শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

প্রতিপাদ্যের সন্ধানে

রাহাদ উদ্দিন : | প্রকাশের সময় : ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০০ এএম

বাংলা একাডেমি আয়োজিত বাঙালির প্রাণের মেলা অমর একুশে বইমেলার এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী’। তাই এবারের মেলার মূল আকর্ষণ বঙ্গবন্ধুর ও মহান স্বাধীনতার উপর লেখা বই। এবারের মেলায় মূল প্রতিপাদ্যের ছাপ কতটুকু ফুটে উঠেছে সেই সন্ধানে নেমেছিল ইনকিলাব। গতকাল বৃহস্পতিবার বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বড় বড় বিভিন্ন প্রকাশনীর সাথে কথা বলে জানা যায়, এবারের মেলাতে মেলার আয়োজক বাংলা একাডেমি ও বিভিন্ন প্রকাশনী মিলে প্রায় দুই শতাধিক বই প্রকাশ করেছে মূল প্রতিপাদ্যের উপর। মূল প্রতিপাদ্যের উপর বাংলা একাডেমি ‘জন্মশতবার্ষিকী গ্রন্থমালা’য় সংযোজন করেছে বেশ কয়েকটি নতুন বই। জানা যায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে বাংলা একাডেমি প্রকাশ করবে মোট ১০১ টা বই। এর মধ্যে ইতোমধ্যে ৪৬ টা বই প্রকাশ করেছে তাঁরা। নতুন প্রকাশিত বইগুলোর মধ্যে রয়েছে আনোয়ারা সৈয়দ হকের ‘ছোটোদের বঙ্গমাতা’, সাহেদ মন্তাজের ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও বঙ্গবন্ধু’, রঞ্জনা বিশ্বাসের লিখা ‘বঙ্গবন্ধু ও নারীপুনর্বাসন’, স্বরোচিষ সরকারের লিখা ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলা ভাষা’, রফিকুর রশীদের লিখা ‘বঙ্গবন্ধু ও মুজিবনগর’ ইত্যাদি। মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন স্টলের অঙ্গসজ্জায়ও যুক্ত হয়েছে বঙ্গবন্ধুর প্রতিচিত্র, হস্তাক্ষর। তবে পাঠকরা দুঃখ প্রকাশ করেছেন এই বলে যে, বঙ্গবন্ধুর উপর যতগুলো বই প্রকাশ হয়েছে তার চেয়ে অনেক কম প্রকাশ হয়েছে মহান স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তীর উপর।
তাম্রলিপি প্রকাশনী স্বাধীনতার ৫০ বছর ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ৪৬টি বিষয়ভিত্তিক বই প্রকাশ করছে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে- আহমেদ মাওলার ‘বঙ্গবন্ধুর ছেলেবেলা’, শাহিন আলমের ‘বঙ্গবন্ধুর শিক্ষাজীবন’, তাসনীম আলমের ‘বঙ্গবন্ধুর কলকাতা জীবন’, শান্তা পত্রনবীশের ‘বঙ্গবন্ধু ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’, এস এ এম জিয়াউল হাসানের ‘বঙ্গবন্ধু ও ভাষা আন্দোলন’, আজরিন আফরিনের ‘বঙ্গবন্ধুর সোহরাওয়ার্দী’, জগন্নাথ বড়ুয়ার ‘বঙ্গবন্ধুর ৩২ নম্বর বাড়ি’, এস.এম তানভীর আহমদের ‘বঙ্গবন্ধুর পররাষ্ট্রনীতি’ ইত্যাদি
অনিন্দ্য প্রকাশ প্রতিপাদ্যের উপর নতুন বই বের করেছে ১৯টি। এর মধ্যে ড. অজিত দাসের লিখা বঙ্গবন্ধু ‘কেন বাকশাল গঠন করেন’, বদিউর রহমানের ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের সংবিধান’, মোহিত কামাল সম্পাদিত ‘অক্ষরস্রোতে বঙ্গবন্ধু’, প্রফেসর ড.শিরীণ আখতার সম্পাদিত ‘বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব’ ও আমীরুল ইসলামের লিখা ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের গল্প’ উল্লেখযোগ্য।
আহমদ পাবলিশিং হাউজ এ সংক্রান্ত বই বের করেছে ৩১টি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে মোহাম্মেদ দিদারুল আলমের লিখা ‘ আমি শেখ মুজিব বলছি’, মেজর জেনারেল সুবিদ আলী ভূঁইয়া রচিত ‘বঙ্গবন্ধুকে যেমন দেখেছি’ ইত্যাদি
ইত্যাদি গ্রন্থ প্রকাশ বের করেছে ১০টি বই। এর মধ্যে রয়েছে ড.মো. মোজাম্মেল হক খানের লিখা ‘শতাব্দীর মহানায়ক’, আর কে চৌধুরীর লিখা ‘মুক্তিযুদ্ধ বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ’, সুজাত মনসুরের লিখা ‘অসম যুদ্ধঃ শেখ মুজিব থেকে শেখ হাসিনাইত্যাদি
ঐতিহ্য প্রকাশনী থেকে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে প্রকাশ পেয়েছে আতিউর রহমানের ‘বঙ্গবন্ধুর অর্থনৈতিক মুক্তির সংগ্রাম’, সাইফুল্লাহ মাহমুদ দুলালের ‘কানাডায় মুক্তিযুদ্ধের উত্তালচিত্র’ ইত্যাদি
বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা এবং ভাষা আন্দোলনের উপর ৫টি সহ মোট ৩৫ টি বই প্রকাশ করেছে আগামী প্রকাশনী। প্রকাশনীর বিক্রয় ব্যবস্থাপক মাসুম জানান, শিক্ষক, উচ্চ শিক্ষিত মানুষ ও গবেষকরা তরুণদের তুলনায় এসব বই বেশি পছন্দ করছেন। এবারের মেলায় বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতার উপর অসংখ্য বই প্রকাশ হলেও ভাষা আন্দোলনের উপর লিখা বইয়ের সংখ্যা তুলনামূলক কম বলে জানান বিক্রেতারা। বিক্রয় প্রতিনিধিরা বলছেন, উপন্যাস, থ্রিলার রোমান্টিক, ঐতিহাসিক ও রাজনৈতিক বইয়ের প্রতি মানুষের আগ্রহ বেশি। পার্ল প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী হাসান জাহিদী বলেন, প্রকাশকরা বিভিন্ন ধরনের বই প্রকাশ করলেও ক্রেতারা উপন্যাস ও ইতিহাসের বইকেই বেশি পছন্দ করছেন। মুক্তিযুদ্ধ, ভাষা আন্দোলন ও বঙ্গবন্ধু বিষয়ক এসব বইয়ের চাহিদা তরুণদের মধ্যে কম। তাম্রলিপির বিক্রয়কর্মী নীপা বলেন, তরুণ প্রজন্ম জনপ্রিয় লেখকের লেখা উপন্যাসের বই পছন্দ করছে।
এ ছাড়া এসেছে কথাপ্রকাশ থেকে মুনতাসীর মামুনের ‘গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও বঙ্গবন্ধু’ ছায়াবীথি থেকে রণেশ মৈত্রের ‘আঁধার ঘোচানো বঙ্গবন্ধু’ প্রথমা প্রকাশন থেকে মজিবুর রহমানের লিখা ‘বাংলাদেশের জন্মকথা’, শোভাপ্রকাশ থেকে অরুণ কুমার গোস্বামীর ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ প্রসঙ্গ’, পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স থেকে মানিক মোহাম্মদ রাজ্জাকের ‘ছোটদের বঙ্গবন্ধু’ এবং মেরিট প্রকাশনী থেকে ‘বঙ্গবন্ধুর বাকশাল কর্মসূচি’।
গতকাল বইমেলার ১০তম দিনে নতুন বই এসেছে ১০৬টি। আজকের মেলায় থাকবে শিশুপ্রহর। মেলা চলবে সকাল ১১টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত। সকাল ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত শিশুপ্রহর ঘোষণা করেছে বাংলা একাডেমি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন