স্টাফ রিপোর্টার : বকেয়া টাকা পরিশোধ না করায় বন্ধ হয়ে যাওয়া সিটিসেলের তরঙ্গ ১৭ দিন পর খুলে দিয়েছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (বিটিআরসি)। গতকাল রোববার রাজধানীর মহাখালীতে সিটিসেলের প্রধান কার্যালয়ে বিটিআরসির পরিচালক ইয়াকুব আলী ভূঁইয়ার নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি দল গিয়ে তরঙ্গ ছেড়ে দেন। এর আগে বিকালে বিটিআরসি কার্যালয়ে এক বিশেষ সভা শেষে কমিশনের চেয়ারম্যান শাজাহান মাহমুদ বলেন, আজকের (গতকাল) মধ্যে সিটিসেল খুলে দেয়া হবে। আমাদের একটি টিম সিটিসেল অফিসে যাবে। বকেয়া ৪৭৭ কোটি টাকা পরিশোধ না করায় গত ২০ অক্টোবর সিটিসেলের তরঙ্গ স্থগিত করে দেয় কমিশন। এরপর সিটিসেল কার্যক্রমে ফেরার আবেদন নিয়ে আপিল বিভাগে গেলে গত বৃহস্পতিবার অবিলম্বে তাদের তরঙ্গ খুলে দেয়ার নির্দেশ আসে সর্বোচ্চ আদালত থেকে। আপিল বিভাগের আদেশে বলা হয়, আগামী ১৯ নভেম্বরের মধ্যে সিটিসেল বকেয়ার ১০০ কোটি টাকা পরিশোধ না করলে আবারো তরঙ্গ বন্ধ করে দিতে পারবে বিটিআরসি।
আদালতের ওই আদেশের পর সিটিসেলের সংযোগ ফিরিয়ে দিতে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা তাৎক্ষণিকভাবে শুরু করেছে বলে সেদিন জানিয়েছিলেন বিটিআরসির আইনজীবী ব্যারিস্টার রেজা-ই-রাব্বী খন্দকার। তিনি বলেছিলেন, আদেশের অনুলিপির জন্য অপেক্ষা করতে হবে না। আদেশের পরই আমি বিটিআরসির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে ফোনে বলে দিয়েছি। বিটিআরসির যা সামর্থ্য আছে, তা নিয়ে সংযোগ ফিরিয়ে দিতে তারা কাজ শুরু করেছেন। কিন্তু এরপর দুই দিন পেরিয়ে গেলেও তরঙ্গ ফিরে না পেয়ে ফের আদালতে যায় সিটিসেল। তাদের আবেদনের শুনানি করেন প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার বিচারকের বেঞ্চ এ বিষয়ে বিটিআরসির ব্যাখা জানতে চায়। আদালতের নির্দেশনার পরও সিটিসেলের তরঙ্গ কেন খুলে দেয়া হয়নি, তা বেলা সাড়ে ১১টার মধ্যে জানাতে বলা হয়। পরে বিটিআরসির পক্ষ থেকে আদালতকে জানানো হয়, সিটিসেলের তরঙ্গ খুলে দেয়ার প্রক্রিয়া ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে এবং এ বিষয়ে বিকালে মিটিং ডাকা হয়েছে।
এরই মধ্যে গতকাল দুপুরে বিশ্ব ডাক দিবস উদযাপন উপলক্ষে জিপিওতে ডাক বিভাগের শ্রেষ্ঠ কর্মচারীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ শেষে ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম সাংবাদিকদের বলেন, আদালতের নির্দেশে বন্ধ হয়ে যাওয়া সিটিসেলের তরঙ্গ খুলে দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা আদালতের মৌখিক সিদ্ধান্ত জেনেছি। আদালতের রায়ের প্রতি আমরা অবশ্যই শ্রদ্ধাশীল। বিষয়টা হলো তরঙ্গ খুলে দেয়া, আমাদের একটু কাজ করতে হবে। বিটিআরসি কাজ শুরু করেছে। কিছুটা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। তিনি বলেন, আদালতের সার্টিফাইড কপি পাইনি, তারপরও আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। আদালতের সার্টিফাইড কপির জন্য আমরা অপেক্ষা করছি। ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশের প্রথম মোবাইল ফোন অপারেটর হিসেবে লাইসেন্স পায় বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড (বিটিএল), যা পরে মালিকানার হাতবদলে সিটিসেলে পরিণত হয়। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এ কোম্পানির ৩৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ শেয়ারের মালিক বিএনপি নেতা মোরশেদ খানের প্যাসিফিক মোটরস লিমিটেড। এ ছাড়া সিঙ্গাপুরের সিংটেল এশিয়া প্যাসিফিক ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড এর ৪৫ শতাংশ এবং ফার ইস্ট টেলিকম লিমিটেড ১৭ দশমিক ৫১ শতাংশ শেয়ারের মালিক।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন