শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

পূর্বাচল উপশহরে নির্মাণাধীন প্লটের ফটক চুরির হিড়িক

৩০ সেক্টরে ২৫টি চোর সিন্ডিকেট

খলিল শিকদার, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) থেকে | প্রকাশের সময় : ৭ মার্চ, ২০২২, ১২:০৪ এএম

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে নির্মাণাধীন পূর্বাচল উপ শহর প্রকল্পের প্লটের নির্মাণ সামগ্রী বিশেষ করে লোহার বড় বড় ফটক চুরির হিড়িক পড়েছে। দিনে-দুপুরে এসব চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে প্রকল্পের ৩০ সেক্টরে ২৫টি চোর সিন্ডিকেট। এতে বাড়ি নির্মাণের অনুমোদন পেয়েও কাজ করাতে পারছেন না প্লট মালিকরা। এছাড়াও প্লটের সীমানা প্রাচীর ও ফটক ভেঙ্গে চুরি করে নিয়ে যাওয়ায় নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন পূর্বাচলের ৩০ সেক্টরের প্লট মালিকরা।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের এ পর্যন্ত ৮৫ ভাগ প্লট বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। এসব প্লটে বাড়ি করার অনুমোদন পেয়েছেন ৪০ ভাগ প্লট মালিক। এদিকে প্লট বুঝে পাওয়ার পর দখল রাখতে অস্থায়ী বা স্থায়ী সীমানা প্রাচীর করেছেন অনেকে। কেউ কেউ বানিয়েছেন অস্থায়ী ঘর। কিন্তু এসব অস্থায়ী ঘরে বা প্রাচীর দেখাশুনার জন্য অনেকেই রাখেননি কোন নৈশ প্রহরী। ফলে এলাকার ছিঁচকে থেকে শুরু করে চোর সিন্ডিকেট চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে প্লটের নির্মাণ সামগ্রী। এমনকি ২০ হাজার থেকে ৫ লাখ টাকা মূল্যের ফটকও। তবে রূপগঞ্জ থানা পুলিশ বলছে, অভিযোগ না পাওয়ায় চোরদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না। এমন চিত্র পূর্বাচল জুড়েই।
সূত্র জানায়, পূর্বাচলে রয়েছে ৩০টি সেক্টরে ২৫টি চোর সিন্ডিকেট। আর ওইসব চোর লালনে সহায়তা করছে পূর্বাচলের অভ্যন্তরে ৮টি এবং বাইরের ১৫টি ভাঙ্গারীর দোকান। অভিযোগ রয়েছে, ওই চোরদের চুরি করা মালামাল সরাসরি ওই ভাঙ্গারী দোকানিরা কিনে নিচ্ছে। ফলে চোররা থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। রাতের কিংবা দিন দুপুরে নির্জনতার সুযোগে এসব ফটক চুরি হয়ে যায় বলে জানিয়েছেন প্লট মালিক ও আদিবাসিরা।
পূর্বাচলের আলমপুরের বাসিন্দা সোহেল মিয়া বলেন, চোরচক্র এমনই শক্তিশালী যে, তারা র‌্যাব, পুলিশ ও সরকারী উর্ধ্বতন কর্মকর্তার প্লটের ফটক এমনকি ইট পাথর চুরি করে নিয়ে যায়। আর ওই চোরাই মালামাল বিক্রি করে আশপাশের বিভিন্ন ভাঙ্গারীর দোকানে।

জানা যায়, এসব ভাঙ্গারীর দোকান রয়েছে ইছাপুরা বাজার, বাগবের বাজার, ভক্তবাড়ি বাজার, শিমুলিয়া বাজার ও কালনী বাজার এলাকায়। অন্যদিকে গাজীপুরের কালীগঞ্জ অংশের ফারুক মার্কেট, ফর্দি বাজারেও রয়েছে ভাঙ্গারী দোকান। ওই ভাঙ্গারী দোকানের ছত্রছাঁয়ায় এসব চোর সিন্ডিকেট সক্রিয়। পূর্বাচলের প্লট মালিক র‌্যাব কর্মকর্তা এমএ আওয়াল বলেন, আমাদের পারিবারিকভাবে ক্রয় করা একটি প্লটের নিরাপত্তার জন্য সীমানা প্রাচীর করি। ওই প্রাচীরের ৩ লাখ টাকার এসএস ফটক গত ৪ মার্চ কে বা কারা নিয়ে গেছে।

রূপগঞ্জ থানার এএসআই ও পূর্বাচল ক্যাম্প সহকারী ইনচার্জ সাইফুল ইসলাম বলেন, ৩০ সেক্টরের মধ্যে রূপগঞ্জ অংশে ২৩টি সেক্টর রয়েছে। ওই ২৩টি সেক্টরের নিরাপত্তায় কেবল ১ জন এসআই, ১ জন এএসআই ও ৫ জন কনস্টেবল নিয়োগ দেয়া আছে। ফলে এই ৫ জনকেই নিরাপত্তার দেখভাল করতে হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, সম্প্রতি ২৪ নম্বর সেক্টর এলাকার ৪০৪ নম্বর সড়কের ৫ নম্বর প্লট থেকে একটি ৩ লাখ টাকা মূল্যের ফটক চুরির পর প্লটের মালিক প্রকৌশলী নাদিম হোসেন থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। ওই অভিযোগ পেয়ে চোর শনাক্তে অভিযান চালাই। গত ৩ মার্চ রাতে পূর্বাচলের হিড়নাল এলাকায় অভিযান চালিয়ে চিহ্নিত চোর চক্রের প্রধান সোনা মিয়ার ছেলে সুমনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তার হেফাজতে ৫টি ফটক পাওয়া গেছে। এ সময় তার সহযোগী কালনী গ্রামের হোসেন আলীর ছেলে ইউনুছকেও গ্রেফতার করা হয়।
এ বিষয়ে রূপগঞ্জ থানার ওসি এএফএম সায়েদ বলেন, পূর্বাচল এলাকায় ঘোষিত থানা বাস্তবায়ন হলে এসব সমস্যা দূর হবে। তবে থানা পুলিশের নিয়োজিত লোকবল দিয়ে নিরাপত্তাসেবা দেয়া হচ্ছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
salman ৭ মার্চ, ২০২২, ৬:০৬ এএম says : 0
Boro Boro Chor, Dakath der sompod Choto Chor raa nicche.....khuv valo kaj..chalai jaww
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন