বরিশাল থেকে ৬ দিন আগে পুরান ঢাকার সদরঘাটে নেমে অপহরণকারীদের কবলে পড়া এক কিশোরকে গাজীপুরের গাজীপুরা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। ১৪ বছর বয়সী মো. আরাফাত হোসেন সাকিব গাজীপুরের নগোপাড়া আশরাফিয়া জামিয়া মাদরাসার ছাত্র। বরিশালের বাকেরগঞ্জের গ্রামের বাড়ি থেকে গত ২০ ফেব্রুয়ারি মাদরাসায় ফেরার পথে সে নিখোঁজ হয়। স্বজনরা প্রথমে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি করলেও মুক্তিপণের দাবিতে ফোন পাওয়ার পর অপহরণের মামলা করেন। তদন্তে নেমে পুলিশ প্রথমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে এক নারীকে গ্রেফতার করে। পরে গত শনিবার গাজীপুরে মহসড়কে পাওয়া যায় সাকিবকে।
ঢাকা অঞ্চলের নৌ পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সোলায়মান মিয়া জানান, এমভি অ্যাডভাঞ্চার-৯ লঞ্চে বরিশাল থেকে ঢাকায় এসেছিল সাকিব। কিন্তু সে মাদরাসায় না যাওয়ায় পরিবারের লোকজন চিন্তায় পড়ে যায়। পরে একটি মোবাইল নম্বর থেকে সাকিবের বড় ভাইদের ফোন করে আয়েশা নামে এক নারী পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা পাঠানোর জন্য সে একটি বিকাশ নম্বর দেয়। সেই নম্বরের সূত্র ধরেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা থানার সহযোগিতা নিয়ে গত শনিবার খারারা বাজার এলাকা থেকে অপহরণকারী চক্রের হোতা মহব্বতের স্ত্রী আয়েশাকে গ্রেফতার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, তার নাম মনিরা আক্তার সাদিয়া, তবে পরিচয় গোপন রাখতে ফোনে আয়েশা নাম বলেছিল। নৌ পুলিশের কর্মকর্তা সোলায়মান বলেন, কসবা থেকে সাদিয়াকে গ্রেফতার করা গেলেও অপহৃত সাকিবকে সেখানে পাওয়া যায়নি। সাদিয়ার স্বামী মহব্বতকেও ধরা যায়নি।
নৌ পুলিশের একটি দল দুই দিন দুই রাত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা, আখাউড়া, সরাইল, কুমিল্লার দেবীদ্বার, হবিগঞ্জের মাধবপুর এবং গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় পর্যায়ক্রমে অভিযান চালায়। শেষ পর্যন্ত শনিবার রাতে গাজীপুরের গাজীপুরা মহসড়কে সাকিবকে কিছুটা ভারসাম্যহীন অবস্থায় পাওয়া যায়। সদরঘাট নৌ থানার ওসি মো. কাইয়ুম আলী সরদার বলেন, লঞ্চ থেকে নেমে গাজীপুরে যাওয়ার জন্য ভিক্টোরিয়া পার্কের সামনে একটি বাসে উঠেছিল সাকিব। তার পাশে একজন নারী এসে বসে।
সাকিব বলেছে, বোরকা পরা ওই নারী লঞ্চ থেকে নামার পর তার পরিচয় জানতে চেয়েছিল, কোথায় যাবে তাও জিজ্ঞেস করেছিল। বাসে উঠে তার পাশে বসার পর ওই নারী জানালা দিয়ে দুই থেকে তিন বার বাইরে থুতু ফেলে। তারপর আর সাকিবের কিছু মনে নেই। ওসি বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাদিয়া স্বীকার করেছেন, বোরকা পরে সেদিন তিনিই বাসে ছিলেন। স্বামীর কথামত মুক্তিপণ চেয়ে ফোন করেছিলেন। এ চক্রের অন্যদেরও উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন