নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আদলে নকল ওয়েবসাইট তৈরি করে প্রতারক চক্র। পরে ওয়েবসাইটের মাধ্যমে দেয়া হয় বিজ্ঞপ্তি। যেখানে বলা হয় ‘মার্চেন্ট শিপে চাকরিতে আগ্রহী নাবিকদের বিভিন্ন যোগ্যতার সনদ দেয়া হবে’। এই বিজ্ঞপ্তি দেখে তাদের কাছে বিভিন্ন সনদের জন্য যান নাবিকরা। চক্রটি ৩-৭ লাখ টাকায় নাবিকদের কাছে নকল সনদ বিক্রি করে হাতিয়ে নেয় কোটি কোটি টাকা। এ প্রতারণার অভিযোগে গত রোববার উত্তরখানে অভিযান চালিয়ে ওরিয়েন্টাল গ্লোবাল ইন্টারন্যাশনাল মেরিটাইমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সিরাজুল আজাদসহ পাঁচজনকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি। গতকাল সোমবার মালিবাগে সিআইডি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি কামরুল আহসান। গ্রেফতারকৃত অন্যরা হলো-ওই প্রতিষ্ঠানের ডিরেক্টর মঞ্জুরুল আজাদ (৩২), ডিরেক্টর তারিকুল আজাদ (৩০), আইটি অফিসার রাশেদুল ইসলাম (৩০) ও প্রাক্তন আইটি অফিসার মোহাম্মদ সোহেল রানা (২৯)। এসময় তাদের কাছ থেকে প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত দুটি ল্যাপটপ, দুটি এইচডিডি হার্ডডিস্ক, দুটি এসএসডি হার্ডডিস্ক, একটি পেন ড্রাইভ, ছয়টি মোবাইলসহ বেশকিছু ডিজিটাল আলামত জব্দ করা হয়।
তিনি বলেন, আমাদের কাছে প্রথমে নৌপরিবহন অধিদপ্তর থেকে অভিযোগ আসে। এতে বলা হয়-একটি প্রতারক চক্র সরকারি প্রতিষ্ঠানের নামে ভুয়া ওয়েবসাইট তৈরি করে যোগ্যতা সনদ যাচাই-বাছাই ও প্রদান করার কথা বলে প্রতারণা করছে। এতে বহির্বিশ্বে মেরিটাইম ইন্ড্রাস্টিতে ক্ষুন্ন হচ্ছে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি। সমুদ্রগামী জাহাজের কর্মকর্তা-নাবিকদের যোগ্যতা সনদ পরীক্ষা ও সার্টিফিকেট ইস্যু করার একমাত্র প্রতিষ্ঠান নৌপরিবহন অধিদপ্তর। এছাড়া অধিদপ্তর যেসব সার্টিফিকেট দিয়ে থাকে, তা হচ্ছে সার্টিফিকেট অব প্রফিসিয়েন্সি (সিওপি) ও সার্টিফিকেট অব কম্পিটেন্স (সিওসি)। যোগ্যতা সনদ নামে এ প্রতিষ্ঠান অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক জাহাজে কর্মরত নাবিক-কর্মকর্তাদের বিভিন্ন সার্টিফিকেট ইস্যু করে। যা তাদের নিজস্ব সরকারি ওয়েবসাইটতে আপলোড থাকে। কিন্তু চক্রটি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট দেখে এরকম একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে। মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে দেয়া সনদের কপি ডাউনলোড করে। চক্রটির সদস্যদের মধ্যে সোহেল রানা নামে একজন ওয়েব ডেভেলপার ও ডিজাইনার রয়েছেন। তিনি তৈরি করেন সনদের নকল কপি। এসব সনদ তারা জাহাজে চাকরি প্রত্যাশী নাবিকদের কাছে বিক্রি করে উচ্চমূল্যে।
তিনি আরো বলেন, তাদের কাছ থেকে ফেক ওয়েবসাইট তৈরির কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন ডাটাবেস সার্ভারে ইনস্টল করা অবস্থায় পাওয়া যায়। যেখানে সিওপি নম্বর সম্বলিত ১২০-এর বেশি সার্টিফিকেটের তথ্য বিভিন্ন সময়ে আপলোড করা হয়েছে। এই ১২০টি সিওপি সার্টিফিকেট তারা এখন পর্যন্ত বিক্রি করে কোটি টাকারও বেশি আত্মসাৎ করেছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন