শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

আরাকানে গণহত্যা সভ্যতা ও মানবতা বিরোধী- আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী

মিয়ানমারমুখী লংমার্চের হুমকি হেফাজতের

প্রকাশের সময় : ১০ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

চট্টগ্রাম ব্যুরো : মিয়ানমারের আরকানে মুসলমান নারী ও শিশু নির্যাতন এবং নির্বিচারে গণহত্যা বন্ধের দাবি জানিয়েছে হেফাজতে ইসলাম। গতকাল বুধবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন এ দাবি জানান হেফাজত মহাসচিব আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী।
তিনি বলেন, আরাকান মুসলমানদের উপর মগদস্যু ও সামরিক বাহিনীর নির্মম নির্যাতন সভ্যতা ও মানবতাবিরোধী। তিনি মানবতা বিরোধী এ অপরাধ বন্ধে জাতিসংঘসহ বিশ্বের বিবেকবান সব রাষ্ট্র ও সংস্থার সহযোগিতা কামনা করেন। সংবাদ সম্মেলন থেকে ১৮ নভেম্বর চট্টগ্রামে এবং ২৫ নভেম্বর কক্সবাজারে বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে মিয়ানমারের গণহত্যা বন্ধ না হলে মিয়ানমারমুখী লংমার্চ করারও হুঁশিয়ারি দেন হেফাজত নেতারা। সংবাদ সম্মেলনে হেফাজত মহাসচিবের লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন হেফাজতের সহ-সভাপতি মাওলানা হাফেজ তাজুল ইসলাম, যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা লোকমান হাকীম, মাওলানা মঈনুদ্দিন রুহী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা হাবিবুল্লাহ আজাদী, মওলানা ইসহাক মেহেরিয়া, হেফাজত আমীরের প্রেসসচিব মাওলানা মনির আহমদ, মাওলানা হাজী মুজাম্মেল হক, মাওলানা কারী ইসমাঈল প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ‘আমরা অপরিসীম মর্মবেদনা ও ভারাক্রান্ত হৃদয়ে প্রত্যক্ষ করছি যে, আমাদের ঘরের পাশে আরাকান রাজ্যের নিরীহ, নিরস্ত্র বেসামরিক মানুষকে প্রতিদিন পশুর মতো জবাই করে হত্যা করা হচ্ছে। নারী-শিশু-আবাল-বৃদ্ধ-বনিতার ওপর হিংস্র হায়েনার মতো দলবেঁধে ঝাঁপিয়ে পড়ছে দেশটির সামরিক বাহিনী ও সরকারের লেলিয়ে দেয়া উগ্রবাদী মগদস্যু ও সন্ত্রাসীরা। আরাকান ভূখ- থেকে মুসলিম জাতিসত্তাকে সম্পূর্ণভাবে নির্মূল করে দেয়ার হীন উদ্দেশ্যে পূর্ব ঘোষিত ও পরিকল্পিত অভিযান চালানো হচ্ছে। আরাকানের বেসামরিক বৌদ্ধ জনগণকে অস্ত্রে সজ্জিত করে হত্যাকা-ে প্ররোচিত করা হচ্ছে। ঘরে ঘরে হামলা চালিয়ে হাজার হাজার মা-বোনের ইজ্জত-সম্ভ্রম লুটে নেয়া হচ্ছে। পাড়া-মহল্লা ও বাড়ি-ঘরে আগুন লাগিয়ে জ্বালিয়ে দেয়া হচ্ছে। আরাকান গণহত্যার কোনো সংবাদ বিশ্বমিডিয়ায় প্রকাশিত না হলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত দু’চারটি সচিত্র সংবাদ দেখলেই কোনো বিবেকবান মানুষ স্থির থাকতে পারেন না।
এতে বলা হয়, বিশ্বমোড়ল আমেরিকা, রাশিয়া, জাতিসংঘসহ গোটা দুনিয়ার কাছে বিবেকবান মানুষের প্রশ্ন, মুসলমান হওয়াটাই কি আরাকানের নির্যাতিত নাগরিকদের অপরাধ? যে নির্যাতন আজ আরাকান, কাশ্মির ও সিরিয়ায় চলছে তার শতভাগের একভাগও যদি কোনো মুসলিম দেশে অমুসলিমদের ওপর করা হতো, তাহলে বিশ্বসংস্থা ও প্রাচ্য-পাশ্চাত্যের শক্তিধর দেশগুলো এভাবে নীরব ভূমিকা পালন করতো? নিশ্চয় না।
বিভিন্ন দেশে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ইস্যুতে সবাইকে সোচ্চার হতে দেখা যায়। কিন্তু আজকে কথিত সভ্য দুনিয়ার চোখের সামনে অব্যাহতভাবে বিপুল সংখ্যক নিরীহ-নিরপরাধ ও নিরস্ত্র মানুষের ওপর স্মরণকালের নিষ্ঠুরতম মানবতা বিরোধী অপরাধের প্রতিবাদে মিডিয়াকে যথাযথ ভূমিকা পালন করতে দেখা যায় না?
একটি মুসলিমপ্রধান দেশ হিসেবে বাংলাদেশ সরকারের কাছে আমাদের দাবি হলো, সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ তথা সর্বস্তরের মুসলমানদের পক্ষ থেকে অবিলম্বে মিয়ানমার সরকারের গণহত্যা ও অত্যাচারের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করুন। আন্তর্জাতিকভাবে মিয়ানমার সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির জন্য কূটনৈতিক পদক্ষেপ জোরদার করুন।
মিয়ানমারে মুসলমানদের উপর নির্যাতনের প্রতিবাদে আগামী ১৮ নভেম্বর বাদজুমা চট্টগ্রাম আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশ ও গণমিছিল এবং ২৫ নভেম্বর জুমাবার কক্সবাজার শহরে সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এ সময়ের মধ্যে যদি গণহত্যা বন্ধ করা না হয়, তাহলে পরবর্তীতে চট্টগ্রাম থেকে আরাকান অভিমুখে লংমার্চের ঘোষণা করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন হেফাজত নেতারা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন