রাজধানীতে পৃথক ঘটনায় কিশোরীসহ তিন শিক্ষার্থীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। তারা হলো- জান্নাতুল ফেরদৌসী লিশা (১৫), আকাশ (২৪) ও কাওসার (২০)। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে তাদের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। পুলিশ বলছে, লাশের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার তালকান্দা গ্রামের জহুর আলী ভূঁইয়ার মেয়ে জান্নাতুল। পরিবারের সঙ্গে বাড্ডা পূর্বাঞ্চল ১৭ নম্বর লেনের ৬১২ নম্বর বাসায় থাকতো সে। জান্নাতুল উত্তর বাড্ডা কামিল মাদ্রাসার ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থী।তার বাবা জহুর আলী বলেন, একই মাদরাসার এক ছাত্রের সঙ্গে জান্নাতুলের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ওই ছেলের সঙ্গে ফোনে তার ঝগড়া হয়। এর জেরে ঘরের ভেতর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে জান্নাতুল।
বাড্ডা থানার এসআই মেহেদী হাসান বলেন, খবর পেয়ে মঙ্গলবার রাত ৯টায় ঝুলন্ত অবস্থায় ওই কিশোরীর লাশ উদ্ধার করা হয়। সে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ।
অপরদিকে কমলাপুর স্কুল অ্যান্ড কলেজে একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিল কাওসার। পড়াশোনার পাশাপাশি একটি দোকানে চাকরিও করতো সে। তার বাড়ি ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলার কলসিন্দুর কান্দাপাড়া গ্রামে। সবুজবাগের কাঠেরপুল এলাকায় মামার সঙ্গে ভাড়া বাসায় থাকতো কাওসার।
তার মামা নুর উদ্দিন বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত কাওসারের ঘরের দরজা বন্ধ ছিল। এ সময় অনেক ডাকাডাকি করেও তার কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। পরে ঘরের দরজা ভাঙলে কাওসারকে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখা যায়। সবুজবাগ থানার এসআই মো. সবুজার আলী বলেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে রাত ১১টার মধ্যে যেকেনো সময় গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে কাওসার।
অন্যদিকে ছাদ থেকে লাফিয়ে আকাশ (২৪) নামের এক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। তবে চার তলা থেকে লাফিয়ে পড়ার কথা বলা হলেও তার শরীরে তেমন কোনো ইনজুরি নেই। এটি আসলেই আত্মহত্যা কি না তা নিয়ে সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এই মৃত্যুকে রহস্যজনক বলছে পুলিশ। আকাশ রায় (২৪) ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র। বুধবার সকাল পৌনে সাতটায় রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
আকাশ রায়ের বন্ধু পঙ্কজ রায় বলেন, আকাশ ভোরে বাসার ছাদ থেকে লাফ দিয়ে নিচে পড়ে। কী কারণে ছাদ থেকে লাফ দিয়েছে বলতে পারছি না। আমরা ধানমন্ডি থানার শুক্রাবাদ এলাকার ৮/এ বাসায় থাকি। আকাশের বাড়ি রংপুর জেলার পীরগঞ্জ থানার চতরা গ্রামে। সে ওই এলাকার রতন রায়ের ছেলে।
ঢামেক হাসপাতালে পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, লাশ হাসপাতালে জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। বিষয়টি আমরা সংশ্লিষ্ট থানাকে জানিয়েছি। তিনি আরও বলেন, চার তলা থেকে লাফ দিলে শরীরে বড় ধরনের ইনজুরি থাকার কথা। কিন্তু সেরকম কোনো ইনজুরি পাওয়া যায়নি। এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা সেটি সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন