বিশেষ সংবাদদাতা : পটুয়াখালীতে কোনো ধানি জমিতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনা না করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে এ নির্দেশনা দেন তিনি। গতকাল বৃহস্পতিবার শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একনেক বৈঠকে নতুন ১২টি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। একনেক চেয়ারপার্সন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠকে ‘পটুয়াখালী ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ, ভূমি উন্নয়ন এবং পুনর্বাসন’ প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। এ প্রকল্পের মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৬৯ কোটি ৭১ লাখ টাকা। প্রকল্পের আওতায় ৯১৫ দশমিক ৭৪ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হবে। অধিগ্রহণকৃত ভূমির উন্নয়নও করা হবে। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে ধানি জমি যেন অধিগ্রহণ না করা হয়, সে নির্দেশনা আসে।
একনেক বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, পটুয়ালীতে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করতে ধানি জমি ব্যবহার করা হবে না। প্রধানমন্ত্রী আমাদের সে নির্দেশনা দিয়েছেন। এছাড়া বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নদী এলাকায় কয়েকটি টার্মিনালের উন্নয়নও করতে বলেছেন প্রধানমন্ত্রী।
একনেক বৈঠকে অনুমোদিত ১২টি প্রকল্পের মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৯ হাজার ৬৬৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে বৈদেশিক ঋণ নেয়া হবে ৪ হাজার ৮৭৬ কোটি টাকা। বাকি অর্থ সরকারের তহবিল (জিওবি) থেকে দেয়া হবে। ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘বাংলাদেশ আঞ্চলিক অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন প্রকল্প-১ (চট্টগ্রাম-ঢাকা-আশুগঞ্জ) সংযুক্ত নৌ-পথ খনন এবং টার্মিনালসহ আনুষঙ্গিক স্থাপনাদি নির্মাণ’ প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে নৌ-পরিবহন রুট সহজ ও পরিবেশবান্ধব করতেই এ উদ্যোগ। প্রকল্পের আওতায় ছয়টি স্থানে জাহাজের জন্য বড় আশ্রয়কেন্দ্র, একটি প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল ও একটি কার্গো টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। ১৪টি ল্যান্ডিং স্টেশনও নির্মাণ করা হবে।
২৮৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর-মুজিবনগর সড়ক উন্নীতকরণ’ প্রকল্প এবং ৯৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘১৯টি নৌ-পুলিশ ফাঁড়ি ও ব্যারাক নির্মাণ’ প্রকল্পেরও অনুমোদন দেয়া হয়। ‘জামালপুর-মাদারগঞ্জ-মহাসড়কে তিনটি পিসি গার্ডার সেতু’ নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় ৭০ কোটি টাকা এবং ‘গ্রিডভিত্তিক বিদ্যুৎ সরবরাহে দক্ষতা উন্নয়ন’ প্রকল্পের ব্যয় ২ হাজার ৯৮২ কোটি টাকা।
‘তিতাস গ্যাস ফিল্ডের লোকেশন-এ ওয়েলহেড কম্প্রেশার স্থাপন’ প্রকল্পের ব্যয় ৯১০ কোটি টাকা এবং ‘নোয়াখালী এলাকার জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও নিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়ন’ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৩২৪ কোটি ৯৯ লাখ টাকা।
অন্যদিকে ২৩৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘কুমার নদ পুনর্খনন’ প্রকল্প ২৯২ কোটি টাকা ব্যয়ে, ‘বিদ্যমান পুলিশ হাসপাতালগুলোর আধুনিকীকরণ এবং বিএনএ বঙ্গবন্ধু কমপ্লেক্স নির্মাণ, পতেঙ্গা, চট্টগ্রাম (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্পের মোট ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ২৭৮ কোটি ১২ লাখ টাকা। ১১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘সিএমএইচ ঢাকা সম্প্রসারণ ও আধুনিকায়ন’ প্রকল্পেরও অনুমোদন দিয়েছে একনেক।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন