শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধি ডিপ্লোম্যাটিক কোরের ৪০ সদস্যের শ্রদ্ধা

গোপালগঞ্জ জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৫ মার্চ, ২০২২, ১২:০১ এএম

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ঢাকায় নিযুক্ত বিদেশী ডিপ্লোম্যাটিক কোরের ৪০ সদস্যসহ ৬৫ জনের একটি প্রতিনিধি দল। গতকাল
ডিপ্লোম্যাটিক কোরের ভারপ্রাপ্ত ডিন ও মরক্কোর অ্যাম্বাসেডর মাজিদ হালিমের নেতৃত্বে ডিপ্লোম্যাটিক কোরের সদস্যরা সমাধিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে এ শ্রদ্ধা জানান। এসময় তারা সেখানে ১ মিনিট নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।

পুস্পস্তবক অর্পণের পর ডিপ্লোম্যাটিক কোরের সদস্যরা বঙ্গবন্ধুর কবরে ফাতেহা পাঠ ও ৭৫’র ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধুসহ নিহতদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন তারা। এরপর, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান জাতীয় সংসদের পররাষ্ট্র বিষয়ক স্থায়ী কমিটির সভাপতি লে. কর্ণেল (অব.) ফারুক খান।

শ্রদ্ধা নিবেদনের পর ডিপ্লোম্যাটিক কোরের ভারপ্রাপ্ত ডিন সমাধিসৌধে রক্ষিত পরিদর্শন বইয়ে মন্তব্য লিখে স্বাক্ষর করেন। পরে ডিপ্লোম্যাটিক কোরের সদস্যরা সমাধিসৌধ পরিদর্শন করেন এবং সমাধিসৌধ কমপ্লেক্সের ১নং গেট সংলগ্ন লাইব্রেরীর পাশে একটি বকুল ও আরেকটি আম গাছের চারা রোপন করেন।

পররাষ্ট্র বিষয়ক জাতীয় সংসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য নাজিম রসুল, পররাষ্ট্র সচিব সাব্বির আহমেদ চৌধুরী, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক আলাউদ্দিন ভূইয়া, প্রটোকল প্রধান এম এনামুল হক, পিএস টু এইচ এম গোলাম মওলা, জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির অতিরিক্ত সচিব এমদাদুল্লাহ মিয়া, কবি ও জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য তারিক সুজাত, আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, পররাষ্ট্র বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য তানভীর শাকিল জয়, জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতান, পুলিশ সুপার আয়েশা সিদ্দিকা, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহবুব আলী খান, টুঙ্গিপাড়া আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল বাশার খায়ের, সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল শেখ, টুঙ্গিপাড়ার মেয়র তোজাম্মেল হক টুটুল প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে, বিদেশী ডিপ্লোম্যাটিক কোরের সদস্যরা টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধে এসে পৌঁছালে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম তাদের অভ্যর্থনা জানান। পরে ডিপ্লোম্যাটিক কোরের সদস্যরা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে টুঙ্গিপাড়া সরকারি শেখ মুজিবুর রহমান কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত লোকজ মেলা পরিদর্শন করেন। জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি এ মেলার আয়োজন করে। লোকজন মেলা পরিদর্শনের পর ডিপ্লোম্যাটরা ঢাকার উদ্দেশে টুঙ্গিপাড়া ত্যাগ করেন। এর আগে গোপালগঞ্জ আসার পথে পদ্মা সেতু পরিদর্শন করেন ডিপ্লোম্যাটিক কোরের সদস্যবৃন্দ ।

ব্যাংকিং খাত ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি
একক সুদহার নির্ধারণে
সোনালী ব্যাংকের ৫০ বছরপূর্তিতে অর্থমন্ত্রী
অর্থনৈতিক রিপোর্টার
আমানত-ঋণে সুদ হার নির্ধারণ করে দেয়ায় কোনো ব্যাংক ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, ২০২১ সাল শেষে সব ব্যাংকই মুনাফা করেছে। সুদের হার নির্ধারণ করে দেয়া না হলে করোনার দুই বছর পর কোনো উদ্যোক্তা খুঁজে পাওয়া যেত না। অর্থমন্ত্রী বলেন, তফসিলি ব্যাংকগুলোর ঋণের সুদহার নির্দিষ্ট করে দেয়ার ফলে কেউ ইচ্ছেমতো সুদ নিতে পারে না। ফলে কোনো ব্যাংক ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। আগে ১৮/২০ শতাংশ সুদ নেয়া হতো। ফলে খেলাপি ঋণ বেড়ে যায়। সুদহার নির্ধারণ করে দেয়ায় ব্যাংকগুলো ভালো আছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের ৫০ বছরপূর্তি ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে এসব কথা বলেন অর্থমন্ত্রী। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান জিয়াউল হাসান সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের প্রথম অর্থ সচিব এম মতিউল ইসলাম, অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির, সাবেক গভর্নর ড. ফরাসউদ্দিন ও ড. আতিউর রহমান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্যাংকের সিইও ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. আতাউর রহমান প্রধান। অনুষ্ঠানে সোনালি ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং-এর উদ্বোধন করা হয়।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং অগ্রগতিতে অবদান রয়েছে সোনালী ব্যাংকের। সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন এবং সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে ব্যাংকটি। তবে সামনের দিনে টিকে থাক তাই কিছু চ্যালেঞ্জ আছে বলে মনে করেন বক্তারা। সেবার মান বাড়ানোসহ খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনতে হবে। এবং ব্যবসা স¤প্রসারণে নতুন নতুন ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস নিয়ে আসার পরামর্শ দেন তারা।

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো গ্রাহকবান্ধব সেবায় এখনো পিছিয়ে রয়েছে মন্তব্য করে গভর্নর ফজলে কবির বলেন, গ্রাহকদের সেবা দিতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে আরো কাজ করতে হবে। গ্রাহকের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করতে হবে। ব্যাংকগুলো ঋণ প্রক্রিয়া সময় লাগে বেশি। হলমার্কের পর সোনালী ব্যাংকের ঋণভীতি আছে। এটা অবশ্যই কাটাতে হবে। শুধু বড় বড় প্রকল্পে ঋণ দিলে হবে না। ক্ষুদ্র ঋণ আরো বাড়াতে হবে। সঠিকভাবে ঋণ দিলে কোনো ভীতি নেই বলে জানান তিনি। সোনালী ব্যাংক নিয়ে গভর্নর বলেন, গ্রাহক আকৃষ্ট করার জন্য সোনালী ব্যাংকের প্রচারের দরকার হয় না। করোনাকালেও এই ব্যাংক প্রত্যন্ত অঞ্চলের সব শাখা খোলা রেখে সেবা দিয়েছে। কোভিডে ১২৮ ব্যাংকার মারা গেছেন। এর মধ্যে সোনালী ব্যাংকের ৩৩ জন। ব্যাংকটির লোকসানি শাখা কমে এখন ১৬টিতে দাঁড়িয়েছে। এটা দ্রæত শূন্যের কোটায় নেমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। এসময় সোনালীসহ সরকারি ব্যাংকগৃলোর কিছু পরামর্শ দেন তিনি। বলেন, প্রতিযোগিতায় তাল মিলিয়ে চলার জন্য নিজেদের তৈরি করতে হবে।

অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতিদিনই কোনো না কোনো ব্যাংক ফেল (দেউলিয়া) করছে। গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের ইতিহাসে কোনো ব্যাংক এখনো ফেল করেনি। কারণ, যখনই কোনো ব্যাংকে সমস্যা দেখা দিয়েছে, সঙ্গে সঙ্গে সরকার সেই ব্যাংকের পাশে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, সোনালী ব্যাংক রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে বিনা কমিশনে প্রায় এক লাখ কোটি টাকায় এলসি খোলার সুযোগ দিযেছে। ফলে সরকারের প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হয়। এভাবে সোনালী ব্যাংক রাষ্ট্রের গুরুত্ববহ সহযোগী হিসেবে কাজ করছে। সোনালী ব্যাংকের শীর্ষ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে অর্থসচিব বলেন, নন-পারফরমিং লোন আরো কমাতে হবে। সামনের দিনগুলোতে ভালো অবস্থান ধরে রাখতে হলে অটোমেশনে যেতে হবে। অনলাইন ব্যাংকিং হলেও অটোমেশনে তেমনটা নেই, এটা করতে হবে। এটা না করলে প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়বে ব্যাংক। নতুন নতুন সার্ভিস ইনোভেশনের জন্য গবেষণা বিভাগ করতে হবে। তিনি বলেন, ব্যাংকিং প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে। প্রতিযোগিতায় টিকতে হলে সব কর্মচারী-কর্মকর্তাদের আরো প্রশিক্ষিত করতে হবে, তাদের দক্ষতা বাড়াতে হবে।

সরকারি ব্যাংকগুলোর প্রচারণা কম বলে মন্তব্য করেন সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান। বলেন, মানুষের ব্যাংক ভীত দূর করে তাদেরকে ব্যাংকমুখী করেছে রাষ্ট্রীয় ব্যাংক। স্বাধীনতার অনেক পর ১৯৮২ সালে বেসরকারি ব্যাংক কাজ শুরু করে। এর আগে সরকারি ব্যাংক নিরলসভাবে সেবা দিয়ে গেছে। মানসম্মত ও ভালো মানের সেবা দিচ্ছে বলে ব্যাংকগুলোর দৃঢ় অবস্থান তৈরি হয়েছে।

সোনালী ব্যাংকের সিইও ব্যাবস্থাপনা পরিচালক মো. আতাউর রহমান প্রধান বলেন, বঙ্গবন্ধুর নিজ হাতে গড়া সোনালী ব্যাংক স্বাধীনতার অব্যবহিত পরে যেভাবে দেশের ভঙ্গুর অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে অবদান রেখেছে, সা¤প্রতিক সময়েও ভার্চুয়াল ও স্মার্ট ব্যাংকিং এর সঙ্গে তাল মিশিয়ে ডিজিটাল ব্যাংক হিসেবে অগ্রযাত্রার লক্ষ্যে ব্যাংকিং সেবা কার্যক্রমে তথ্যপ্রযুক্তির বিপ্লব ঘটানোর মাধ্যমে করোনার মধ্যেও দেশের অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার করেছে। এ সময়ে ব্যাংকটির শুধুমাত্র মুনাফা, আমানত এবং ঋণ ও অগ্রিমেরই প্রবৃদ্ধি হয়নি, পাশাপাশি ব্যাংকটির দীর্ঘদিনের খেলাপী ঋণের হার হ্রাস, খেলাপী ও অবলোপন ঋণ আদায়, লোকসানী শাখা কমিয়ে আনাসহ প্রায় সব সূচকেই ব্যাপক অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। তিনি বলে, সাধারণ ব্যাংকিং সেবার পাশাপাশি সোনালী ব্যাংক সরকারের ৫১টি সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচি বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। এর মধ্যে সরকারের অভিপ্রায় অনুযায়ী এ ব্যাংক ৩৭টি সার্ভিস বিনামূল্যে এবং ১৪টি সার্ভিস নামমাত্র মূল্যে দিয়ে থাকে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন