রাজধানীর দোকানপাট-বিপণিবিতান নির্ধারিত বন্ধের দিনেও খোলা থাকছে এটা পুরোনো চিত্র। গতকাল যেসব এলাকায় বন্ধ থাকার কথা সেসব এলাকায় কিছু কিছু শপিং সেন্টার বন্ধ থাকলেও দোকান খোলা ছিলো বেশিরভাগই। কোন কোন মার্কেটে প্রধান ফটক বন্ধ থাকলেও রাস্তার দুইপাশে সারিবদ্ধভাবে গড়ে তোলা হয়েছে অস্থায়ী দোকান। এসব দোকানে চলছে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কেনাবেচা। যানজট নিরসন ও বিদ্যুতের সাশ্রয়ের জন্য সাতটি অঞ্চলে ভাগ করে দোকানপাট, বিপণিবিতান বন্ধের দিন নির্ধারণ অনেকেই মানেন না।
রাজধানীতে যানজট কমাতে আর বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের লক্ষ্যে ঢাকাকে সাতটি অঞ্চলে ভাগ করে দোকানপাট, বিপণিবিতান বন্ধের দিন নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব পাস হয় ২০১০ সালে। এরপর থেকে রাজধানীর নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্যের দোকান ছাড়া সব ধরনের দোকানপাট ও বিপণিবিতান এলাকাভিত্তিক আলাদা আলাদা দিন বন্ধ থাকছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতি সপ্তাহে এক দিন পূর্ণ দিবস ও আরেক দিন অর্ধদিবস (বেলা দুইটা পর্যন্ত) দোকানপাট বন্ধ রাখতে হবে। আর বিপনিবিতানগুলো বন্ধ করতে হবে রাত আটটার মধ্যেই। ব্যবসায়ীদের করোনার অযুহাত ও লোকসানের কারণ দেখিয়ে দোকান খোলা রাখার কথা বলছেন। আর আর্থিক ক্ষতি পোষাতে দোকান খোলা রাখার কথা বলেন কয়েকজন।
গতকাল মঙ্গলবার পূর্ণদিবস বন্ধ থাকার কথা এলিফ্যান্ট রোড, কাঁঠালবাগান, নীলক্ষেত, কাঁটাবন, শুক্রাবাদ, সোবহানবাগ, ধানমন্ডি, রাজাবাজার, মণিপুরিপাড়া, হাতিরপুল, মানিক মিয়া এভিনিউ, তেজকুনীপাড়া, ফার্মগেট, কাওয়ান বাজার, হাজারীবাগ, জিগাতলা, রায়েরবাজার, পিলখানা, লালমাটিয়া এলাকা।
সরেজমিনে দেখা যায়, নিউমার্কেট এলাকাসহ বেশকিছু এলাকায় মূল মার্কেটের ফটক বন্ধ থাকলেও বাইরে থাকে খোলা। এতে যানজট ও জনজটের সৃষ্টি হয়। ক্রেতারা যে যার মতো পণ্য কিনছেন। গতকাল সকাল থেকেই ক্রেতাদের মার্কেট ও বিপনিবিতানগুলোর সামনের রাস্তার দোকানগুলো থেকে কেনাকাটা করতে দেখা গেছে। এই এলাকায় নির্ধারিত বন্ধের দিন থাকায় বড় বড় শপিংমল বন্ধ থাকে। ইস্টার্ণ মল্লিকাসহ কয়েকটি শপিংমল বন্ধ পাওয়া যায়। চন্দ্রিমা শপিং সেন্টার বন্ধ থাকলেও বাইরের রাস্তার দোকানগুলো ছিলো খোলা। তাই এইসব শিপিংমলগুলোর গেইটের সামনে বিভিন্ন পণ্যের পসরা সাজিয়েছেন বিক্রেতারা। এতে ক্রেতারাও কমমূল্যে পণ্য কিনছেন। তবে অনেক ক্রেতা তাদের গাড়ি ও সিএনজি রাস্তায় দাঁড় করিয়ে রেখে কেনাকাটা করায় বিভিন্ন জায়গায় সৃষ্টি হয়েছে যানজট। এতে ভোগান্তি বেড়েছে পথচারীদের। এলিফ্যান্ট রোড এলাকার কম্পিউটার সিটি ও মাল্টিপ্লান সেন্টার ছিলো বন্ধ। তবে এসব মার্কেটের প্রধান ফটকের সিঁড়িতে বসে দেদারছে পণ্য বিক্রি করতে দেখা গেছে কয়েকজন ব্যবসায়ীকে। এছাড়াও এলিফ্যান্ট রোড এলাকার জুতা ও বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসগুলো ছিলো খোলা। শাইনপুকুরসহ কয়েকটি সিরামিক শোরুম খোলা থাকতে দেখা গেছে। বাটা জুতার কয়েকটি শোরুমও খোলা থাকতে দেখা গেছে। ঢাকা কলেজের সামনের রাস্তার পূর্ব পাশের বিভিন্ন মার্কেট বন্ধ থাকলেও মূল সড়কের ফুটপাথে ছিলো হরেক রকম পণ্যের দোকান।
ব্যাগ কিনতে আসা মোস্তফা কামাল বলেন, অন্যদিনের চেয়ে মঙ্গলবার এই এলাকায় দোকানপাট একটু কমই খোলা থাকে। সাপ্তাহিক একদিন বন্ধে নিয়ম বেশিরভাগ ব্যবসায়ী মানেন না। তবে বড় বড় মার্কেটগুলোর ব্যবসায়ীরা অনেকে নিয়ম মেনে চলেন।
গাউছিয়া মার্কেট এলাকার বিক্রেতা শফিকুল ইসলাম বলেন, প্রতি মঙ্গলবার এই এলাকার অনেক মার্কেট বন্ধ থাকে তাই ক্রেতারা এসে যাতে ফিরে না যায় তাই আমরা বাইরে দোকান নিয়ে বসি। এতে কিছু টাকার মালামাল বিক্রি করতে পারি। মাঝে মাঝে গাড়ি ও রিকশার ভিড়ের কারণে রাস্তায় যানজটের সৃষ্টি হয়। তবে সবগুলো রাস্তায় এক সঙ্গে ফুটপাথ দখল করে দোকান বসালে যাজটের কারণে সবারই সমস্যা হয়।###
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন