শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

ইসলামী বিশ্ব

উড়ন্তবস্তু নিয়ে ভারতের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে পাকিস্তান

ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের জন্য ক্ষমা চেয়েছে ভারত

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৩ মার্চ, ২০২২, ১২:০৭ এএম

ভারতের সিরসা এলাকা থেকে উদ্ভূত একটি ‘উড়ন্তবস্তু’ পাকিস্তানের আকাশসীমা লংঘন করার পর শুক্রবার পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি ভারতের কাছে এর ব্যাখ্যা চেয়েছেন। একটি বিবৃতিতে মন্ত্রী বলেছেন, যে উড়ন্তবস্তুর দ্বারা আন্তর্জাতিক আইনের লংঘন করা হয়েছে এবং ঘটনার পিছনে আসল উদ্দেশ্যগুলি তদন্ত করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ভারত দ্বিতীয়বার পূর্বের ন্যায় পাকিস্তানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে। সেজন্য ভারতীয় চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্সকে ব্যাখ্যা দেয়ার জন্য পাকিস্তানের পররাষ্ট্র দফতরে তলব করা হয়েছে। ভারতকে এর জন্য দায়বদ্ধ থাকতে হবে এবং তাদের ব্যাখ্যার পরে পরবর্তী পদক্ষেপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। তিনি যোগ করেছেন যে ভারতীয় পদক্ষেপটি আক্রমণাত্মক এবং প্রযুক্তিগত ব্যর্থতা নয়। তিনি ভারতের পদক্ষেপকে উদ্বেগজনক বলে দাবি করে স্মরণ করিয়ে দেন, পাকিস্তান ২০১৯ সালে একটি বিচক্ষণ প্রতিক্রিয়া দিয়েছিল ছিলেন। এফএম কোরেশি আরও বলেছিলেন যে, বিদেশী দেশগুলির প্রতিনিধিদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আমন্ত্রণ জানানো হবে এবং পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করা হবে। তিনি আশা করেন যে, বিষয়টি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নোট করবে। দেশটির শীর্ষ এই কূটনীতিক বলেছেন যে, পাকিস্তান গতকাল নিজেকে রক্ষা করেছে এবং তা অব্যাহত রাখবে। তিনি ভারতে সংখ্যালঘুদের সাথে বিরূপ আচরণ উদ্বেগজনক বলেও উল্লেখ করেন। ভারতীয় ‹সুপার-সনিক ফ্লাইং অবজেক্ট› তার আকাশ সীমা অকারণ লঙ্ঘনের বিষয়ে পাকিস্তানের তীব্র আপত্তি জানাতে পাকিস্তান শুক্রবার ভারতের চার্জ দ্য› অ্যাফেয়ার্সকে এফও-তে তলব করেছে। এক বিবৃতিতে,পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আসিম ইফতিখার আহমেদ বলেছেন যে, ক্ষেপণাস্ত্রটি বুধবার সন্ধ্যা ৬:৪৩মিনিটে ভারতের সুরাতগড় থেকে পাকিস্তানে প্রবেশ করে এবং সন্ধ্যা ৬:৫০মিনিটে মিয়াচুন্নু শহরের কাছে বিধ্বস্ত হয়, যা বেসামরিক সম্পত্তির ক্ষতি করেছে।ভারতীয় কূটনীতিককে বলা হয়েছিল যে, বস্তুটির নির্বিচারে উৎক্ষেপণ কেবল বেসামরিক সম্পত্তির ক্ষতিই করেনি বরং মানুষের জীবনকেও ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে। তিনি আরও বলেন, উড়ন্ত বস্তুর ফ্লাইটপাথ পাকিস্তানের আকাশসীমার মধ্যে বেশ কয়েকটি অভ্যন্তরীণ এবং আন্তর্জাতিক ফ্লাইটকে বিপন্ন করেছে এবং এর ফলে একটি গুরুতর বিমান দুর্ঘটনা ঘটতে পারতো।এই ধরনের ্রদায়িত্বজ্ঞানহীন ঘটনাগ্ধ আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রতি আকাশ নিরাপত্তার প্রতি ভারতের উপেক্ষা এবং নির্মমতার প্রতিফলনও করে। ইফতিখার এই ঘটনার একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ এবং স্বচ্ছ তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন, যার ফলাফল অবশ্যই পাকিস্তানের সাথে শেয়ার করতে হবে জানান তিনি। অপর দিকে, পাকিস্তানে ভুল করে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। বৃহস্পতিবার এই ঘটনায় ক্ষমা চেয়েছে নয়াদিল্লি। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, গত বুধবার সেনা মহড়া চলাকালীন ভারতীয় সেনাবাহিনীর ওই ক্ষেপণাস্ত্র গিয়ে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের মিলন চানু শহরে আঘাত হানে। তবে খবরটি প্রথম প্রকাশ করে রাশিয়ার সংবাদ সংস্থা স্পুটনিক। তারাই প্রথম জানায় হরিয়ানার সিরসার কাছে কোনও এলাকা থেকে একটি ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার একটি বিবৃতি দিয়ে নয়াদিল্লি ঘটনাটির কথা স্বীকার করে। তবে একইসঙ্গে জানিয়ে দেয়, ঘটনাটি ভুল করে ঘটেছিল। কী ভাবে এমন ভুল হল তা জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়েছে,‘গত ৯ মার্চ নিয়মমাফিক রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলাকালীন দুর্ঘটনাবশত একটি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ হয়ে যায়। প্রযুক্তিগত গোলযোগের জন্যই ওই ঘটনা ঘটেছিল। তবে ভারত ইতোমধ্যে ঘটনাটিতে উচ্চপর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।’ একই সঙ্গে ভারতের তরফে এই ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বলা হয়েছে, ‘আমরা জানতে পেরেছি ওই ক্ষেপণাস্ত্র পাকিস্তানের একটি এলাকায় গিয়ে অবতরণ করেছে। ঘটনাটি নিঃসন্দেহে অত্যন্ত দুঃখজনক। তবে আমরা কিছুটা নিশ্চিন্ত এটা জেনে যে এই দুর্ঘটনায় ওই এলাকায় কারও প্রাণ যায়নি।’ এর আগে পাকিস্তান ওই ঘটনার ব্যাখ্যা চায় ভারতের কাছে। গণমাধ্যমের কাছে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আইএসপিআরের মহাপরিচালক বাবর ইফতিখার বলেন, গত ৯ মার্চ একটি দ্রুত গতি সম্পন্ন উড়ন্ত বস্তু ভারত থেকে উড়ে এসে পাকিস্তানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে এবং মিয়ান চান্নু এলাকায় পতিত হয়। এটি ছিল একটি সুপারসনিক উড়ন্ত বস্তু, খুব সম্ভবত একটি মিসাইল। তবে এতে কোনো বিস্ফোরক ছিল না। এর কারণে ভারত ও পাকিস্তানের অনেক আন্তর্জাতিক ও আভ্যন্তরীণ বিমান ঝুঁকিতে পড়েছিল। ডন, এনডিটিভি, ট্রিবিউন, দ্য প্রিন্ট।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন