রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

সউদী জোটে যাওয়া নিয়ে মন্ত্রিসভায় অনানুষ্ঠানিক আলোচনা

প্রকাশের সময় : ১৯ জানুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : সউদী আরবের নেতৃত্বাধীন সন্ত্রাসবিরোধী জোটে বাংলাদেশের অংশ নেয়া প্রসঙ্গে মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনানুষ্ঠানিক আলোচনা হয়েছে। এ আলোচনার সূত্রপাত করেন জনপ্রশাসন মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। তিনি এ বিষয়ে সরকারের অবস্থান জানতে চান। তিনি জানতে চেয়েছেন এটা সামরিক জোট কিনা? সৈয়দ আশরাফ বলেন, এ ধরনের জোটে যেতে হলে তা জাতীয় সংসদে অনুমোদন নিতে হয়। কিন্তু আমরা পত্রিকায় দেখলাম বাংলাদেশ সউদী আরবের নেতৃত্বাধীন জোটে যোগ দিয়েছে। বৈঠক শেষে একাধিক মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা যায়।
এ সময় আরও দু’জন মন্ত্রীও বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন। একজন মন্ত্রী বলেন, ওআইসি’র (অরগানাইজেশন অব ইসলামিক করফারেন্স) সদস্য হওয়া সত্ত্বেও সউদী আরবের নেতৃত্বাধীন এ জোটে ইরানসহ কয়েকটি দেশ যোগ দিচ্ছে না। কিন্তু বাংলাদেশ কেন যোগ দিয়েছে?
এ ব্যাপারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী জানান, এটি কোনো সামরিক জোট নয়, এটি সন্ত্রাসবিরোধী একটি সমঝোতা চুক্তি। এছাড়া জোটের বিষয়টি এখনও চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায়নি।
সূত্র আরও জানায়, বিষয়টি নিয়ে আলোচনা থামিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বিষয়ে কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি বক্তব্য তুলে ধরে বলেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি খুব পরিষ্কার। এটা সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারও সঙ্গে শত্রুতা নয়। এই পররাষ্ট্রনীতিতে বাংলাদেশ বিশ্বাসী। এই নীতি আমরা অনুসরণ করছি।
উল্লেখ্য, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিশেষত মুসলিম দেশগুলোতে বিভিন্ন সন্ত্রাসী জঙ্গিবাদী সংগঠন সন্ত্রাসী তৎপরতার প্রেক্ষাপটে গত ১৫ জানুয়ারি সউদী আরবের নেতৃত্বে ইসলামি রাষ্ট্রগুলো সন্ত্রাসবিরোধী একট গঠনের ঘোষণা আসে। বাংলাদেশ এই জোটে অংশ নিয়েছে। এই জোটের সদস্য রাষ্ট্রের সংখ্যা ৩৪টি।
বাড়ছে না মুক্তিযোদ্ধাদের অবসরের বয়সসীমা
সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধাদের অবসরের বয়সসীমা বাড়ানোর প্রস্তাব অনুমোদন করেনি মন্ত্রিসভা। এতে মুক্তিযোদ্ধাদের অবসরের বয়স বাড়ছে না। গতকাল মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ প্রস্তাবটি তোলা হয়। সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, এর আগে ৫৭ বছর থেকে বাড়িয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের অবসরের বয়সসীমা ৬০ বছর করা হয়েছে। এ কারণে বয়স বাড়ানোর প্রস্তাবটি অনুমোদন পায়নি। ২০১৩ সালে মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরির বয়স ৬০ বছর করা হয়েছিল। উচ্চ আদালতের আদেশে গতকাল প্রস্তাবটি মন্ত্রিসভায় তোলা হয়। প্রস্তাবে মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবসরে যাওয়ার বয়স ৬৫ বছর করার কথা উল্লেখ করা হয়েছিল।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, একটি রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট মুক্তিযোদ্ধা সরকারি কর্মচারি-কর্মকর্তাদের অবসরের বয়সসীমা ৬৫ করার প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় তোলার আদেশ দেন। সম্প্রতি হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে আপিল বিভাগ প্রস্তাবটি ৬০ দিনের মধ্যে মন্ত্রিসভায় তোলার আদেশ দেন। এ বিষয়ে আদালতের নির্দেশনায় কোন বাধ্যবাধকতা ছিল না। আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল-এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার এখতিয়ার নির্বাহী বিভাগের।
সচিব আরো জানান, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে ২০০৬ সালের ১২ জুলাই এক স্মারকে মুক্তিযোদ্ধাদের অবসরের বয়সসীমা ৫৭ বছর বাড়িয়ে ৬৫ বছরে উন্নীত করার প্রস্তাব মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থাপনের অনুশাসন দেয়। ওই স্মারকের পত্রটি (তৎকালীন) প্রধান উপদেষ্টার অনুমোদন না পাওয়ায় তা মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন হয়নি। ওই নির্দেশনা প্রতিপালিত না হওয়ায় মুক্তিযোদ্ধা জামাল উদ্দিন শিকদার ২০১৩ সালে হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেন। এ বিষয়ে শুনানি করে আদালত রুল জারি করে। সরকারি স্মারকের ভিত্তিতে মুক্তিযোদ্ধাদের অবসরের বয়সসীমা কেন ৬৫ বছর করা হবে নাÑ তা জানতে চাওয়া হয় ওই রুলে। আরও ৬৮০ মুক্তিযোদ্ধা রিটে পক্ষভুক্ত হন।
জানা গেছে, রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে গতবছর ১৪ জানুয়ারি হাইকোর্ট রায় দেয়। রায়ের অনুলিপি পাওয়ার ৬০ দিনের মধ্যে ওই প্রস্তাব মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে উপস্থাপন করতে বিবাদীদের নির্দেশ দেয় আদালত। রাষ্ট্রপক্ষ ওই রায়ের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতে গেলে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে মুক্তিযোদ্ধাদের অবসরের বয়সসীমা বাড়িয়ে ৬৫ বছর করার প্রস্তাব মন্ত্রিসভায় তুলতে বলে। এদিকে এই মামলা চলার মধ্যেই গত সরকারের মেয়াদে মুক্তিযোদ্ধাদের অবসরের বয়স ৫৭ থেকে ৫৯ বছর করা হয়। তখন সরকারের অন্য কর্মকর্তাদের অবসরের বয়সসীমা ছিল ৫৭ বছর, যা পরে ৫৯ বছর করা হয়।এই প্রেক্ষাপটে আরও একটি রিট আবেদন হলে ২০১২ সালে মুক্তিযোদ্ধাদের অবসরের বয়সসীমা আরও একবছর বাড়ানো হয়। সে অনুযায়ী বর্তমানে মুক্তিযোদ্ধাদের অবসরের বয়স ৬০ বছর।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, জাতীয় ই-সেবা আইনের খসড়া এদিন মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হলেও তা আরও পরীক্ষা করে আবার উপস্থাপন করতে বলা হয়েছে। এছাড়া গত ২১ থেকে ২৩ ডিসেম্বর পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাহরাইন সফর সম্পর্কে এই সভায় মন্ত্রিসভাকে অবহিত করা হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন