শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ঢাবির সূর্যসেন হলের ১০টি রুম দখলে নিল ছাত্রলীগ

প্রকাশের সময় : ৭ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

হল ছেড়ে গেছে অনেক বরাদ্দপ্রাপ্ত : কোনো রুমে সিট পায়নি অনেকেই
ঢাবি সংবাদদাতা
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারদা সূর্যসেন হলের দশটি রুম দখলে নিয়েছে হল ছাত্রলীগ। এতে এসব কক্ষে থাকা ছাত্ররা অনেকে হল ছেড়ে চলে গেছে। আবার অনেকে এখনো কোন রুমে উঠতে পারেনি।
হল ছাড়া শিক্ষার্থীরা জানায়, গত শুক্রবার দিবাগত রাতে ওই সব কক্ষে থাকা শিক্ষার্থীদের রুম ছেড়ে দিতে বলে হলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম সরওয়ার। সরওয়ার বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আবিদ আল হাসানের অনুসারী।
জানা যায়, হলের চার তলার মাঝখানের ব্লকের অধিকাংশ রুম নন-পলিটিক্যাল। শুক্রবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি আবিদ আল হাসানের কথা বলে হলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক গোলাম সরওয়ার কক্ষে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের রুম ছেড়ে দেয়ার জন্য আল্টিমেটাম দেয়। পরদিন শনিবার শিক্ষার্থীরা রুম ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। কক্ষগুলো হলোÑ ৪২৮, ৪৩৬, ৪৩৭, ৪৩৮, ৪৩৯, ৪৪১, ৪৪৭, ৪৩৩, ৪৪২ ও ৪৪৫।
এসব কক্ষের সবক’টি ডাবল রুম। যার প্রতিটি রুমে থাকত পাঁচ থেকে ছয়জন শিক্ষার্থী। তাদের প্রত্যেকে তৃতীয় বর্ষ, চতুর্থ বর্ষ ও মাস্টার্সের ছাত্র। এসব বৈধ ছাত্রকে বের করে দিয়ে নতুন করে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের দেয়া হয়েছে। তবে দু-একটি কক্ষ যাদের নামে বরাদ্দ আছে, তাদের বের করা হয়নি। এদিকে বের করে দেয়া শিক্ষার্থীদের যারা কোনো কক্ষে উঠতে পারেনি, তাদের বেশির ভাগ হল ছেড়ে চলে গেছে। আবার কেউ কেউ বন্ধুদের কক্ষে আশ্রয় নিয়েছে।
এ ব্যাপারে গোলাম সরওয়ার জানায়, কাউকে রুম থেকে বের করে দেয়া হয়নি, তাদের অন্য কক্ষে পাঠানো হয়েছে এবং এখানে পলিটিক্যালি জুনিয়রদের উঠানো হয়েছে। রিপ্লেস করা কক্ষগুলো হলোÑ ৩০১, ৪২৬, ৪৬৩, ৫২৬, ৬২৮, ৬২৯, ৬৩৩, ৬৩৬।
বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি আবিদ আল হাসান জানায়, সে হলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক। তার পছন্দ মতো রুম বণ্টন করবে তাতে আমার কিছু বলার নেই। আর কেউ যদি রুম না পেয়ে থাকে, তাহলে সে যেন আমার সাথে যোগাযোগ করে, আমি ব্যবস্থা করব।
এদিকে এ ঘটনার পর হলের সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ছাত্র জানায়, হঠাৎ করে আমাদের রুমে এসে রুম খালি করে দিতে বলে। আমরা পরে রুম ছেড়ে দিতে বাধ্য হলাম।
হল প্রশাসনকে পলিটিক্যালি রুম নির্দিষ্ট করে দেয়ার দাবি জানিয়ে এক শিক্ষার্থী জানায়, যারা রাজনীতি করে তাদের জন্য আলাদ ৫০টি কক্ষ বরাদ্দ করে দিতে। আর আমরা যারা পড়াশোনা করতে চাই, তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈধপন্থায় হলে থাকতে চাই। হল প্রশাসন থেকে রুম বরাদ্দ দেয়া হলেও সেসব রুমে আমরা উঠতে পারি না।
হলের হাউজ টিউটররা খোঁজ-খবর নেন না উল্লেখ করে ওই শিক্ষার্থী জানায়, স্যাররা শুধু বলেন, কোনো অভিযোগ থাকলে জানাতে। কিন্তু আমরা তো ভয়ে বলতে পারি না। স্যাররাও তেমন কক্ষ পরিদর্শনে আসেন না।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হলের ভারপ্রাপ্ত প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. বাহাউদ্দীন বলেন, হলের রুম বরাদ্দ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ দিয়ে থাকে। ছাত্রলীগের কোনো এখতিয়ার নেই হল বরাদ্দ দেয়া বা পরিবর্তন করার। তবে এ বিষয়ে আমার কাছে কোনো অভিযোগ আসেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে বিষয়টি অবশ্যই খতিয়ে দেখা হবে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন