাঁওল বাজারে সেসব বিক্রি করে ঋণের কিস্তি পরিশোধ করে হাতে জমছে নগদ টাকা। সে টাকায় সংসারের চাকা সচল হয়ে দূর হচ্ছে অভাব নামক শব্দ।
মৃত প্রায় তাঁত ফিরে আসার খবর পেয়ে সরেজমিনে বগুড়ার কাহালু উপজেলার সদর ইউনিয়নের জয়তুল গ্রামে গেলে জুলেখা বেগমের সাথে দেখা হয়। তিনি জানালেন, আদিকাল থেকেই এই এলাকায় ছোট ছোট তাঁতে কাপড় বোনার প্রচলন ছিলো। তবে মাঝখানে টেক্সটাইল প্রডাক্টের সাথে পুঁজি ও কোয়ালিটির লড়াইয়ে পেরে উঠতে না পেরে
এলাকার লোকজন পূর্ব পুরুষের পেশা ভুলতে বসেছিলো। তবে সম্প্রতি ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশন নামের একটি সংস্থার কর্মকর্তারা জামানতবিহীন ঋণ প্রস্তাব নিয়ে তাদের কাছে আসলে তারা তাঁত বস্ত্র উৎপাদনে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। শুরু করেন উৎপাদন কার্যক্রম।
এ ব্যাপারে সরকারি সংস্থা ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের (এসএফডিএফ) সিনিয়র উপ-আঞ্চলিক ব্যাবস্থাপক মো. আতোয়ার রহমান জানান, জাতির পিতা এই সংস্থার মাধ্যমেই ১৯৭৫ সালে সর্বপ্রথম জামানতবিহীন ঋণ কার্যক্রম চালু করে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হন।
মূলত বঙ্গবন্ধুর আদর্শিক চেতনা থেকেই তারা মানুষকে বিনা জামানতে গ্রামীণ উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা করে চলেছেন। সংস্থার সিনিয়র মাঠ কর্মী আব্দুর রহমানের সুপারিশে জয়তুল গ্রামের জুলেখা বেগমকে ৫০ হাজার টাকা এবং আসিয়া বেগমকে এক লাখ টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে।
এই দুই জন ছাড়াও ঋণ সহায়তা আরও বেশ কয়েকজনকে দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, জামানতবিহীন ঋণের পাশাপাশি এবার করোনাকালীন প্রণোদনা প্যাকেজ সহায়তা হিসেবে পুরো কাহালু উপজেলার তাদের তালিকাভুক্ত ৪২ জন উদ্যোক্তার মধ্যে ৬২ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে।
অফিস রেকর্ড মোতাবেক উদ্যোক্তারা সবাই নিয়মিত কিস্তি পরিশোধ করে চলেছেন। তিনি জানান, ক্ষুদ্র্র তাঁত পরিচালনায় বাড়ির মেয়েরাই শ্রমিকের কাজ করে। অন্যদিকে বাড়ির পুরুষ সদস্যরা হাট থেকে সুতাসহ অন্যান্য সামগ্রী কিনে আনেন। আর তৈরি পাপোষ-চাদর-গামছা ইত্যাদি সেলিং পয়েন্ট বা বিক্রয় কেন্দ্রগুলোতে নিয়ে যাওয়ায় নিশ্চিতভাবেই নারী উদ্যোক্তারা লাভবান ও স্বনির্ভর হচ্ছেন।
এসএফডিএফের জামানতবিহীন ঋণ সহায়তা যে শুধু তাঁত শিল্পে তা কিন্তু নয়। বরং কৃষি, মৎস্য চাষ, পশু পালন, বসতভিটায় বাগান তৈরি হাঁস-মুরগি পালনসহ সব ধরনের আয় বৃদ্ধি হয় এমন প্রকল্প বাস্তবায়নে নেপথ্যের কুশীলবের ভূমিকা পালন করে চলেছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন