রাজধানীর ফুলবাড়িয়া এলাকার নগর প্লাজা, সিটি প্লাজা ও জাকের সুপার মার্কেটে দীর্ঘদিন ধরে চলছে ব্যবসায়ী নেতাদের দ্বন্দ্ব। ব্যবসায়ী নেতাদের দ্বন্দ্বের কারণে সাধারণ দোকানদাররা ব্যবসা করতে পড়েছেন নানা সমস্যায়। এই মার্কেটে পাইকারি ক্রেতারা দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এসে মালামাল ক্রয় করেন। কিন্তু দ্বন্দ্বের কারণে দিনে দিনে পাইকারি ক্রেতার সংখ্যা কমেছে বলে জানিয়েছেন এই তিন মার্কেটের ব্যবসায়ীরা। জানা যায়, ফুলবাড়িয়া এলাকার নগর প্লাজা, সিটি প্লাজা ও জাকের সুপার মার্কেটের প্রতিবর্গফুট ২০ টাকা দামে ১ লাখ ৩৬ হাজার বর্গফুট জায়গা বরাদ্দ দেয় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। এই তিনটি মার্কেটে আলাদা সাধারণ সম্পাদক থাকলেও সভাপতি একজনই। সাবেক সভাপতি দেলোয়ার হোসেন দেলু মার্কেটের কর্তৃত্ব পেতে মার্কেটের ব্যবসায়ীদের বর্তমান নেতৃত্বকে নানাভাবে হয়রানি করছেন বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের।
এদিকে এই মার্কেটের ব্যবসায়ী নেতাদের বিরোধের কারণে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মার্কেট ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ আহমেদসহ কয়েকজনকে ইতোমধ্যে জেলও খাটতে হয়েছে। সাবেক সভাপতি দেলোয়ার হোসেন দিলুর বিরুদ্ধে দোকান থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ এনে মার্কেট সমিতির নেতারা ইতোমধ্যে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ীরা এসব সমস্যার অবসান চান।
ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন, জুতা ও কাপড় বিক্রয়ের পাইকারি অন্যতম এই মার্কেটের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে সদ্যবিলুপ্ত ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি দেলোয়ার হোসেন দেলু। তার বহুমুখী অত্যাচার ও নির্যাতনে ব্যবসায়ীরা অতিষ্ঠ হয়ে বছরখানেক পূর্বে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন শুরু করেন। জাকের সুপার মার্কেটে গত ২ ফেব্রুয়ারি রাকিব হোসেন নামের এক ব্যবসায়ীর দ্বিতীয় তলা থেকে নিচে পড়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে আবারো মার্কেটে উত্তেজনা ও আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। দেলুর লোকজন দাবি করছে, চাঁদা না পেয়ে রাকিবকে দ্বিতীয় তলা থেকে ফেলে দেয়া হয়েছে। আবার কেউ কেউ বলছেন, মার্কেট থেকে দ্রুত নামতে গিয়ে লাফ দিয়েছে রাকিব। ব্যবসায়ীদের কয়েকজন বলেন, রাকিব আহত হওয়ার ঘটনা নিয়ে তারা চরম আতঙ্কের মধ্যে। আতঙ্কের কারণে বেশকয়েকদিন মার্কেটের সামনে পুলিশ পাহারা বসানো হয়েছে।
বাথরুম, বাথরুমের সামনের খোলা জায়গা, লিফটের জায়গা, ফ্লোর স্পেস, বারান্দা, বেজমেন্ট, ক্রেতাদের হাঁটাচলার জন্য রাখা খোলা জায়গা দখল করে এসব দোকান বানানো হয়। তিনটি মার্কেটে এসব দোকান তৈরি করে প্রতিটি দোকান থেকে ২০ থেকে ৩০ লাখ টাকা করে হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ করেছেন ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীরা আরো জানান, দোকান বৈধ করার আশ্বাস দিয়ে একসময় মার্কেটের সভাপতি দেলোয়ার হোসেন দেলু দোকানিদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছিল।
আবুল হোসেন নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, আমরা টাকা দিয়ে দোকান কিনে এখন পড়েছি বিপাকে। শুনেছি আমাদের দোকানের কাগজপত্র জমা দেয়া হয়েছে। আমরা চাই কোন দ্বন্দ্ব না রেখে এই মার্কেটে সাধারণ ব্যবসায়ীরা যাতে ব্যবসা করতে পারে।
মার্কেটের সাবেক সভাপতি দেলোয়ার হোসেন দেলু সাংবাদিকদের বলেন, মার্কেটের নেতৃত্ব প্রকৃত ব্যবসায়ীদের হাতে দেয়া হোক। আমি মার্কেটের সভাপতি থাকাকালীন কোনো অনৈতিক কিছু করি নাই। আমার নামে একটি গ্রুপ অপপ্রচার করছে। মার্কেটের কমিটিতে যে বা যারাই আসুক ব্যবসায়ীরা যাতে সুষ্ঠুভাবে ব্যবসা করতে পারে সংশ্লিষ্টদের প্রতি সেই ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানাচ্ছি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন