শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে

বিজ্ঞানী ও গবেষকদের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৪ মার্চ, ২০২২, ১২:০২ এএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকারের লক্ষ্য হচ্ছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া। তিনি বৈশ্বিক নতুন প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলাতে বিজ্ঞানী ও গবেষকদের আন্তরিক প্রচেষ্টা দেখতে চান। শেখ হাসিনা গতকাল বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ ও গবেষণা অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন। তিনি ফেলোশিপ ও গবেষণা সহায়তা গ্রহীতাদের জাতির সার্বিক উন্নয়নে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার দেশের ৮টি বিভাগেই শিক্ষার্থীদের মেধা ও মননের বিকাশে বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটার প্রতিষ্ঠা করবে। ইতোমধ্যে ৪/৫টি বিভাগে নভোথিয়েটার স্থাপনের প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে।

তিনি সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।

ফেলোশিপ এবং গবেষণা অনুদান প্রাপ্তদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষের দেয়া রাজস্ব থেকে আপনাদের ফেলোশিপ এবং গবেষণা অনুদান প্রদান করা হচ্ছে। কাজেই যারা ফেলোশিপ পাচ্ছেন আপনাদেরকেও সর্বোচ্চ শ্রম এবং দায়বদ্ধতা নিয়ে জাতীয় উন্নয়নে কাজ করতে হবে। কারণ, আমরা চাই দক্ষ মানব শক্তি গড়ে তুলতে।

শেখ হাসিনা বলেন, নতুন নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে, তার সঙ্গে তাল মিলিয়েই আমাদের চলতে হবে। আমাদের অর্থনীতি কৃষিনির্ভর। কাজেই এই কৃষিকে যেমন যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে উন্নত করতে হবে, পাশাপাশি শিল্পায়ন ও আমাদের দরকার।

৪র্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য দক্ষ মানব সম্পদ গড়ে তোলার ওপর গুরুত্বারোপ করে সরকার প্রধান বলেন, শিল্পায়নের ক্ষেত্রে ৪র্থ শিল্প বিপ্লব আমাদের দরজায় কড়া নাড়ছে। তার জন্য উপযুক্ত দক্ষ মানব শক্তিও আমাদের গড়ে তুলতে হবে এবং সেদিকে লক্ষ্য রেখেই আমরা আপনাদের সহযোগিতা করে যাচ্ছি।

সরকার প্রধান বলেন, দেশের মানুষ যাতে আপনাদের কাছ থেকে সহযোগিতা পায় সেটাই আমরা চাই। আপনাদের উদ্ভাবনী জ্ঞানের ব্যবহারিক প্রয়োগ যেন মানুষের কল্যাণে হয়। কাজেই যারা আজকে গবেষণা করছেন সেই গবেষণার কী ফলাফল হলো- সেটাও আমি দেখতে চাই।

প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থাপতি ইয়াফেস ওসমান, বিভিন্ন বিশ^বিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, বিজ্ঞানী, গবেষক এবং বিজ্ঞান শিক্ষার্থীদের মধ্যে ‘বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ফেলোশিপ’,‘এনএসটি ফেলোশিপ’ এবং ‘বিশেষ গবেষণা অনুদান’ প্রদান করেন। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থাপতি ইয়াফেস ওসমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জিয়াউল হাসান স্বাগত বক্তৃতা করেন।

তিনি বলেন, ’৪১ সালের মধ্যে দেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলার কাজে সকলকে মনোনিবেশ করতে হবে। কীভাবে ধাপে ধাপে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে সেদিকেই আমাদের দৃষ্টি দিতে হবে। আর সে জন্য সকলেই অন্তত কিছুটা হলেও যেন প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন হতে পারে, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা হাইটেক সিটি, হাইটেক পার্ক, সফটওয়্যার প্রযুক্তি পার্ক প্রতিষ্ঠা করে যাচ্ছি। প্রত্যেক উপজেলায় কারিগরি শিক্ষার উদ্যোগের পাশাপাশি প্রযুক্তি শিক্ষার জন্য প্রতিটি জেলা-উপজেলায় আরো যা যা দরকার আমরা তা করে যাচ্ছি। সরকার প্রধান বলেন, জেনমিক গবেষণা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে, হাইড্রোজেন শক্তি গবেষণাগার, জাতীয় জিন ব্যাংক স্থাপনের কাজ অতিদ্রুত সম্পন্ন হবে। মলিকিউলার গবেষণাগার স্থাপনেরও আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি।

মার্চ মাস আমাদের স্বাধীনতার মাস উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী এ মাসেই জাতির পিতার নেতৃত্বে সারাদেশে পরিচালিত অসহযোগ আন্দোলন, ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ এবং ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা প্রদানের ঘটনাবলীর নানা ইতিহাস ও প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশ পুণর্গঠনকালে জাতির পিতা শিক্ষাকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে মাত্র ন’মাসেই একটি সংবিধান প্রণয়ন করেছিলেন। তিনি ৩৬ হাজার ১৬৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করেন এবং ১৯৭৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন প্রতিষ্ঠা করেন।

তাঁর সরকারের মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই যে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল, পরমাণু বিদ্যুৎ কে›ন্দ্র অথবা পদ্মা বহুমুখী সেতুর মতো বড় বড় প্রজেক্ট গুলোতে আমাদের বহু ইঞ্জিনিয়ার থেকে শুরু করে বহু কর্মীরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে আমি মনে করি আমাদের দক্ষ জনবলও সৃষ্টি হচ্ছে।

শেখ হাসিনা বলেন, আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। আমাদের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি। গবেষণা না হলে আজকে আমরা দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে বা এতো উন্নতি করতে পারতাম না। এ জন্য গবেষণাকে আমি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেই। বিশেষ করে বিজ্ঞান এবং চিকিৎসা শাস্ত্রের গবেষণাকে। মেডিকেলের ক্ষেত্রে আমাদের গবেষণা একটু কম, কাজেই এ ক্ষেত্রে আরো গবেষণা বাড়াতে হবে। আর এই গবেষণাই পারে আমাদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘২০৪১ প্রেক্ষিত পরিকল্পনা’ আর ও ‘ডেল্টা প্ল্যান-২১০০’ এর কাঠামো তৈরি করে দিয়েছি। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে এগুলো সংশোধন করে এর ওপর ভিত্তি করে যদি পরিকল্পনা নিয়ে এগোতে পারি তাহলে বাংলাদেশের মানুষকে আর কেউ কোন দিন ‘দাবায়ে রাখতে পারবেনা’। তিনি বলেন, আত্মবিশ্বাস হচ্ছে সবচেয়ে বড় জিনিষ। আত্মবিশ্বাস নিয়ে চলতে পারলে, যে কোন অসাধ্য কাজকেও সাধন করা যায় সেটা আমার বিশ্বাস।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
jack ali ৪ মার্চ, ২০২২, ৫:২৯ পিএম says : 0
Enemy of Allah you people destroyed our moral foundations, education systems and now just using nice nice word. In Islam Actions Speaks Louder than Word....
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন