ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি কামাল উদ্দিন রানা ও সাধারণ সম্পাদক রুবেল হোসেন দায়িত্ব পেয়েই ওই হলের ওয়াই-ফাই কেএস নেটওয়ার্ক পরিবর্তন করেছে। এতে করে এক সপ্তাহ থেকে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ওই হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা।
সূত্র জানায়, গত ৩ মার্চ থেকে কেএস নেটওয়ার্ক ওই হল থেকে তাদের ব্যবসা বন্ধ করে দিয়েছে। এর কারণ হিসেবে জানা যায়, কেএস নেটওয়ার্ক থেকে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে ওই হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি কামাল উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক রুবেল হোসেন। কেএস নেটওয়ার্ক তাদেরকে (কামাল ও রুবেল) ৩০ হাজার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও তারা রাজি হননি। যার ফলে কে এস তাদের ব্যবসা বন্ধ করতে বাধ্য হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কে এস নেটওয়ার্কের এক কর্মকর্তা বলেন, এই হলে প্রায় ৬০টি কক্ষে ফ্রি নেটওয়ার্ক চালু আছে। এছাড়া, আরও অনেক কক্ষে মাসিক টাকা চাইতে গেলে তারা টাকা পরিশোধ করত না। এর ফলে আমাদের অনেক আর্থিক ক্ষতি হতো। তবুও আমরা তাদের সার্ভিস দিতাম। কিন্তু তারা আমাদের কাছে আরও দাবি করে।
তবে, নতুন নেটওয়ার্ক ইউসিএল নিয়ে আসার কথা জানান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। যদিও এর দশ দিন পার হলেও তারা এখনো ওয়াই-ফাই লাইন দিতে পারেনি। এদিকে ওয়াই-ফাই বন্ধের কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন ওই হলের আবাসিক শিক্ষার্থীরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন বলেন, এর কারণে আমাদের পড়ালেখা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। কারণ এখন ডাটার যে দাম। তাছাড়া হলে যারা থাকে বেশিরভাগ শিক্ষার্থী মধ্যবিত্ত পরিবারের। আমাদের ক্লাসে দেয়া এসাইনমেন্ট ঠিক মতো করতে পারছিনা। চরম অস্বস্তির মধ্যে দিয়ে যেতে হচ্ছে। তবে হলের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, কেএস নেটওয়ার্ক মাঝেমধ্যেই নেটওয়ার্কিংয়ে বাফারিং ঘটত।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওই হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি কামাল উদ্দিন রানা ইনকিলাবকে বলেন, কমিটি পাওয়ার পর আমরা হলের প্রভোস্টসহ শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি মতবিনিময় সভা করেছিলাম। সেখানে তারা প্রায় ৪৭টি বিষয়ে অভিযোগ দিয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় অভিযোগ ছিল কেএস নেটওয়ার্ক সার্ভিস নিয়ে। আমরা শিক্ষার্থী বান্ধব সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে কেএস ওয়াই-ফাই পরিবর্তন করেছি। তারা যদি আমাদেরকে ১০ লাখ টাকাও দিতো তাও তাদের রাখতাম না। তাদের একচেটিয়া বাণিজ্য বন্ধে অন্যান্য হলেও পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানান রানা। তিনি বলেন, আমরা নতুন নেটওয়ার্ক ইউসিএল নিয়ে আসছি; যদি এটাও খারাপ সার্ভিস দেয় তাহলে এটাকেও আমরা পরিবর্তন করতে সচেষ্ট হবো।
সাধারণ সম্পাদক রুবেল হোসেন বলেন, কেএস নিয়ে প্রত্যেকটা শিক্ষার্থীর অসন্তোষ ছিল যে কারণে আমরা এটা পরিবর্তন করতে বাধ্য হয়েছি। শিক্ষার্থীদের স্বার্থে আমরা এটা করেছি। কিন্তু এ বিষয়ে আমাদের ব্যক্তিগত স্বার্থের কথা আসছে বুঝতে পারছি না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন